নিরুফা খাতুন: ভয়াবহ ঘটনা ঘটে গিয়েছে কসবার হালতুতে। দিনেদুপুরে ছোট্ট ছেলেকে খুনের পর স্বামী-স্ত্রী আত্মঘাতী হয়েছেন, এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকায় তীব্র শোরগোল পড়ে গিয়েছে। কসবা থানার পুলিশ তদন্তে নেমে বিভিন্ন সূত্রে যা জানতে পেরেছে, তা যথেষ্ট চাঞ্চল্যকর। সবচেয়ে বিস্ময়ের, আত্মহত্যার নেপথ্যের কারণ ঘরের দেওয়ালেই কার্যত লিখে রেখে গিয়েছেন আত্মঘাতী সোমনাথ রায়, সুমিত্রা রায়। তাতে মামা-মামির নাম লেখা। সম্পত্তি সংক্রান্ত বিবাদে আত্মহত্যার অন্যতম কারণ বলে প্রায় স্পষ্ট। এছাড়া প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলেও তদন্তকারীরা বেশ কিছু তথ্য পেয়েছেন, সেসবও কম বিস্ফোরক নয়। গৃহকর্তা শেষ মুহূর্তে দেনা শোধ করেছিলেন বলে শোনা যাচ্ছে। সবমিলিয়ে সপরিবারে এভাবে পৃথিবী ছেড়ে চলে যাওয়া নিয়ে রহস্য আরও ঘনীভূত হচ্ছে। আটক করা হয়েছে মৃতের মামা-মামিকে।
মঙ্গলবার দুপুরে হালতুর পূর্বপল্লিতে স্বামী-স্ত্রী, সন্তানের মৃতদেহ উদ্ধারের খবর পেয়ে কসবা থানার পুলিশ সেখানে পৌঁছে যে দৃশ্য দেখল তা শিউরে ওঠার মতোই। দেখা যায়, ঝুলন্ত সোমনাথের বুকে বাঁধা ছোট্ট ছেলে রুদ্রনীল! আরেকদিকে স্ত্রী সুমিত্রার দেহ ঝুলছে। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, ছেলেকে আগে খুন করে তারপর নিজের শরীরের সঙ্গে বেঁধে তবেই গলায় ফাঁস দিয়েছেন সোমনাথ। ঘরের দেওয়ালে লেখা কিছু নাম, সম্পত্তি সংক্রান্ত কিছু তথ্য। দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানোর পাশাপাশি প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে আরও তথ্য হাতে পায় পুলিশ।
জানা গিয়েছে, দেনা ছিল অটোচালক সোমনাথের মাথার উপর। ছেলের চিকিৎসার জন্য অটো ইউনিয়নের থেকে নাকি ৮ হাজার টাকা ধার করেছিলেন। কিন্তু মৃত্যুর ঠিক আগে সোমবার জীবনের সেই ঋণ শোধ করে দেন। এছাড়া অন্যান্য জায়গাতেও ধার ছিল, সেসব মেটাতে একটি অটো বিক্রি করেছিলেন সোমনাথ। তারপরও অশান্তি মেটেনি। হালতুর যেখানে তাঁরা থাকতেন, সেটা সোমনাথের মামারবাড়ি। এই সম্পত্তি নিয়ে মামা-মামির সঙ্গে ঝামেলা চলছিল। আর সেই কারণেই সম্ভবত দেওয়ালে তাঁদের নাম লেখা। প্রতিবেশী, আত্মীয়দের সঙ্গে কথা বলে আরও ক্লু খুঁজছে পুলিশ। সেইসঙ্গে সুইসাইড নোট। সবদিক খতিয়ে দেখে পুলিশ এই জট খুলতে মরিয়া।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.