ফাইল ছবি
নব্যেন্দু হাজরা: নামে ই-রিকশা বা টোটো। কিন্তু তার না আছে রেজিস্ট্রেশন নম্বর, না আছে নম্বর প্লেট, না চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স। বে-আইনিভাবে বছরের পর বছর ধরে শহর থেকে জেলা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এই তিনচাকার যান। আর যেখানে সেখানে বেপরোয়াভাবে চলাচলের জন্য বাড়ছে দুর্ঘটনাও। বিগত কয়েক বছরে প্রশাসনের নজর এড়িয়ে রাজ্যজুড়ে কয়েক লক্ষ টোটো বিক্রি হয়েছে। যা নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে এখন রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে প্রশাসনকে। বে-আইনিভাবে টোটো এবং ই-রিকশা বিক্রি রুখতে এবার তার ডিলারদের তলব করতে চলেছে পরিবহণ দপ্তর।
চলতি সপ্তাহেই রাজ্যের প্রায় শ’দেড়েক ডিলারকে ডেকে পাঠানো হবে। ভবিষ্যতে রেজিস্ট্রেশন নম্বর ছাড়া টোটো-বা ই-রিকশা বিক্রি করলে সেই ডিলারকে কালো তালিকাভুক্ত করা হবে বলে জানানো হয়েছে। পরিবহণ দপ্তর সূত্রে খবর, রাজ্যে চলা কয়েক লক্ষ টোটো বা ই-রিকশার ৯০ শতাংশেরই কোনও রেজিস্ট্রেশন নেই। জানানো হয়নি আরটিও অফিসে। এবার এই ডিলারদের বিষয়েই কড়া মনোভাব নিচ্ছে সরকার। রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী জানিয়েছেন, ‘‘গত কয়েকবছর ধরে রেজিস্ট্রেশন নম্বর ছাড়াই লাখ লাখ টোটো, ই-রিকশা ডিলাররা বিক্রি করেছেন। এটা বে-আইনি। ভবিষ্যতে রেজিস্ট্রেশন নম্বর ছাড়া গাড়ি বিক্রি আটকাতেই ডিলারদের ডেকে পাঠানো হচ্ছে।’’
দপ্তর সূত্রে খবর, প্রত্যেক পুরসভা এলাকায় কত টোটো চলে, তার তালিকা তৈরি করে জমা দিতে বলা হয়েছে। তা পাওয়ার পরই টোটো চলাচলের ক্ষেত্রে একটা গাইডলাইন প্রকাশ করা হবে। জাতীয়, রাজ্য সড়ক-সহ গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় টোটো চলাচল বন্ধ করতে উদ্যোগী হয়েছে পরিবহণ দপ্তর। তবে কোনওভাবেই কোনও চালকের টোটো চালানো বন্ধ করে নয়। স্থানীয় পুরসভা, পঞ্চায়েতগুলিকে বৈঠক করে টোটো-অটোর রুট ঠিক করতে বলা হয়েছে। পুলিশকেও নজর রাখতে বলা হয়েছে, নির্দিষ্ট রুটের বাইরে যাতে অটো-টোটো চলাচল না করে। তবে কোন রুটে অটো-টোটো চলবে তা বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করেই ঠিক করতে হবে বলে জানিয়েছে পরিবহণ দপ্তর।
দপ্তরের এক কর্তার কথায়, যে কোনও গাড়ি, বাইক বিক্রির সময়ই তার রেজিস্ট্রেশন নম্বর দেওয়ার কথা। ডিলার স্থানীয় আরটিওকে জানালে সেখানে সেই গা়ড়ি নথিভুক্ত হয়। গাড়িরও রেজিস্ট্রেশন নম্বর হয়। কিন্তু ৯০ শতাংশ ডিলারই রেজিস্ট্রেশন ছাড়াই টোটো বিক্রি করেছেন। ফলে সরকারের কাছে জমা হয়নি গাড়ি সংক্রান্ত কোনও তথ্য। টোটো বা ই-রিকশাতেও লাগেনি নম্বর প্লেট। দিন দিন এটা চলতে থাকলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, বছর কয়েকের মধ্যে টোটো বা ই-রিকশার সংখ্যা এমন জায়গায় পৌঁছবে যে সাধারণ মানুষ হাঁটার রাস্তা পাবেন না। যদি স্থানীয় পুরসভা বা সরকারের কাছে কোনও তথ্য থাকত তাহলে টোটো চলার রুট বেঁধে দিতে পারতো। যদিও কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রকের নিয়ম অনুযায়ী, ই-রিকশার নির্দিষ্ট কোনও রুট নেই। যেখানে খুশি চলতে পারে। তবে বাস এবং অটো রুট বাদ দিয়ে অন্যত্র। এছাড়াও জানানো হয়েছে, টোটো সংক্রান্ত একাধিক নিয়মকানুন শীঘ্রই চালু করবে পরিবহণ দপ্তর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.