দীপঙ্কর মণ্ডল: একদিকে কলকাতা পুরসভার উপনির্বাচন। অন্যদিকে সর্বভারতীয় পরীক্ষা। দু’টি ইভেন্টেই ১৪৪ ধারা জারি। ভোট এবং পরীক্ষা হবে এক জায়গায়। কাল বেনজির এই কাণ্ড হতে চলেছে দক্ষিণ কলকাতার চেতলা গার্লস স্কুলে।
রবিবার কলকাতা পুরসভার ৮২ নম্বর ওয়ার্ডে উপনির্বাচন। চেতলা গার্লস স্কুলে ১২টি বুথের ভোট গ্রহণ হবে। নির্বাচনের দিনেই এই স্কুলে ইন্ডিয়ান ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিস (আইইএস)-এর পরীক্ষার আসন পড়েছে। পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৯৬০। পরীক্ষক ও কর্মী মিলিয়ে আরও অন্তত ৪০ জন থাকবেন। অর্থাৎ নির্বাচন চলাকালীন ওই কেন্দ্রের মধ্যে থাকবেন অন্তত এক হাজার বহিরাগত। কোথায় ভোট গ্রহণ করা হবে তা ঠিক করার দায়িত্ব রাজ্য নির্বাচন কমিশনের। সর্বভারতীয় পরীক্ষার ভেনুতেই কী করে ভোটকেন্দ্র করা হল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পরীক্ষার্থীরা। কমিশনের দাবি, পরীক্ষার্থীদের কোনও অসুবিধা হবে না। উপনির্বাচনের রিটানিং অফিসার শামিউল আলম জানিয়েছেন, “ভোটগ্রহণ কেন্দ্র পরিবর্তন করা যায় না। তাই চেতলা গার্লস কেন্দ্রটি বাতিল করা সম্ভব হয়নি। ওই ভোটকেন্দ্রের দিকে আমাদের বিশেষ নজর থাকবে। পরীক্ষার্থীদের প্রবেশ ও প্রস্থানের জন্য আলাদা ব্যবস্থা করা হয়েছে। কারও অসুবিধা হবে না।”
ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ন্যূনতম স্নাতক ডিগ্রি থাকলে আইইএস পরীক্ষায় বসা যায়। বছরে একবার এই পরীক্ষার মাধ্যমে সর্বভারতীয় স্তরে অফিসার নিয়োগ হয়। মোট তিনটি ধাপে পরীক্ষা। প্রথমে ‘প্রিলিমস’, পরে ‘মেন’ এবং শেষে ‘পারসোনাল ইন্টারভিউ’, শেষে নিয়োগ। রেল, সেনা, নেভি-সহ গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকে অফিসার নিয়োগ হয় আইইএস-এর মাধ্যমে। ৬ জানুয়ারি ‘প্রিলিমস’। কলকাতা-সহ গোটা দেশে কয়েক লক্ষ ছাত্রছাত্রী পরীক্ষা দেবেন। পরীক্ষার দায়িত্বে ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশন (ইউপিএসসি)। ইউপিএসসি-র বক্তব্য, পরীক্ষার সূচি অনেক আগে থেকে ঘোষণা করা হয়েছে। পরীক্ষার্থীদের কাছে অ্যাডমিট কার্ড পৌঁছে যাওয়ার পর উপনির্বাচনের দিন ঘোষণা হয়েছে। তাই পরীক্ষাকেন্দ্র বদলানো সম্ভব হয়নি। সমস্যা হতে পারে ভেবে চেতলা গার্লস স্কুল কর্তৃপক্ষ দু’পক্ষের সঙ্গেই যোগাযোগ করে। দু’তরফেই অনড় মনোভাব দেখানো হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
পুরসভার উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মোট পাঁচজন। কংগ্রেস, বিজেপি, তৃণমূল, সিপিআই এবং নির্দল। কবে কোথায় ভোট হবে তা প্রার্থীরা ঠিক করেন না। প্রার্থীদের একটি অংশ মনে করছে পরীক্ষা এবং নির্বাচন একসঙ্গে হলে সমস্যা হবে। পরীক্ষার্থীরা হতাশ। তাঁদের বক্তব্য, বছরভর প্রস্তুতি নিয়ে পরীক্ষায় বসতে হয়। একবার আইইএস পরীক্ষায় বসে পাস করেছেন এমন পরীক্ষার্থী খুব কম। নির্দিষ্ট বয়সসীমার মধ্যে আবেদন করা যায়। সব মিলিয়ে কঠিন অধ্যবসায় ও প্রস্তুতির পর অফিসার হতে পারেন পরীক্ষার্থীরা। রাজ্য নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, সকাল সাতটা থেকে বিকেল তিনটে পর্যন্ত ইভিএমে ভোট হবে। অন্যদিকে সকাল দশটা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত চলবে পরীক্ষা। এই ওয়ার্ডে মোট ভোটার ৩৩ হাজার ৫৬৭। বুথের সংখ্যা ৪২। ভোট গণনা হবে ৯ জানুয়ারি। প্রয়োজনে পুনর্নিবাচন হবে ৮ জানুয়ারি। পরীক্ষার্থীদের একটি অংশের দাবি, শুধুমাত্র চেতলা গার্লস ভোট কেন্দ্রের নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া হোক।
[‘হিন্দুদের নিশানা করা হচ্ছে’, সবরীমালা ইস্যুতে বিস্ফোরক প্রাক্তন ইসরো প্রধান]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.