ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: রাজ্যের বিরুদ্ধে ফের অসহযোগিতার অভিযোগ আনল কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। শনিবারও রাজ্যের মুখ্যসচিবকে জোড়া চিঠি দিয়েছে ওই কেন্দ্রীয় দল। যেখানে তারা রাজ্যের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অসহযোগিতার অভিযোগ এনেছে। তাঁদের কথায়, “কেন্দ্রীয় নির্দেশের অবমাননা করেছে রাজ্য।” এমনকী, কেন্দ্রীয় দলের নিরাপত্তার দায়িত্বও রাজ্য নেয়নি বলে সরব হয়েছে তারা। এদিকে, কেন্দ্রীয় দলের উদ্দেশ্য নিয়ে পালটা প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক’ও ব্রায়েন। তাঁর অভিযোগ, “রাজনৈতিক ভাইরাস ছড়াতে এসেছিল ওই প্রতিনিধি দল”।
করোনা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে রাজ্যে এসেছে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল (ICMT)। বিভিন্ন এলাকায় পরিদর্শন করে গোটা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছেন তাঁরা। কিন্তু প্রথমদিন থেকে কেন্দ্রীয় দলের সঙ্গে রাজ্যের টানাপোড়েন তুঙ্গে উঠেছে। চলছে পত্রাঘাত। প্রতিটি চিঠিতেই রাজ্যের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ এনেছে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। এমনকী, রাজ্যে সেই চিঠির জবাব দিচ্ছে না বলেও সরব হয়েছেন তাঁরা।
শনিবার রাজ্যের মুখ্য সচিবের উদ্দেশে লেখা চিঠিতে কলকাতায় আসা কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের প্রধান অপূর্ব চন্দ্রের অভিযোগ, “রাজ্যকে একের পর এক চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তার উত্তর মেলেনি। মুখ্য সচিব সাংবাদিক বৈঠক করে বলছেন, কেন্দ্রীয় দল যেখানে ইচ্ছে ঘুরে বেড়াতে পারে। কিন্তু রাজ্য সরকারি কোনও আধিকারিক তাঁদের সঙ্গে থেকে সময় নষ্ট করতে পারবে না। এটা কি কেন্দ্রের নির্দেশ অমান্য করা নয়?”
অপূর্ব চন্দ্রের দাবি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নির্দেশে বলা হয়েছিল কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদলকে তথ্য, নিরাপত্তা, পরিবহণ, থাকার ব্যবস্থা, পিপিই ও পরিসংখ্যান দিয়ে প্রয়োজনীয় সাহায্য করবে রাজ্য সরকার। কিন্তু বাস্তবে তা করা হয়নি বলেও অভিযোগ। কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদলকে রাজ্য পুলিশের তরফে কোনও নিরাপত্তা দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি। এমনকী, PPE’ ব্যবস্থা করা হয়নি বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি। এ প্রসঙ্গে অপূর্ব চন্দ্রের প্রশ্ন, “পরিদর্শনে গিয়ে প্রতিনিধিদল নিরাপত্তাজনিত সমস্যায় পড়লে, তার দায় কে নিত?” চিঠির একটি পয়েন্টে অপূর্ববাবু লিখেছেন, “শুনেছি, রাজ্যের নির্দেশ ছাড়া কেন্দ্রীয় দলের বিএসএফ আবাসনের বাইরে যাওয়া নিষিদ্ধ। বাইরে বের হলেই নাকি সোজা বিমানবন্দরে পাঠিযে দেওয়া হবে। এটা কি ঠিক?” একইসঙ্গে, দিল্লির নিজামুদ্দিন ফেরত তবলিঘি জামাত সদস্যদের জন্য কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তাও জানতে চেয়েছে কেন্দ্রীয় দল।
এদিকে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের ভূমিকার তুমুল সমালোচনা করেন তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েন। তাঁর কথায়, “কেন্দ্রীয় দলের বাংলায় আসার কোনও উদ্দশ্য নেই। এমন জেলায় তাঁরা ঘুরলেন, যেখানে কোনও হটস্পট নেই। এমন কমিটির বিষয় জানতে চাইলেন, যা রাজ্য আগেই তৈরি করেছেন।” তিনি আরও বলেন, “আসলে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে তাঁরা এসেছিলেন।” একইসঙ্গে তৃণমূল সাংসদের কটাক্ষ, “IMCT’র অর্থ ইন্ডিয়া’স মোস্ট ক্যালাস টিম। অথবা আই মাস্ট কজ ট্রাবল।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.