ছবি: প্রতীকী
স্টাফ রিপোর্টার: করোনা সামান্য থিতু হতেই বেরিয়ে পড়েছে মানুষ। দেশে-বিদেশে। ফিরতি পথে তারা নিয়ে আসছে না তো মাঙ্কিপক্স (Monkeypox Virus)? এমনই আতঙ্কে থরহরি কম্প তিলোত্তমা। সতর্ক ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চও। ইতিমধ্যেই লন্ডন, ফ্রান্স, কানাডা, পর্তুগাল, অস্ট্রেলিয়ায় শনাক্ত হয়েছে মাঙ্কিপক্সের রোগী। এই সব জায়গাগুলো থেকেই কর্মসূত্রে, কিংবা সফর শেষ করে কলকাতায় ঢুকছেন অনেকেই। ভাইরাস নিয়ে আসছেন না তো?
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল অ্যান্ড রিসার্চের ডিরেক্টর জেনারেল ডা. সমীরণ পাণ্ডা জানিয়েছেন, এই রোগের প্রাথমিক উপসর্গের মধ্যে রয়েছে জ্বর, মাথার যন্ত্রণা, পিঠ ও গায়ে ব্যথার মতো লক্ষণ। এই মুহূর্তে দেশে কারও শরীরে মাঙ্কিপক্সের ভাইরাসের প্রমাণ না মিললেও সতর্কতা রাখা হয়েছে। ভিনরাজ্য অথবা বিদেশ থেকে আগত কারও শরীরের জ্বর ও মাথার যন্ত্রণার মতো উপসর্গ দেখা গেলেই তাঁকে নিভৃতাবাসে বা আইসোলেশনে রাখা হবে।
করোনার মতো ছোঁয়াচে নয় মাঙ্কিপক্স। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. নিশান্তদেব ঘটক জানিয়েছেন, এটি বিশেষ ধরনের বসন্ত। জলবসন্ত বা গুটিবসন্তের মতোই। চরিত্রগতভাবে সামান্য আলাদা। মাঙ্কিপক্সে শরীরের লিম্ফ নোড বা লসিকা গ্রন্থি ফুলে যায়। বগলের নিচে, ঘাড়ের পাশে, কুঁচকিতে, গলায় অগুনতি লিম্ফনোড ছড়িয়ে আছে। লসিকা গ্রন্থিতে শ্বেতরক্তকণিকা, অ্যান্টিবডি থাকে। যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা মজবুত করতে সাহায্য করে। ডা. ঘটকের কথায়, শরীরে মাঙ্কিপক্সের ভাইরাস প্রবেশ করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আর জীবাণুর মধ্যে যুদ্ধের ফলে এই লসিকা গ্রন্থি বা লিম্ফনোডগুলি ফুলে যায়। যেহেতু সাধারণ হাম, বসন্তের সঙ্গে মাঙ্কিপক্সের উপসর্গগুলির কিছুটা মিল রয়েছে, তাই অনেকেই এই রোগের প্রাথমিক উপসর্গগুলি চিনতে ভুল করেন।
ভাইরোলজিস্ট সিদ্ধার্থ জোয়ারদার জানিয়েছেন, কাঠবেড়ালি এই ভাইরাসের স্বাভাবিক বাহক। বিশেষজ্ঞের পর্যবেক্ষণ, ভৌগোলিক ক্ষেত্র বিশেষে এই ভাইরাসের চরিত্র বদলাচ্ছে। কঙ্গো এলাকায় এই ভাইরাসের যে নমুনা পাওয়া গিয়েছে তা যতটা মারণ, নাইজেরিয়ার ভাইরাসের চরিত্র ততটা মারাত্মক নয়। ডা. সিদ্ধার্থ জোয়ারদারের মতে, ভারতকে তৈরি থাকতে হবে। তবে করোনার মতো এতটা ছোঁয়াচে নয় মাঙ্কিপক্স। এতদিন চিকিৎসকদের ধারণা ছিল, দূর থেকেও ‘ড্রপলেট’-এর মাধ্যমে ছড়ায় এই রোগ। কিন্তু নতুন আক্রান্তদের পরীক্ষা করে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আক্রান্ত ব্যক্তির মুখের দু-এক ইঞ্চির মধ্যে না এলে সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা কম। এই ভাইরাস নতুন নয়। ১৯৫৮ সালে প্রথম বাঁদরদের মধ্যেই এই পক্স দেখা যায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.