সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: দলীয় শৃঙ্খলা মেনে চলবেন। বিধায়ক হিসেবে তিনি শৃঙ্খলার ঊর্ধ্বে নন। মঙ্গলবার শৃঙ্খলারক্ষা কমিটিতে হাজিরা দিয়ে এভাবেই ‘বাধ্য’ কর্মীর মতো দলের কথা মেনে নিলেন ভরতপুরের বিতর্কিত তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর (Humayun Kabir)। এগিন বিধানসভায় শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির সামনে তাঁকে সশরীরে উপস্থিত হতে বলা হয়েছিল। সেখানে হাজির হয়ে হুমায়ুন জানিয়ে দিলেন, দলীয় শৃঙ্খলা মেনে চলবেন তিনি। এদিন শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির তরফ থেকে তাঁকে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়, সংবিধানের শপথ নিয়ে এমন কিছু বলা যায় না যাতে উত্তেজনা তৈরি হতে পারে। কাজেই তিনি যে ধরনের কথা বলছেন, তা সংবিধান সমর্থন করে না। সেই জায়গা থেকে তাঁকে এটা বুঝতে হবে কী করা যায়, কী করা যায় না। এদিন এই বৈঠকে নিজের ভুল স্বীকার করে নিয়েছেন হুমায়ুন।
তবে এই বৈঠক থেকে হুমায়ুনের মত বাকি বিধায়কদেরও সতর্ক করা হয়েছে। ইচ্ছেমতো যখন-তখন মুখ খুলে দলকে অস্বস্তিতে ফেললে তা সহ্য করা হবে না, বার্তা দেওয়া হয়েছে শৃঙ্খলারক্ষা কমিটিতে। এক্ষেত্রে সকলকেই নির্দিষ্ট নিয়ম নীতি মেনে চলতে হবে। রাজ্যের পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ”মঙ্গলবার হুমায়ুনকে বলা হয়েছে, বিধায়ক হিসেবে কিছু নিয়ম আছে, যেগুলো মেনে চলতেই হবে। তোমার মনে ক্ষোভ, দুঃখ থাকতেই পারে। কিন্তু এমন কিছু বলতে পারো না, যেটা সংবিধান সম্মত নয়। তোমার কিছু বক্তব্য থাকলে, তা বলার জায়গা অন্য। তবে জনসমক্ষে দাঁড়িয়ে তুমি যে ধরনের কথা বলছ, তা তুমি বলতে পারো না।” শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় জানান, এদিন মুখোমুখি সাক্ষাতে তাঁকে যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তিনি কথা দিয়েছেন আগামী দিনে দলীয় অনুশাসন মেনে চলবেন। তবে একতরফাভাবে অনুশাসন চাপিয়ে দেওয়ার পক্ষপাতী তিনি নন। একইসঙ্গে পরিষদ মন্ত্রী জানান, তাঁর কোনও ক্ষোভ-বিক্ষোভ থাকলে জানতে হবে।
প্রসঙ্গত, শুভেন্দু অধিকারীর ধর্ম নিয়ে মন্তব্যের পর একা হুমায়ুন কবীর (Humayun Kabir) নয়, আরও অনেকে মুখ খুলেছিলেন। তাঁদের সম্বন্ধে পরিষদীয় মন্ত্রী বলেন, ”যারা যারা মন্তব্য করেছিলেন সকলকেই দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সতর্ক করেছেন। আলাদা করে কিছু বলার নেই। তবে সকলকেই বলব, দলীয় অনুশাসন মেনে চলুন।”
এদিন পরিষদীয় দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর জানিয়েছেন, আলোচনা ভালোই হয়েছে। শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির সদস্যরা তাঁর কথা মন দিয়ে শুনেছে। এবং যা নির্দেশ দিয়েছেন, তাঁরা তাতে তিনি খুশি। একইসঙ্গে তিনি এটাও জানান, বিধায়ক হিসাবে তিনি দলীয় শৃঙ্খলার ঊর্ধে নন। তাই দলের নির্দেশ এবং শৃঙ্খলা তিনি মেনে চলবেন। নির্দেশ বা শৃঙ্খলা মেনে চলার কথা বললেও শেষ পর্যন্ত ভরতপুরের বিধায়ক কতদিন এই নির্দেশ মেনে চলেন সেটা দেখার। কারণ, এই নিয়ে দ্বিতীয়বার তাঁকে শোকজ করা হলো। এর আগেও শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে তাঁকে শোকজ করা হয়েছিল। দলীয় শৃঙ্খলা আরেকবার ভাঙলেই তাঁর ওপর সাসপেনশনের খাঁড়া নেমে আসতে পারে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.