সুব্রত বিশ্বাস: ট্রেনের অরক্ষিত মহিলা কামরা এবার কি অস্ত্র পাচারের করিডর হয়ে উঠল? শিয়ালদহ স্টেশনে নামখানা লোকালে প্রচুর রিভলবার উদ্ধারের ঘটনায় এই সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। ট্রেনটির মহিলা কামরা থেকে বাজেয়াপ্ত হয়েছে ২২টি রিভলবার। তবে অস্ত্রগুলিতে বেশ কিছু যন্ত্রাংশ ছিল না। তদন্তকারীদের অনুমান, আলাদা আলাদা জায়গা থেকে যন্ত্রাংশ এনে তা জোড়া হত। তবে এই ঘটনায় কেউ ধরা পড়েনি।
মঙ্গলবার রাত ৯.৩৫-এ নামখানা লোকাল শিয়ালদহ দক্ষিণ থেকে ছেড়ে যায়। তার আগে ট্রেনটিকে কারশেড থেকে ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে আনা হয়। নিয়মমাফিক নামখানা লোকালে তল্লাশিতে গিয়েছিলেন আরপিএফের এসআই মহম্মদ আলিম এবং এএসআই এ রসুল। ট্রেনটির মহিলা কামরার বাঙ্কে একটা ব্যাগ দেখে তাঁদের সন্দেহ হয়। সিন্থেটিক ব্যাগটি নামানোর পর চক্ষু চড়কগাছ অবস্থা হয় রেলের নিরাপত্তাকর্মীদের। দেখা যায় ব্যাগটিতে রয়েছে আধুনিক মানের ২২টি রিভলবার। তবে কোনও রিভলবারই সম্পূর্ণ অবস্থায় ছিল না। স্প্রিং এবং বেশ কিছু পার্টস রিভলবারগুলিতে দেখা যায়নি। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, বিভিন্ন জায়গা থেকে যন্ত্রাংশ এনে জুড়ে দেওয়াই কাজ ছিল। পুলিশ যাতে বুঝতে না পারে তার জন্য আলাদা আলাদা ভাবে যন্ত্রাংশ জোগাড় করা হয়। তদন্তকারীরা মনে করছেন যখন ট্রেনটি কারশেডে দাঁড়িয়েছিল, তখনই ব্যাগভর্তি অস্ত্র তুলে দেওয়া হয়। ট্রেনের মাধ্যমে ক্যানিং, উস্তি, নামখানায় অস্ত্র পাঠিয়ে দেওয়ার ছক ছিল। তবে কে বা কারা এর সঙ্গে যুক্ত তা জানা যায়নি। কেউ ধরাও পড়েনি। রিভলবারগুলিতে আটটি গুলি একসঙ্গে ভরা যায়। এক একটির আনুমানিক দাম ৩৫-৪০ হাজার টাকা।
সম্প্রতি বিহারে পুলিশি অভিযানের জেরে মুঙ্গেরের বেআইনি অস্ত্র কারবারিরা ছক বদলেছে। তারা এখন ঘাঁটি বানিয়েছে কলকাতায়। গত সপ্তাহে এন্টালি, তিলজলায় অভিযান চালিয়ে অস্ত্র কারখানার হদিশ পেয়েছিল পুলিশ। সেখানে করাতে কাটা রাইফেল এবং রিভলবার তৈরি করা হত। সাইকেল বানানোর ভান করে লেদ মেশিন দিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র তৈরি হত। এই ঘটনায় দুজন পুলিশের জালে ধরা পড়ে। এসব আগ্নেয়াস্ত্র উত্তরবঙ্গ হয়ে নেপাল, অসম ও উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিতে পৌঁছে যায়। অস্ত্র মাওবাদী এবং অন্যান্য বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলি এই রুটের মাধ্যমে অস্ত্র পেয়ে যেত বলে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন। নামখানা লোকালের ঘটনায় এর সঙ্গে কোনও যোগসূত্র রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.