Advertisement
Advertisement

Breaking News

‘গণচুম্বন’ কাণ্ডে পড়ুয়াদের বহিষ্কারে বিতর্ক, পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবেন শিক্ষামন্ত্রী

মানবাধিকার কমিশনের কাছে স্কুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করছেন অভিভাবকরা।

Howrah School face controversy
Published by: Bishakha Pal
  • Posted:January 23, 2019 8:54 am
  • Updated:January 23, 2019 8:54 am  

সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়: হাওড়ার শিবপুর বিই কলেজ মডেল স্কুলে ‘গণচুম্বন কাণ্ডের’ জেরে দশম শ্রেণির ছ’জন পড়ুয়াকে বহিষ্কার করার ঘটনাটি নিজে খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। মঙ্গলবার তিনি জানান, “বিষয়টি আমি খোঁজখবর নিয়ে দেখব। এরপর প্রয়োজনমতো আমি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গেও কথা বলে ঘটনাটি জানার চেষ্টা করব। সব দিক দেখার পর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।”

বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য তদন্তে নামবে রাজ্য মানবাধিকার কমিশনও। এদিন কমিশনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নাপরাজিত মুখোপাধ্যায় জানান, “ঘটনাটির সত্যতা আগে দেখা উচিত। দেখা উচিত স্কুলের ক্লাসরুমের সিসিটিভির ফুটেজও। দশম শ্রেণির কোনও ছাত্রছাত্রীকে কি এইভাবে হঠাৎ করে বলপূর্বক বহিষ্কার করা যায়? ঘটনা যদি সত্যিও হয়, তবে অভিযুক্ত ছাত্রছাত্রীদের ডেকে স্কুলে কাউন্সেলিং করানো আগে দরকার ছিল। অভিযোগ এলেই আমরা স্কুলের কাছ থেকে এবিষয়ে জানতে চেয়ে রিপোর্ট চেয়ে পাঠাব।” সেই রিপোর্ট আসার পর অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ কী নেওয়া উচিত তা জানিয়ে রাজ্য সরকার ও স্কুল শিক্ষা দপ্তরকে সুপারিশ করবে রাজ্য মানবাধিকার কমিশন। প্রয়োজন হলে অভিযুক্ত ছাত্রছাত্রীদের, স্কুলের প্রধানশিক্ষক এবং পরিচালন কমিটির সদস্যদের কমিশনে ডেকে শুনানির কাজ শুরু করা হবে। সেইমতো আজ, বুধবার রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের কাছে এবিষয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাবেন অভিযুক্ত ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবকরা।

Advertisement

পাশাপাশি স্কুল কর্তৃপক্ষের এই হঠকারী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ের পথে হাঁটতে চলেছেন অভিযুক্ত ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবকরা। তাঁরা জানিয়েছেন, “সিসিটিভির ফুটেজ আমরা দেখেছি। সেখানে কোথাও চুম্বনের দৃশ্য নেই। দশম শ্রেণির তিন জোড়া ছাত্রছাত্রী একে অন্যের গালে হামি খাচ্ছে, এই দৃশ্যই রয়েছে সিসিটিভি ফুটেজে। তাই যদি হয়, তবে বহিষ্কারের মতো চরম সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তাদের কাউন্সেলিং করানো হল না কেন? তার উপর ঘটনাটি ঘটেছে গত অক্টোবর মাসে নবম শ্রেণির ফাইনাল পরীক্ষার আগে। তাই যদি হয়, তাহলে অভিযুক্ত ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষায় বসতে দিয়ে পাস করানো হল কেন? আগে থেকেই বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিলে মানসিকভাবে আমরা প্রস্তুত হয়ে থাকতাম। এখন সামনেই মাধ্যমিক পরীক্ষা। এর মধ্যে স্কুল কর্তৃপক্ষের এই অমানবিক চরম সিদ্ধান্ত পড়ুয়াদের মনে কুপ্রভাব পড়তে পারে।” তাই ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা এবিষয়ে আইনজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করছেন।

নেতাজিকে জন্মদিনে শ্রদ্ধা, নতুন গান লক্ষ্মীরতনের ]

মনোরোগ বিশেষজ্ঞ গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় ও ইন্দ্রাণী সরকার জানান, “পড়ুয়ারা কখনওই দাগি আসামি নয়। তাই তাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়ার আগে আমাদের সকলকেই ভালভাবে চিন্তা করতে হবে। এইরকম চরম মনোভাব নিলে তাদের মনে নেমে আসবে অবসাদ। তার থেকে বড় ধরনের কোনও অঘটন ঘটিয়ে ফেলতে পারে তারা। তাছাড়া এই ধরনের ঘটনায় সবসময় আগে কাউন্সেলিং করা উচিত। এরপর শাসন করে পড়ুয়াদের নিয়ন্ত্রণ করতে হয়।”

শিবপুর বিই কলেজ মডেল স্কুল আইআইইএসটিরই ক্যাম্পাসের মধে্য অবস্থিত। আইআইইএসটির এক পদস্থ কর্তা জানিয়েছেন, “রাজ্য শিক্ষা দপ্তরের আওতাধীন স্কুলগুলিতে কাউন্সেলিং ব্যবস্থা নেই জানি। কিন্তু আমাদের শিবপুর মডেল স্কুল হাওড়া শহরের একটি নামী স্কুল বলেই পরিচিত। সেক্ষেত্রে স্কুল কর্তৃপক্ষ নিজেদের উদে্যাগে কাউন্সেলিং ব্যবস্থা চালু করেনি কেন? কেনই বা বহিষ্কারের মতো চরম সিদ্ধান্তে আসার আগে অভিযুক্ত পড়ুয়াদের আলাদাভাবে কাউন্সেলিং করানো হল না? কেন ভাবা হল না তাদের ভবিষ্যতের কথা?”

অভিভাকরা জানিয়েছেন, “এই ঘটনায় প্রধানশিক্ষক যখন অভিযুক্ত পড়ুয়াদের টিসি দেওয়া শুরু করেন তখন মন্দিরতলার এক পড়ুয়া আত্মহত্যার চেষ্টাও করে। বাকি অভিযুক্তরাও চরম অবসাদে ভুগছে। তারাও যদি কোনও অঘটন ঘটিয়ে ফেলে তবে দায়ী হবে স্কুল কর্তৃপক্ষ।” অভিযোগ, সোমবার এই ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর স্কুল কর্তৃপক্ষ অভিভাবকদের চাপ দিয়ে চারজন অভিযুক্ত পড়ুয়াকে টিসি দিয়ে দেয়। এই অভিযোগ অস্বীকার করে স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অভিযুক্ত পড়ুয়াদের চারজন অভিভাবক স্বেচ্ছায় এদিন টিসি নিয়ে চলে যান।

ক্লাসরুমে ‘গণচুম্বন’, বহিষ্কৃত হাওড়ার নামী স্কুলের ৬ ছাত্রছাত্রী ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement