স্টাফ রিপোর্টার, বিধাননগর: ফেসবুকে আলাপ৷ মুম্বইয়ে নিয়ে গিয়ে প্রতিষ্ঠিত মডেল বানিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রূতি৷ ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্রটির ডাকে সাড়া দিতে দেরি করেননি গৃহবধূটি৷ নিজের তিন বছরের সন্তানকে ছেড়ে চেপে বসলেন ট্রেনে৷ তবে গ্ল্যামার দুনিয়ায় পা রাখা হল না৷ ঠাঁই হল ভোপালের একটি ফ্ল্যাটে৷ সেখানে বন্ধ দরজার ওপারে আটকে রেখে দিনের পর দিন ধর্ষণ করা হল গৃহবধূটিকে৷ তিনি মডেল হতে মুম্বই রওনা দিয়েছিলেন ২০ নভেম্বর৷ তার পরের দিন গৃহবধূর স্বামী বিধাননগর দক্ষিণ থানায় নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের করেন৷ তদন্ত শুরু করেছিল পুলিশ৷ দু’জনের ফোন ও ফেসবুকের সূত্র ধরে ভোপালের একটি ফ্ল্যাট থেকে ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করলেন বিধাননগর থানার তদন্তকারী অফিসাররা৷ গ্রেফতার করা হয়েছে হিতেশ বর্মন নামের ওই ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রটিকে৷
পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, ফেসবুকে চ্যাট করতে করতে ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয় ২১ বছরের হিতেশের সঙ্গে ২৪ বছরের ওই গৃহবধূর৷ ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র হিতেশ মডেল কো-অর্ডিনেটর বলে নিজেকে পরিচয় দিয়েছিল৷ মুম্বইয়ে তার ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে বলে জানিয়েছিল ওই গৃহবধূটিকে৷ গ্ল্যামার দুনিয়ার রঙিন ছবির কথা শুনে প্রলুব্ধ হয়েছিলেন সুকান্তনগরের ছাপোষা যুবতী৷ তাঁর স্বামী হাউসকিপারের কাজ করেন৷ এই দম্পতির একটি তিন বছরের পুত্রসন্তানও রয়েছে৷ তবে মুম্বইয়ের নামকরা মডেল হতে সবকিছু ছেড়ে মুম্বইয়ে যেতে দ্বিধা করেননি৷
জানা যাচ্ছে, মুম্বই নিয়ে যাওয়ার নাম করে ২৪ বছরের ওই গৃহবধূকে ভোপালের একটি ফ্ল্যাটে নিয়ে গিয়ে তোলে হিতেশ৷ সেখানে কার্যত বন্দি বানিয়ে রেখে দেওয়া হয় ওই গৃহবধূকে৷ মিথ্যে প্রতিশ্রূতি দিয়ে দিনের পর দিন ধর্ষণ করা হয় তাঁকে৷ এভাবে প্রায় এক মাসের উপর ভোপালের ফ্ল্যাটে বন্দি হয়ে কাটানোর পর তাঁকে উদ্ধার করে বিধাননগর দক্ষিণ থানার পুলিশ৷ যুবকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগও জানিয়েছেন ওই মহিলা৷
জানা গিয়েছে, ফেসবুকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা চ্যাট করার জন্য প্রায়ই অশান্তি লেগে থাকত স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে৷ প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, শিশুপুত্রটির প্রতিও অমনোযোগী ছিলেন ওই মহিলা৷ আপাত নিস্তরঙ্গ সাংসারিক জীবনের উপর তিনি যে বিরক্ত সে কথা কয়েকজনের কাছে বলতেন তিনি৷ প্রতিবেশীদের ধারণা, এইসব কারণেই মুম্বইয়ের মডেল হতে অচেনা একজনের হাত ধরতে দ্বিধা করেননি তিনি৷ কয়েক মাস আগে নিজের ফেসবুক প্রোফাইল খোলেন সুকান্তনগরের বাসিন্দা ওই গৃহবধূ৷ ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট এলে নিতে দ্বিধা করতেন না৷ নির্বিচারে বন্ধু বানাতেন৷
এই ফেসবুকের সূত্র ধরেই ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র হিতেশের সঙ্গে আলাপ এবং ঘনিষ্ঠতা৷ ভোপাল যাওয়ার আগে একাধিকবার দু’জনের সাক্ষাত্ হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে৷ হিতেশ বেশ কিছুদিন কেষ্টপুরে বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকছিল৷ সেখানে এই গৃহবধূ যেতেন কিনা তা জানার চেষ্টা চলছে৷ হিতেশ ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র৷ রাঁচিতে থাকে তার পরিবার৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.