প্রতীকী ছবি।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একশো টাকার নোটে লুকিয়ে যখের ধন! যদিও সেই ধনের মালিকানা পেলেন না একশো টাকার নোটের মালকিন। কারণ, ওই যখের ধন যে চোরাই। মালিকের পারিবারিক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিল এক পরিচারিকা। বাড়ির লোকেরা বুঝতে পারেননি কখন সবার চোখের সামনে থেকেই সে হাতসাফাই করে নিয়েছে একটি পাঁচ লাখ টাকার হীরের আংটি।
যখন ওই পরিচারিকার উপর সন্দেহ হয় তখন তার খোঁজে তল্লাশি শুরু করেন সবাই। কিন্তু, খুঁজে কোনও লাভ হয়নি? আসলে বাড়ির মালিক ওই ব্যবসায়ী পরিবারের কেউ জানেন না পরিচারিকার বাড়ির ঠিকানা, না জানেন তার আসল পরিচয়। অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর তদন্ত শুরু করেও গড়িয়াহাট থানার পুলিশ প্রথমে অন্ধকারে ছিলেন। পরে ওই থানারই এক গ্রিন পুলিশকর্মী দিশা দেখান। বলেন, দক্ষিণ ২৪ পরগনার মন্দিরবাজার অঞ্চল থেকে বহু মানুষ কলকাতায় কাজ করতে আসেন। সেই তথ্যের সূত্র ধরেই ওই অঞ্চলে তল্লাশি চালায় পুলিশ। আর তাতেই ফল মেলে হাতেনাতে। সেখানকার একটি বাড়ি থেকেই ধরা পড়ে সীমা সর্দার নামে অভিযুক্ত পরিচারিকা। এরপর একটি ১০০ টাকার নোটে মুড়িয়ে রাখা ৫ লাখ টাকা দামের ওই হীরের আংটিটি উদ্ধার করে পুলিশ।
তদন্তে আরও জানা যায় যে মন্দিরবাজারের ওই অঞ্চলে বেশ কিছু ব্যক্তি আছে। যারা কলকাতায় আসা পরিচারক ও পরিচারিকাদের কাছ থেকে চোরাই মাল কেনে। মূলত তাদের জন্যই বহু পরিচারক ও পরিচারিকা উৎসাহ পায় কর্মস্থল থেকে চুরি করার।
পুলিশ জানিয়েছে, রবিবার সন্ধে সাতটার সময় ডোভার লেনের বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী অঞ্জলি মেহেরার বাড়িতে। তিনি অভিযোগ জানান, দুপুরে তাঁর বাড়িতে একটি পারিবারিক অনুষ্ঠান ছিল। তাতে যোগ দিয়েছিলেন বহু আত্মীয়। সব মিটে যাওয়ার পর সন্ধেবেলায় তাঁরা দেখেন, বাড়ি থেকে উধাও হয়েছে মূল্যবান হীরের আংটি। ওই মহিলা ব্যবসায়ী আরও জানান, অনুষ্ঠানে তাঁর বাবা ছিলেন। আর বাবার সঙ্গে ছিলেন এক পরিচারিকা। তাঁদের সন্দেহ হয় ওই পরিচারিকার উপর। তদন্তে নেমে গড়িয়াহাট থানার পুলিশ পরিবারের লোকদের জিজ্ঞাসা করেন, তাঁরা পরিচারিকার তথ্য থানায় জানিয়েছিলেন অথবা পরিচারিকার ঠিকানা জানেন কিনা। উত্তর আসে ‘না’। তবে তাঁরা পরিচারিকার মোবাইল ফোন নম্বর পুলিশকে দেয়।
পুলিশ তাতে ফোন করে সুইচড অফ পায়। তদন্তে জানা যায়, কার্তিক সর্দারের নামে ওই সিমটি নেওয়া হয়েছে। আর তা নেওয়ার সময় জয়নগরের একটি ঠিকানা দেওয়া আছে। যেহেতু গড়িয়াহাট থানার এক গ্রিন পুলিশকর্মী এলাকার কাছেই থাকেন, তাঁকেই খোঁজখবর নিতে বলা হয়। কিন্তু, জয়নগরে ওই পরিচারিকার খোঁজ মেলেনি। এরপর কথা প্রসঙ্গে মন্দিরবাজারের বিষয়টি উল্লেখ করেন ওই গ্রিন পুলিশকর্মী। রবিবার রাত ১০টা নাগাদ পুলিশের একটি টিম ওখানে রওনা দেয়। ততক্ষণে পুলিশ শিল্পী অভিযোগকারীদের মুখে বর্ণনা শুনে এঁকে ফেলেছেন ওই মহিলার ছবি। সেই সূত্র ধরে এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে পরিচারিকার বাড়িটি শনাক্ত করা হয়। আর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার করা হয় আংটি। জেরায় পরিচারিকাটি জানিয়েছে, সে ওই আংটি সকালে পাচার করার ছক কষে ছিল। ধৃতকে জেরা করে আরও তথ্য নেওয়ার চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.