ফাইল ছবি।
স্টাফ রিপোর্টার: লুকিয়ে মোবাইল এনে পরীক্ষা চলাকালীন তার ব্যবহার চলল উচ্চমাধ্যমিকের শেষ দিন পর্যন্ত। বৃহস্পতিবার শেষ দিনে ধরা পড়ল দুই। সব মিলিয়ে বাতিল ৪১ জনের এ বছরের সম্পূর্ণ পরীক্ষা। শুরু থেকেই প্রশ্ন উঠছিল, কেন আটকানো যাচ্ছে না মোবাইল ফোন? অন্যতম কারণ হিসাবে স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের প্রশ্রয় দেওয়ার কথা উঠে এল শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর মুখে। উচ্চমাধ্যমিক নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক থেকে তিনি বলেন, “কোথাও কোথাও অশিক্ষক কর্মচারী বা শিক্ষক ইচ্ছে করে ঢুকতে দিচ্ছেন। সংসদ তাদের চিহ্নিত করেছে। কয়েকজনের ক্ষেত্রে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে।”
উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য জানান, পশ্চিম মেদিনীপুর, মালদা, উত্তর দিনাজপুর, জলপাইগুড়ির একাধিক স্কুল সম্পর্কে রিপোর্ট পেয়েছে সংসদ। সভাপতি বলেন, “এসব জায়গাতে যারা নির্দিষ্টভাবে মোবাইল নিয়ে প্রবেশ অ্যালাও করেছে, তাদের চিহ্নিতকরণ করা হচ্ছে। শো-কজ করা বা অন্যান্য পদ্ধতি মেনেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পশ্চিম মেদিনীপুরের একটি স্কুলের প্রধান ইতিমধ্যেই নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে আমায় চিঠিও পাঠিয়েছেন। কিন্তু, ঘটনাটা অত্যন্ত আপত্তিকর। তাই শুধু নিঃশর্ত ক্ষমা চাইলে হয় না।”
মোবাইল নিয়ে ধরা পড়া ৪১ জনের মধ্যে ২৫ জন ছাত্রী ও ১৬ জন ছাত্র। ব্রাত্য বসু বলেন, “পরীক্ষার হল থেকে ধরা পড়া প্রত্যেকটি মোবাইলের তথ্য বিশ্লেষণ করে পদক্ষেপ নিচ্ছে প্রশাসন। পরীক্ষার্থীদের শিক্ষাগত ভবিষ্যতের কথা ভেবে খুব সাবধানে এবং সংবেদনশীলতার সঙ্গে এ বিষয়ে প্রশাসন তদন্ত চালাচ্ছে।”
শিক্ষামন্ত্রী আগামী বছরের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার সূচিও ঘোষণা করেছেন। ৩ মার্চ থেকে শুরু হবে ২০২৫-এর উচ্চমাধ্যমিক। চলবে ১৮ মার্চ পর্যন্ত। আগামী বছর যে মোবাইল বা অন্যান্য বৈদ্যুতিন যন্ত্র রুখতে আরও কড়াকড়ি হবে, সেই ইঙ্গিতও দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। সংসদ সভাপতি জানিয়েছেন, বাড়বে হ্যান্ড হেল্ড মেটাল ডিটেক্টরের সংখ্যাও। এবার প্রায় ৩৫০টি হ্যান্ড হেল্ড মেটাল ডিটেক্টর ব্যবহার করেছিল সংসদ।
শিক্ষামন্ত্রীর কথায় উঠে এসেছে ভুয়ো প্রশ্নপত্র ছড়িয়ে দেওয়ার অসাধু চক্র এবং সেগুলি দমনে সংসদ ও প্রশাসনের তৎপরতার কথা। এর পিছনে রাজনৈতিক চক্রান্তের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেননি শিক্ষামন্ত্রী। তাঁর কথায়, “একটা প্রশ্ন সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া এবং তার আধ ঘণ্টার মধ্যে বিজেপির কারোর সাংবাদিক বৈঠক করতে বসে যাওয়া। এটা আমার ধারণা, এবার বন্ধ হবে।” ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া উচ্চমাধ্যমিকের পরীক্ষার্থী ছিল ৭ লক্ষ ৯০ হাজার ২২১-এর সামান্য বেশি। রাজ্যের ২৩টি জেলাতেই ছাত্রের থেকে ছাত্রীদের সংখ্যা বেশি ছিল। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর বাংলার মেয়েদের জন্য চালু করা ঐতিহাসিক প্রকল্পগুলোর সাফল্য এই তথ্য প্রমাণ করে। মেয়েদের সশক্তিকরণ, এটা যে আর কেবলমাত্র মুখের স্লোগানে নেই, বাস্তবের মাটিতে পড়ে এটা যে ফলপ্রসূ হয়ে উঠছে, এই তথ্য সেটাও প্রমাণ করে।” ছয়জন সদ্য মা হওয়া ছাত্রী পরীক্ষা দিয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.