স্টাফ রিপোর্টার: অবশেষে মিলল গর্ভপাতের অনুমতি। পূর্ব কলকাতার বেলেঘাটার দম্পতিকে গর্ভপাতের অনুমতি দিল ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দার ও বিচারপতি অরিন্দম মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। সোমবার তাদের রায়ে ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, গর্ভস্থ শিশুর স্বাস্থ্য যখন খারাপ, ভূমিষ্ঠ হলে তার প্রভাব যখন মায়ের শরীর ও মনে পড়তে পারে, সেক্ষেত্রে গর্ভস্থ অসুস্থ শিশুর গর্ভপাতই শ্রেয়। মায়ের শরীর-মন ছাড়াও ওই শিশুর ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখেই এই রায় শোনানো হল বলে জানিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ। বেলেঘাটার ওই দম্পতির শিশুর বয়স এখন ২৮ সপ্তাহ। ডিভিশন বেঞ্চের রায় অনুযায়ী, যে কোনও সরকারি হাসপাতালে গিয়ে গভর্পাত করাতে পারেন ওই দম্পতি।
গর্ভপাত করাতে চেয়ে প্রথমে কলকাতা হাই কোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ২৫ সপ্তাহের এক অন্তঃসত্ত্বা। গর্ভের ভ্রূণ হৃৎপিণ্ডের বিকাশ ঠিকঠাক হয়নি। নাকের হাড় নেই। শিশুটি ভুগছে ডাউন সিন্ড্রোমে। তার জন্ম হলেও বাঁচার সম্ভাবনা মাত্র ৮ বছর। উলটে মায়ের জীবনহানির সম্ভাবনা রয়েছে। জীবনহানি না হলেও মার শারীরিক ও মানসিক সমস্যা হতে পারে। সে কারণেই গর্ভপাতের পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। কিন্তু ততদিনে আইন মোতাবেক ২০ সপ্তাহ সময় পার হয়ে গিয়েছে। তবু প্রথমে এনআরএস হাসপাতালে গর্ভপাতের আবেদন করেন ওই অন্তঃসত্ত্বা। সেখানে আবেদন খারিজ হলে পরে এসএসকেএম হাসপাতালে পুনরায় আবেদন করেন। সেখানেও আবেদন খারিজ হলে শেষে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন তাঁরা। সিঙ্গল বেঞ্চ শিশুর জন্মের পক্ষে রায় দেয়। জানানো হয় শিশুটির যেখানে ৮ বছর আয়ু রয়েছে, সেক্ষেত্রে তার চিকিৎসা হতে পারে। কিন্তু তেমন হলেও শিশুটির চিকিৎসার খরচ অনেক বেশি, এবং সেই ব্যয়বহুল চিকিৎসার ভার নেওয়া ওই পরিবারের পক্ষে সম্ভব নয়। সে কারণেই নতুন করে আবার ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন ওই অন্তঃসত্ত্বা। গত শুক্রবারই শুনানি ছিল এই মামলার। সব পক্ষের আবেদন শোনার পর আজই ডিভিশন বেঞ্চ রায় দিয়েছে গর্ভপাতের পক্ষে।
[ পার্টি ফান্ডে টাকা না দেওয়ায় অবসরপ্রাপ্ত সেনা জওয়ানকে মার, অভিযুক্ত তৃণমূল ]
মামলার বয়ান অনুযায়ী, প্রায় ২০ বছর আগে বেলেঘাটার এই দম্পতির বিয়ে হয়। তাদের ১৪ বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। ২০১৮-র জুলাইয়ে দ্বিতীয়বার অন্তঃসত্ত্বা হন তিনি। এর আগে যাদবপুরের এক অন্তঃসত্ত্বাও একই সমস্যার মধ্যে পড়লে তাঁকে গর্ভপাতের অনুমতি দেওয়া হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.