গৌতম ব্রহ্ম: ভারতীয় সর্পকুলের যাবতীয় ঠিকুজি-কোষ্ঠী তাঁর ঝুলিতে। চন্দ্রবোড়ার গল্প বলতে তাই সস্ত্রীক মার্কিন মুলুকে উড়ে গিয়েছেন হুগলির নালিকুলের বিশাল সাঁতরা। জেরোনিমো ইভেন্ট সেন্টার। ‘চিরিকাহুয়া ডেসার্ট মিউজিয়াম’-এর আমন্ত্রণে আমেরিকার নিউ মেক্সিকোর এই প্রেক্ষাগৃহে আমেরিকাবাসীর মুখোমুখি হয়েছিলেন বাংলার ‘হারপেটোলজিস্ট’ (সরীসৃপ বিশেষজ্ঞ) বিশাল সাঁতরা।
সেই নিউ মেক্সিকো, যার গা ঘেঁষে রয়েছে র্যাটল স্নেকের স্বর্গোদ্যান অ্যারিজোনা। সেখান দাঁড়িয়ে তিনি শুনিয়েছেন ভারতীয় সাপের কিসসা। অথচ এই বিশালই কদর পাননি নিজের রাজ্যে! ব্রিটেনের ব্যাঙ্গর বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘স্কুল অফ ন্যাশনাল সায়েন্স’-এর অধ্যাপক অনিতা মালহোত্রার সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গে একটি প্রকল্প শুরুর চেষ্টা করেছিলেন বিশাল। ইচ্ছে ছিল, হুগলিতে সর্পোদ্যান বানিয়ে সেখানেই সাপ ও সাপের বিষ নিয়ে গবেষণা করবেন।
সর্পচিকিৎসা বিশেষজ্ঞ ডাঃ দয়ালবন্ধু মজুমদার জানিয়েছেন, “২০১৮ সালে বিশালের অভিজ্ঞতা ও বিদ্যাকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু, প্রশাসন অনুমতি দেয়নি। লাল ফিতের ফাঁসে আটকে গিয়েছে বিষ সংগ্রহের চেষ্টা।”
মেক্সিকোয় বক্তৃতা দেওয়ার ফাঁকেই বিশাল ‘সংবাদ প্রতিদিন’-কে জানালেন, “সর্পকুলের বিপন্নতা, সর্পাঘাতের সমস্যা নিয়ে গোটা বিশ্ব উদ্বিগ্ন। শুধু আমার রাজ্য বুঝতে পারছে না।” বিশালের পর্যবেক্ষণ, আঞ্চলিকভাবে বিষ সংগ্রহ করা যাচ্ছে না বলেই এভিএস ঠিকমতো কাজ করছে না। চাষের জমিতে অত্যধিক কীটনাশক প্রয়োগে বেঘোরে মারা পড়ছে সাপ। জলবায়ু পরিবর্তনের জন্যও বিপদের মুখে সর্পকুল। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাপের বিষ সংগ্রহের ব্যাপারে সবুজ সংকেত দিয়েছেন। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে, এবার কি বিশাল ডাক পাবেন? ছাড়পত্র পাবে তাঁর স্বপ্নের প্রকল্প?
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.