সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অঙ্কিতা অধিকারী (Ankita Adhikari)। ববিতা সরকার। অনামিকা রায়। একই শিক্ষিকার পদে চাকরি করে ফেললেন তিনজন। তাও মাত্র এক বছরের ব্যবধানে। গত বছর জুন মাসেও চাকরিটি করতেন অঙ্কিতা অধিকারী। বছর ঘুরতেই সেই চাকরি ববিতার হাত ঘুরে চলে এল অনামিকার হাতে। কীভাবে?
স্কুল সার্ভিস কমিশনের সুপারিশে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারী চাকরি পেয়েছিলেন মেখলিগঞ্জের ইন্দিরা গার্লস হাই স্কুলে। পরে অভিযোগ ওঠে অঙ্কিতা চাকরিটি পেয়েছিলেন নিয়ম বহির্ভূত ভাবে। আদালতে সেই অভিযোগ প্রমাণিত হতেই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে চাকরি যায় অঙ্কিতার। সেটা গত বছর জুন মাস।
অঙ্কিতার চাকরি আদালতের নির্দেশেই পান ববিতা (Babita Sarkar)। ২০২২ সালের ৩০ জুন চাকরির নিয়োগপত্র পান তিনি। সঙ্গে সঙ্গে অঙ্কিতার পাওয়া বেতনও ফেরত নেয় আদালত। সেই টাকা দেওয়া হয় ববিতাকে। ৪ জুলাই ববিতা ওই একই স্কুলে চাকরিতে যোগ দেন। বস্তুত বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের হাত ধরে সেই চাকরি হস্তান্তর থেকে শুরু হয় রাজ্যের নিয়োগ দুর্নীতির শিকড়ের খোঁজ। চাকরি জীবনের শুরুটা ভালই হয়েছিল ববিতার। অনেকেই তাঁকে প্রতিবাদের মূর্ত রূপ হিসাবে সম্মান করা শুরু করেছিলেন। এমনকী দুর্গাপুজোর উদ্বোধনেও ডাক পেয়েছিলেন তিনি।
কিন্তু বছর ঘোরার আগেই আবার আসরে নেমে পড়েন অনামিকা। তিনি দাবি করেন, অঙ্কিতার যে চাকরি ববিতা পেয়েছেন, সেটা তাঁর প্রাপ্য। গতবছর ডিসেম্বর মাসে অনামিকা আদালতে দাবি করেন, ববিতার অ্যাকাডেমিক স্কোরে গোলযোগ আছে। তিনি দাবি করেন, স্নাতকস্তরে ৮০০ নম্বরের মধ্যে ৪৪০ নম্বর পেয়েছেন ববিতা। অর্থাৎ, শতকরা হিসাবে ৫৫ শতাংশ। অথচ আবেদনপত্রে স্নাতক স্তরের প্রাপ্ত নম্বরের শতকরা হিসাবে লেখা রয়েছে ৬০ শতাংশ। ববিতা ৬০ শতাংশ নম্বর দেখিয়ে অ্যাকাডেমিক স্কোরে ৮ নম্বর পেয়েছেন, অথচ তাঁর পাওয়ার কথা ৬ নম্বর। ওই ভুল সংশোধন হলে চাকরি তাঁরই প্রাপ্য। আদালতে শুরু হয় নতুন মামলা। শেষ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের রায়ে যোগ্য হিসাবে ওই চাকরি পেলেন অনামিকা।
প্রসঙ্গত, শিলিগুড়ির (Siliguri) বাসিন্দা অনামিকা রায়। তিনিও ববিতা সরকারের মতোই চাকরিপ্রার্থী। চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন। বহু প্রতীক্ষিত চাকরি পেয়ে তিনি জানিয়েছেন, “ব্যক্তিগতভাবে ববিতার সঙ্গে আমার কোনও শত্রুতা নেই। ওঁর জায়গায় অন্য কেউ হলেও তাঁকে চাকরি হারাতে হত। ওঁরও চাকরি হোক সেই কামনাই করি।” এদিকে ববিতা চাকরি খুইয়ে ভেঙে পড়েছেন। তিনি বলছেন, এক বছর পর এভাবে চাকরি কেড়ে নেওয়াটা কাম্য নয়।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.