অর্ণব আইচ: হতাশ হতে হবে না। এভাবেও টাকা ফেরত পাওয়া যায়। এটিএম জালিয়াতিতে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা উধাও হয়ে গেলেও শুধু একটু তাড়াতাড়ি যেতে হবে থানায়। এক, বড়জোড় দু’ঘণ্টার মধ্যে। অভিযোগ জানানোর পর থানার পুলিশ আধিকারিকরাই উদ্যোগ নিলে যে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে খোয়া যাওয়া টাকা ফেরত চলে আসতে পারে, তা সম্প্রতি করে দেখিয়েছে মেটিয়াবুরুজ থানা। এক পুলিশকর্তার মতে, এটি একটি দৃষ্টান্তও বটে। লালবাজারের হেল্পলাইনে ফোন করার পর গোয়েন্দা পুলিশের উদ্যোগে এর আগেও টাকা ফেরত পেয়েছেন বেশ কয়েকজন। লালবাজারের কর্তাদের মতে, স্থানীয় থানা ও গোয়েন্দা বিভাগ এভাবে জালিয়াতদের টাকা ‘সরবরাহ’ বন্ধ করে দিতে পারলে শহরের বাসিন্দাদের ফোন করে আর তাঁদের জালে ফেলার সাহস পাবে না এটিএম জালিয়াতরা।
পুলিশ জানিয়েছে, এটিএম জালিয়াতরা পদ্ধতি পালটে চলেছে। নিজেকে ব্যাঙ্ক ম্যানেজার বলে পরিচয় দিয়ে এটিএম কার্ড জেনে নেওয়া পদ্ধতিটি পুরনো। মানুষও সতর্ক হয়ে গিয়েছে। এভাবে ফোন করার পরও বিশেষ কারও সাড়া মিলছে না। তাই উপহার বা ‘প্রাইজ মানি’ দেওয়ার নাম করে জালিয়াতি শুরু করেছে এটিএম জালিয়াতরা। সম্প্রতি মেটিয়াবুরুজের এক বাসিন্দাকে এভাবেই ফোন করে টোপ দেয় এক জালিয়াত। নিজেকে একটি বেসরকারি সংস্থার এজেন্ট বলে পরিচয় দেয়। বলে, তাদের সংস্থা বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিন জিনিসপত্র তৈরি করে। তাঁর নম্বরটি বেছে নেওয়া হয়েছে। সংস্থার তৈরি জিনিস বিক্রির প্রয়োজনেই তাঁকে পুরস্কৃত করা হবে। অবশ্য তার জন্য তাঁকে ৩ হাজার ৪০০ টাকা দিয়ে সংস্থার তৈরি একটি জিনিস কিনতে হবে। একটি ওয়েবসাইটও দেখে নিতে বলা হয় তাঁকে। ওই ব্যক্তিকে কোনওমতে রাজি করায় জালিয়াতরা।
[টেস্ট ড্রাইভের নাম করে মোটরবাইক নিয়ে উধাও দুষ্কৃতী, তাজ্জব তদন্তকারীরা]
এর পরই তারা পুরনো ‘খেলা’র দিকে ঢুকে যায়। তাঁর এটিএম কার্ডের নম্বর জিজ্ঞাসা করা হয়। তিনি ওই নম্বর ও ওটিপি জানিয়ে দেন। তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে প্রথমে ৩ হাজার ৪০০ টাকা কেটে নেওয়া হয়। কিন্তু তার পরের ঘটনাটির জন্য তিনি প্রস্তুত ছিলেন না। তাঁর মোবাইলে আরও একটি ওটিপি আসে। তাঁকে ফোন করে সেই ওটিপিও দিতে বলা হয়। তিনি ওটিপি দেওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে ফের ১২ হাজার টাকা তুলে নেওয়া হয় তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে। একটু পরে ফের তাঁর মোবাইলে একটি ওটিপি আসে। আবার তাঁকে ফোন করে ওই ওটিপি চাওয়া হয়। এবার তাঁর সন্দেহ হয়। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই তিনি চলে যান মেটিয়াবুরুজ থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন।
পুলিশ তদন্ত শুরু করে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে। জানা যায়, কোন সংস্থার ই-ওয়ালেট থেকে কেটে নেওয়া হয়েছে টাকা। পুলিশের পক্ষে সেই ই-ওয়ালেট সংস্থাকে মেল করে সতর্ক করা হয়। ওয়ালেট সংস্থা মেল পেয়ে ব্যাঙ্ককে টাকা ফেরত দেয়। খোয়া যাওয়া পুরো টাকা চলে আসে অভিযোগকারীর অ্যাকাউন্টে। ব্যাঙ্ক জালিয়াতদের গ্রেপ্তার করা শক্ত। কিন্তু জালিয়াতির বিষয়টি দু’ঘণ্টার মধ্যে জানালে টাকা ফেরত পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
[ত্রিপুরা জয়ের আনন্দে বিধানসভায় লজেন্স বিলি দিলীপের]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.