সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ রায় দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। রাতারাতি হয়ে ওঠেন ‘ভগবান’। হাজার হাজার চাকরিপ্রার্থীর ‘মসিহা’। এহেন বিচারপতির এজলাস থেকেই নিয়োগ মামলা সরানোর নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। মন্ত্রীকন্যার চাকরি হারানো থেকে বিস্ফোরক সাক্ষাৎকার, কেন বারবার শিরোনামে চলে আসেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার কাঁধে নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তের দায়িত্ব তুলে দিয়ে চারিদিকে সাড়া ফেলে দেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। আর সেই তদন্তের জেরে বর্তমানে জেলবন্দি পার্থ চট্টোপাধ্যায়, মানিক ভট্টাচার্যদের মতো তাবড় তাবড় নেতা-মন্ত্রী। মানিক ভট্টাচার্যের সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেন। শুধু তাই নয় রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতাকেও চাকরি থেকে বরখাস্তের মতো ‘সাহসী’ নির্দেশও দেন বিচারপতি।
অঙ্কিতার পরিবর্তে স্কুলে চাকরি করছেন ববিতা সরকার। তাঁর কাছে বিচারপতি ভগবানের সমান। শুধু ববিতাই নন। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় প্রিয়াঙ্কা সাউ নামে আরেক চাকরিপ্রার্থীর কাছেও হয়ে উঠেছেন ‘মসিহা’। স্কুল সার্ভিস কমিশনকে প্রিয়াঙ্কাকে চাকরি দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি। অঙ্কিতা সরকারের মতো আরও বহু ‘অযোগ্য’ প্রার্থীকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেছেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি তাঁর নির্দেশে চাকরি হারান ১ হাজার ৯১১ জন গ্রুপ ডি কর্মী। তার ঠিক পরের মাস অর্থাৎ মার্চে গ্রুপ সি’র ৮৪২ জনের চাকরি বাতিল করেন বিচারপতি।
মামলার শুনানিতে একের পর এক বিস্ফোরক মন্তব্য করেন বিচারপতি। কখনও সিবিআইয়ের তদন্তের গতিপ্রকৃতি করে প্রশ্ন তুলেছেন। আবার কখনও বলেছেন, “দুর্নীতির মহাসমুদ্রে আমি হাবুডুবু খাচ্ছি।” কিংবা কখনও তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়িয়ে তিনি বলেছেন, “চারপাশে এত দুবৃত্ত দিদি একা সামলাতে পারছেন না।” আবার স্কুল সার্ভিস কমিশনের উদ্দেশে তিনি বলেন, “কোনও ভয় পাবেন না। অনেক ধেড়ে ইঁদুর ধরা পড়বে।” প্রাথমিক নিয়োগে প্যানেল বাতিলের হুঁশিয়ারিও শোনা যায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের গলায়। তিনি বলেন, “আমি ঢাকি সমেত বিসর্জন দিয়ে দেব।” আবার জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যমে তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েও কাটাছেঁড়া কম হয়নি। কীভাবে একজন বিচারপতি এভাবে সাক্ষাৎকার দিতে পারেন, তা নিয়ে চলে জোর আলোচনা। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের কপি দেখতে চেয়ে রীতিমতো চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন বিচারপতি। এবার কী হয়, সেটাই এখন দেখার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.