Advertisement
Advertisement

ভোর থেকেই প্রবল বৃষ্টি শহরে, কালীপুজোর পর ভাইফোঁটাতেও ‘ভিলেন’ নিম্নচাপ

আজ ও আগামিকাল দিনভর ভারী থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস আবহাওয়া দপ্তরের।

Heavy rain may dampen festive spirit of Kolkata
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:October 20, 2017 3:15 am
  • Updated:October 20, 2017 3:30 am  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাত কেটে তখনও ভোর হয়নি। আলো ফুটতে না ফুটতেই রাজ্যে শুরু হয়েছে প্রবল বৃষ্টিপাত। হাওড়া, নদিয়া, দুই ২৪ পরগনা ও দুই মেদিনীপুরে সকাল থেকে ভারী বৃষ্টি হয়েছে। ব্যতিক্রম হয়নি কলকাতাতেও। নিম্নচাপের জেরে শহরেও ভারী থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হয়েছে। শহরের বেশ কিছু জায়গায় জল দাঁড়িয়ে গিয়েছে। উল্টোডাঙা, গড়িয়াহাট, লেকটাউন, সেন্ট্রাল এভিনিউ, হেদুয়া, সিআইটি রোড-সহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় ‘অ্যাঙ্কেল ডিপ’ জল জমেছে বলে কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশ সূত্রে খবর। কাঁকুড়গাছি, উল্টোডাঙা আন্ডারপাসে জল জমেছে। দমদম ও পাতিপুকুর আন্ডারপাসও জলমগ্ন। বিটি রোড, এমজি রোড, হেয়ার স্ট্রিটে জল বাড়ছে। গতি কমেছে ট্র্যাফিকের। বৃষ্টির জেরে ব্যাহত হয়েছে স্বাভাবিক জনজীবন, বিপর্যস্ত যান চলাচলও। আজ দিনভর কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় ভারী থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর। সব দেখেশুনে অনেকেই মনে করছেন, কালীপুজোর সন্ধ্যা মাটি করার পর এবার ভাইফোঁটাতেও রেহাই মিলবে না বৃষ্টি-কাঁটার হাত থেকে।

[আলো আর বাজির রোশনাইয়ে জল ঢালতে চলেছে অঝোর বৃষ্টি]

নিম্নচাপের খাঁড়ার কোপ ভালই পড়েছে দীপাবলির আমেজে। যার ফলে কিছুটা দমে গিয়েছে শব্দ-দানবের দাপাদাপিও। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে অঝোর ধারায় বৃষ্টি হয়েছে। কখনও ঝিরঝিরিয়ে, কখনও ঝমঝমিয়ে। বারোয়ারি পুজোগুলির মেজাজ এমনিই মিইয়ে ছিল। কত উৎসব, কত অনুষ্ঠানের আয়োজন।  সব তো মাটি! মন খারাপ বাজিপ্রেমীদেরও। অনেকে সাধ করে চম্পাহাটি, নুঙ্গি পর্যন্ত উজিয়ে গিয়ে কাঁড়ি কাঁড়ি বাজি কিনে এনেছেন। বৃষ্টিভেজা কালীপুজোর রাতে সে সব ফাটানোর উৎসাহ তেমন চাগাড় দেয়নি। বাজির বাজার থেকে কেনা তুবড়ি, চরকি, রংমশালও অভিমান করেছে। মুখ ভার করে থাকা আকাশের নিচে খিলখিলিয়ে ওঠেনি আতশবাজির ফোয়ারা। বাজি ব্যবসায়ীদের মনেও দুশ্চিন্তার মেঘ। অনেক বারোয়ারি বাজি উৎসবের আয়োজন করে। আবহাওয়া এমন থাকলে তা-ও তো শিকেয়!

Advertisement

[মাতৃ আরাধনায় কী কী ভোগ দেওয়া হল বিভিন্ন কালীক্ষেত্রে?]

যার দাপটে উৎসবের আবহ এ ভাবে মার খাচ্ছে, পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগরের সেই সুস্পষ্ট নিম্নচাপ এখন গভীর নিম্নচাপের চেহারা নিয়েছে। আলিপুরের পূর্বাভাস, শুক্রবার সেটি ওড়িশার  দিকে সরে যেতে যেতে পুরী পেরিয়ে যাবে। এই নিম্নচাপের প্রভাবেই আজ দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে বিক্ষিপ্তভাবে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের জেলাগুলিতে ভারী বর্ষণের আশঙ্কা রয়েছে। আজ দিনভর সমুদ্র অশান্ত থাকবে। মৎস্যজীবীদের গভীর সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। উত্তরবঙ্গে মালদহ ও দুই দিনাজপুরেও বৃষ্টির সম্ভাবনা। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তরের উপ-মহানির্দেশক সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, কাল শনিবার, ভাইফোঁটার দিনও দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। তার পরে উত্তরে বৃষ্টির দাপট বাড়বে।

[দিওয়ালিতে কাশ্মীরে বড়সড় হামলার ছক পাক জঙ্গি ও গুপ্তচর সংস্থার]

গতকাল প্রায় সারাদিনই বৃষ্টি হওয়ার সামান্য বিরতি পেতেই অনেকে আতসবাজি নিয়ে ছাদে উঠে পড়েছেন। রংমশাল-তারাবাজি হাতে চরকিতে আগুন দিয়েছেন অনেকে। কেউ আবার প্রদীপ জ্বালিয়েছেন। তাল কেটে শব্দবাজিও ফেটেছে কয়েক জায়গায়। কলকাতার ৩৬টি জায়গা থেকে শব্দবাজি ফাটানো ও চার জায়গা থেকে সজোরে মাইক বাজানোর অভিযোগ এসেছে। গোলমাল করার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছে ২৭৪ জন। মোট ২০৭ কিলোগ্রাম শব্দবাজি উদ্ধার হয় শহরে। হাওড়া থেকে প্রায় দেড় হাজার কেজি নিষিদ্ধ বাজি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। এটুকু বাদ দিলে দুই শহরে মোটামুটি শান্তির আবহেই উদযাপিত হয়েছে দীপাবলি। পুলিশ-প্রশাসন-দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদও মেনে নিয়েছে, বৃষ্টির দৌলতে এবার বাজি-দূষণ সেভাবে ছড়ায়নি। বারুদের গন্ধে ম—ম করেনি বাতাস। গন্ধকের ঝাঁঝালো গন্ধে নাক জ্বলেনি।

১৬ অক্টোবরই বর্ষা বঙ্গ থেকে বিদায় নিয়েছে। আশা ছিল, নীলকান্তমণি আকাশ মাথায় নিয়ে বঙ্গবাসী শক্তির আরাধনায় মেতে উঠবে। কিন্তু সেখানেও প্রকৃতির এহেন ‘বাগড়া’র ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে আবহাওয়াবিদদের যুক্তি, অক্টোবরে বঙ্গোপসাগরে ঘন ঘন নিম্নচাপ হয়। সেই নিম্নচাপই দফায় দফায় শক্তি বাড়িয়ে ঘুর্ণিঝড়ে পরিণত হয়। যেমনটা হয়েছিল ২০১৪ সালে। ঘূর্ণিঝড় নীলম ওড়িশা উপকূলে আছড়ে পড়েছিল এমনই এক সময়ে। তবে এবার নিম্নচাপের ঘূণিঝড়ে রূপান্তরিত হওয়ার সম্ভাবনা ‌প্রায় নেই।

[গেরুয়া শিবিরের ‘ভেট’? মুকুলের জন্য বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা কেন্দ্রের]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement