প্রতীকী ছবি।
অরিজিৎ গুপ্ত, হাওড়া: ফের পণের বলি গৃহবধূ। রাখিতে বাপের বাড়ি যেতে চেয়েছিলেন। এই অপরাধে গৃহধূকে খুনের পর সিলিংফ্যানে ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে। মৃত গৃহবধূর নাম সুপর্ণা জানা(৩২)। রবিবার মেয়ের আসার সময় পেরিয়ে গেলে বাপের বাড়ির লোকজনই সুপর্ণাদেবীর শ্বশুরবাড়িতে যান। সেখানেই মৃত মেয়েকে উদ্ধার করেন তাঁরা। সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশে খবর দেওয়া হয়। ঘটনার পর গৃহবধূর শাশুড়ি ও ভাসুর পালিয়ে গেলেও ধরা পড়ে যায় স্বামী অরুণ জানা। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। দাবিমতো পণ না পেয়েই মেয়েকে খুন করেছে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এমনই অভিযোগ করেছেন মৃত গৃহবধূর বাপের বাড়ির আত্মীয়রা। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে লিলুয়ার লক্ষ্মীনারায়ণ তলা এলাকায়।
জানা গিয়েছে, সুপর্ণার শ্বশুরবাড়ি মেদিনীপুরে। কর্মসূত্রে স্বামী অরুণ জানা লিলুয়াতে থাকতো। কাছেই চামরাইলে সুপর্ণাদেবীর বাপের বাড়ি। সেই সূত্রেই গেঞ্জি কারখানার কর্মী অরুণের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দেন তাঁরা। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকে বারবার টাকার দাবি করে সুপর্ণাদেবীকে বাপের বাড়িতে পাঠিয়ে দিত অরুণ। কয়েকবার মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে টাকা দেওয়াও হয়েছে। তবে দিন যত যাচ্ছিল দাবি বেড়েই চলছিল, তত বড়ছিল চাহিদা। সাধারণ মধ্যবিত্তের পরিবারের পক্ষে সেই পণের দাবি মেটানো সম্ভবরপর ছিল না। সুতরাং, টাকা না পেয়ে গৃহবধূর উপরে অত্যাচারের মাত্রাও বাড়ছিল। উঠতে বসতে গঞ্জনা থেকে শুরু করে মারধর, তালিকায় কিছুই বাদ ছিল না। শনিবার রাতেই রাখি উপলক্ষে বাপের বাড়িতে যেতে চেয়েছিলেন ওই গৃহবধূ। সকালে মেয়ে না আসায় শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ঘরের মধ্যে নিথর দেহ পড়ে আছে। সিলিংফ্যানে ঝুলছে ওড়না। বাড়িতে জামাই থাকলেও ভাসুর বা শাশুড়ি কাউকেই পাওয়া যায়নি। অভিযোগ, বাপের বাড়িতে আসতে চাওয়াতেই সুপর্ণদেবীকে গলা টিপে খুন করেছে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। পরে দায় এড়াতে সিলিংফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে দিয়েছে দেহ। যাতে দেখলে মনে হয় ওই গৃহবধূ আত্মঘাতী হয়েছেন। অভিযুক্ত স্বামীকে গ্রেপ্তারের পর জেরা শুরু করেছে লিলুয়া থানার পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.