কৃষ্ণকুমার দাস: ফুটপাতের দুই তৃতীয়াংশ ছাড়ার পাশাপাশি শহরের কোনও পিচ রাস্তায় হকাররা (Hawkers) বসবেন না। অগ্নিকাণ্ড রুখতে স্টলের মাথায় কালো প্লাস্টিকও টাঙানো যাবে না। শুক্রবার টাউন ভেন্ডিং কমিটির সভায় প্রকাশ্যেই পুরসভার নয়া ‘হকিং’ নীতির এমন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুকে সমর্থন করলেন হকার সংগঠনের নেতারা।
পুরসভার নবগঠিত টাউন ভেন্ডিং কমিটির অন্যতম সদস্য ও হকার সংগ্রাম কমিটির নেতা শক্তিমান ঘোষ জানিয়েছেন, “ফুটপাতের তিনভাগের দু’ভাগ না ছেড়ে দিলে স্টলে ক্রেতারা আসবেন কীভাবে? তাই কলকাতায় এক তৃতীয়াংশ ফুটপাতেই হকিং করতে হবে হকার ভাইদের।”
উল্লেখ্য, দু’বছর আগে গড়িয়াহাটের ফুটপাতের স্টলে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে মেয়র ফিরহাদ হাকিম হকারদের দোকানে প্লাস্টিকের ছাউনি বন্ধের পক্ষে জোরালে সওয়াল করে চলেছেন। শুধু তাই নয়, গড়িয়াহাট, হাজরা, হাতিবাগান, ধর্মতলা, বিবাদী বাগের মতো শহরের ৫৮টি গুরুত্বপূর্ণ মোড় থেকে চারদিকে ৫০ ফুট দূরত্ব পর্যন্ত সম্পূর্ণ রাস্তা ফাঁকা রাখতেই হবে বলেও পুরসভার সঙ্গে সহমত হকার নেতারা। এদিন বৈঠকে টাউন ভেন্ডিং কমিটির কো-চেয়ারম্যান দেবাশিস কুমারকে সমর্থন করে শক্তিমানের প্রস্তাব, চিহ্নিত ৫৮টি মোড় ও ফুটপাত দুই তৃতীয়াংশ ফাঁকা রাখতে হকার ইউনিয়ন পুলিশ ও পুরসভাকে সাহায্য করবে।
তিলোত্তমা কলকাতার সৌন্দর্য বৃদ্ধির পাশাপাশি শহরের ফুটপাত পথচারীকে ফেরত দিতে ফের তৎপর মেয়র ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)। বস্তুত এই কারণে পুর কমিশনারের নেতৃত্বে পুলিশ, হকার নেতা ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে নিয়ে নয়া হকার নীতি তৈরি ও কার্যকর করতে টাউন ভেন্ডিং কমিটি গড়েছেন। কমিটির দুই কো-চেয়ারম্যান, দুই মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার ও দেবব্রত মজুমদার। এছাড়া ট্রেডার্স কমিটি ও হকারদের তিন নেতা শক্তি মণ্ডল, শক্তিমান ঘোষ ও ভরত সাউ কমিটির সদস্য আছেন। তবে বৈঠকে হকারদের ৪০ শতাংশ প্রতিনিধি ও নির্বাচিত কমিটি নিয়ে একসময় বিতর্ক হয়।
পরে ঠিক হয়েছে, ২০১৮ সালে শহরের হকারদের অবস্থান ও সংখ্যা নিয়ে পুলিশের ভিডিও সমীক্ষার তথ্য পুরসভার ওয়েবসাইটে দেওয়া হবে। সাতদিনের মধ্যে যে কেউ ওই তথ্য দেখে আপত্তি বা সংশোধনের সুযোগ পাবেন। সমীক্ষা অনুযায়ী, প্রায় ৬০ হাজার হকার আছেন শহরে। ওয়েবসাইট দেখে হকাররা ফুটপাত অনেক বেশি করে দখল থাকলেও তা নিয়ে আপত্তি ও তথ্য জানাতে পারবেন মহানগরের সাধারণ নাগরিকরাও। বৈঠকের পর দেবাশিস কুমার জানান, “তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার পর সমস্ত হকারকেই কোন রাস্তায় কোথায় বসে হকিং করে তা নিয়ে সচিত্র পরিচয়পত্র দেওয়া হবে।” পুরকর্তাদের দাবি, এই সচিত্র পরিচয়পত্র পেয়ে গেলেই আর পুলিশ বা ইউনিয়ন নেতাদের ‘ঘুষ’ দিয়ে দোকান নিয়ে হকারি করতে হবে না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.