Advertisement
Advertisement
এনআরসি বিজ্ঞাপন

‘১৯৭১-এর আগের প্রমাণ-সহ ঘোষ পাত্রী চাই’, বিয়ের বিজ্ঞাপনে হইচই

এবার পাত্রপাত্রীর বিজ্ঞাপনেও এনআরসি।

Groom puts up ad for 'NRC compliant' bride, people stunned
Published by: Sulaya Singha
  • Posted:December 24, 2019 11:22 am
  • Updated:December 24, 2019 11:22 am  

নব্যেন্দু হাজরা ও ব্রতদীপ ভট্টাচার্য: ঘোষ ২৯/ ৫ ফুট ৯ ইঞ্চি, হাই স্কুল শিক্ষক, এইচ এস পাস, ৫ ফুট ১ ইঞ্চি ঊর্ধ্বে ভারতীয় ১৯৭১-এর আগের প্রমাণ-সহ ঘোষ পাত্রী চাই।

বেশি বয়সে বিয়ে বা যৌন ক্ষমতায় অক্ষম পাত্রের পাত্রী চাই। কিংবা সন্তান ধারণে অক্ষম পাত্রীর পাত্র চাই। এই ধরনের বিয়ের বিজ্ঞাপন অতীতেও দেখা গিয়েছে খবরের কাগজে। অনেক ক্ষেত্রেই পাত্র বা পাত্রী নিজেদের চাহিদার কথা খোলসা করে জানিয়েছেন সেখানে। কিন্তু সময় হিসেব করে নাগরিকত্বের প্রমাণ চেয়ে পাত্র-পাত্রীর বিজ্ঞাপন এর আগে কারও চোখেই পড়েনি। তবে গত রবিবারের এক বাংলা দৈনিকে এমন বিজ্ঞাপন দিয়ে রীতিমতো আলোড়ন ফেলে দিয়েছেন মুর্শিদাবাদের এই হাইস্কুলের শিক্ষক পাত্র। বিয়ের এহেন বিজ্ঞাপন দেখে অনেকেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন, তবে কি এনআরসি’র খোঁচা এবার পাত্র-পাত্রীর কলামেও! নাহলে আর এমন বিজ্ঞাপন কেন?

Advertisement

[আরও পড়ুন: লোকসভায় ট্রেলার ছিল, ২০২১ সালে সিনেমা দেখবে তৃণমূল: জেপি নাড্ডা]

২৯ বছর বয়সি এই পাত্রের বাড়ি উত্তর চব্বিশ পরগনার হাবড়ায়। কিন্তু চাকরিসূত্রে তিনি থাকেন মুর্শিদাবাদে। বছর কয়েক হল চাকরি করেন। যে ফোন নম্বরটি সংবাদপত্রে দেওয়া রয়েছে, সেটি পাত্রের জামাইবাবুর। বিজ্ঞাপন দেখে তাই সোমবার বিকেলে ফোন করা হল সেই নম্বরে। প্রথমটায় বলতে না চাইলেও পরে জামাইবাবুই যুক্তি দিয়ে বোঝান বিষয়টি। “দেখাশোনা করে যখন শ্যালকের বিয়ে দেওয়া হচ্ছে, তখন সব কিছু যাচাই করে নেওয়াই ভাল নয় কি! বিয়ের পর যদি এনআরসিতে নাম বাদ যায়! তবে তো অন্য দেশে পাঠিয়ে দেবে বউকে। বিয়ের পর বউ চলে গেলে তখন শ্যালকের হবে কী! তার চেয়ে আগে থেকেই সব দেখে নেওয়া ভাল।” বলেন জামাইবাবু। তিনি আরও জানান, পাত্রের বিশেষ কিছু চাহিদার কথা তো বলা হয়নি। শুধু চাওয়া হয়েছে এদেশের নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র। সেটা না থাকলে তেমন মেয়েকে বিয়ে করবে না তাঁর শ্যালক।

কিন্তু নাগরিকত্বের জন্য তো ভোটার কার্ড, আধার কার্ড রয়েছে। তাহলে পাত্রীর পরিবারের ১৯৭১-এর আগের এ দেশের প্রমাণ চাওয়ার কী আছে! নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ব্যক্তি বলেন, “দেখুন চতুর্দিকে এনআরসি নিয়ে অশান্তি চলছে। তাতে আধার-ভোটার কার্ডের কী গুরুত্ব, তাই-ই বুঝতে পারছি না। তার থেকে যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে এ দেশের স্থায়ী বাসিন্দা, তাঁদের বাড়ির মেয়ের সঙ্গেই বিয়ে দেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ।”

[আরও পড়ুন: CAA বিরোধী আন্দোলনে জঙ্গিপুরে পুড়েছিল ট্রেন, রূপ ফিরিয়ে ‘উৎকৃষ্ট’ করল রেল]

রবিবারের কাগজে বিজ্ঞাপন বের হওয়ার পর একাধিক ফোন এসেছে বলেও জানান পাত্রের জামাইবাবু। এদিকে এই বিজ্ঞাপন চোখে পড়তে কেউ কেউ ভ্রু কুঁচকেছেন। তাঁদের বক্তব্য, এটা বাড়াবাড়ি। পাত্রী খুঁজতে একেবারে বংশের প্রমাণপত্র! আবার কারও মতে গোটা দেশের যা অবস্থা, তাতে সাধারণ মানুষই বা আর কী করবে! পরিষ্কার করে সব বলে নেওয়াই ভাল। যদি বাঙাল-ঘটি, পাত্রের আয়, পরিবারের সদস্য সংখ্যা বিয়ের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় হয়, তবে নাগরিকত্বের প্রমাণ চাইলেই বা ক্ষতি কী!

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement