সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পরিবেশ আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে রবীন্দ্র সরোবরের ছটপুজো হয়েছে। নতুন করে দূষণ ছড়িয়েছে। জলে বর্জ্য পদার্থ মিশতে থাকায় তা বিষাক্ত হয়ে উঠেছে। সেই বিষাক্ত জলে মাছের মৃত্যু ঘটছে। ছট পুজো শেষ হতেই দেখা গিয়েছেন লেকের পাড়ে মাছেদের মৃতদেহ। এমনকী সোমবার সকালে একটি কচ্ছপের মৃতদেহও দেখা গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে পরিবেশ রক্ষায় ফের গ্রিন ট্রাইবুনালের দ্বারস্থ হচ্ছে পরিবেশবিদদের একাংশ। আজ দিল্লির পরিবেশ আদালতে এই সংক্রান্ত মামলার শুনানি।
সদ্যই ছটপুজো শেষ হয়েছে। কলকাতার অন্যতম বড় লেক রবীন্দ্র সরোবরে প্রতি বছর এই পুজো দিয়ে থাকেন মানুষজন। তবে তার জেরে সেখানকার প্রাকৃতিক পরিবেশ দূষিত হয় বলে আইনি ছাড়পত্র নিয়ে এখানে ছট পুজো করা নিষিদ্ধ হয়েছে। রবীন্দ্র সরোবরে ছট পুজো নিয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ এবং জাতীয় পরিবেশ আদালত।
তা উপেক্ষা করেই এবছর ছট পুজোর সকাল থেকে আরও বেশি মানুষজন জড়ো হয়েছিলেন পুজোর ডালা নিয়ে। পুলিশের বাধা না মেনে, কার্যত জোর করে তালা ভেঙে লেকের ভিতরে ঢুকে পড়েন তাঁরা। এ নিয়ে দিনভর উত্তেজনা ছিল রবীন্দ্র সরোবর চত্বরে। সন্ধে পর্যন্তও এখানে চলে পূজার্চনা। এমন ঘটনার জন্য রাজ্য সরকারের উদাসীনতাকে দায়ী করেছেন অনেকে। কিন্তু ছটপুজোর তারপরই বোঝা যায়, সরোবরের জল দূষিত হয়ে উঠেছে। তাতে ফুল, পাতা, দুধ, ঘি, প্লাস্টিক কিছুই ফেলতে বাকি রাখেননি ছট উদযাপনকারীরা। যার ফলে বিষিয়ে গিয়েছে জল। তাতে অক্সিজেনের অভাব ঘটেছে, মৃত্যুর মুখে ঢলে মাছের ঝাঁক। এমনকী চড়া শব্দে মাইক বাজানোয় শব্দদূষণ হয়েছে। রবীন্দ্র সরোবরের আশেপাশের গাছ থেকে পাখিরাও উড়ে গিয়েছে অন্যত্র। সবমিলিয়ে, সরোবরের প্রাকৃতিক ভারসাম্য একেবারেই টলে গিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে দূষণ মাপার জন্য সোমবার সকালে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তরফে একদল প্রতিনিধি সরোবরে যান। গোটা লেক পরিদর্শন করেন। এ নিয়ে একটি রিপোর্টও তাঁরা তৈরি করবেন বলে জানা গিয়েছে। আরেকদিকে, জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে রবীন্দ্র সরোবরে এই ছট পুজোর আয়োজন নিয়ে প্রতিবাদে সরব পরিবেশপ্রেমীরা। তাঁদেরই একাংশ ফের মামলা দায়ের করেছেন গ্রিন ট্রাইবুনালে। আজই সেই সংক্রান্ত মামলার শুনানি হওয়ার কথা। তবে আইনের রায় শোনার আগে দ্রুত সরোবরের আগের চেহারা ফিরিয়ে দেওয়া প্রয়োজন বলেই মনে করছে পরিবেশবিদদের একাংশ।
ছবি: পিন্টু প্রধান।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.