দীপালি সেন: স্টেট এলিজিবিলিটি টেস্টের (সেট) প্রশ্নপত্রের গোপনীয়তা বজায় রাখতে এ বছর নতুন ব্যবস্থা চালু করছে কলেজ সার্ভিস কমিশন। যে ব্যবস্থায় অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করে প্রশ্নপত্রের গতিবিধির উপর নজরদারি করা হবে। কলেজ সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান দীপক কর জানিয়েছেন, মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে জিপিএস প্রযুক্তির ব্যবহার করেই পরিচালিত হবে গোটা ব্যবস্থাটি।
আগামী ১৭ ডিসেম্বর, রবিবার হতে চলেছে রাজ্যের জেনারেল ডিগ্রি কলেজগুলিতে সহকারী অধ্যাপক নিয়োগের যোগ্যতামান নির্ণায়ক এই পরীক্ষাটি। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে শুরু হবে পরীক্ষা। প্রথমপত্রের পরীক্ষা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ও বেলা ১২টা থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত দ্বিতীয়পত্রের পরীক্ষা হবে। রাজ্যজুড়ে প্রায় ১১০টি পরীক্ষাকেন্দ্রে সেট-এ অংশগ্রহণ করবেন প্রায় ৮০ হাজার প্রার্থী। প্রশ্নপত্রের গোপনীয়তা বজায় রাখা এই ধরনের পরীক্ষার ক্ষেত্রে অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। সে কথা মাথায় রেখেই প্রযুক্তিভিত্তিক ট্র্যাকিং ব্যবস্থা চালু করছে কলেজ সার্ভিস কমিশন।
এ বিষয়ে কমিশনের চেয়ারম্যান দীপক কর বলেন, “পরীক্ষা সংক্রান্ত সামগ্রীর গতিবিধি আমরা মোবাইল অ্যাপভিত্তিক জিপিএস প্রযুক্তি ব্যবহার করে ট্র্যাকিং করব। এই সামগ্রীগুলি প্রথম বিতরণকেন্দ্র থেকে শুরু করে পরীক্ষাকেন্দ্রগুলির কাস্টোডিয়ানের কাছে পৌঁছনো, সেখান থেকে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছনো-সমগ্র গতিবিধির উপর নজরদারি করা হবে। পরীক্ষা সংক্রান্ত গোপনীয়তা বজায় রাখতে এবং কোনও ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়ানোর জন্য প্রস্তুত থাকতেই এই ব্যবস্থাটি চালু করা হচ্ছে।” এই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার নেপথ্য কারণ নিয়ে কমিশনের চেয়ারম্যানের বক্তব্য, “সময়ের সঙ্গে আমাদের কাছে যে নতুন প্রযুক্তি উঠে আসে, পরীক্ষা পরিচালনার কাছে সেই প্রযুক্তি ব্যবহার করাই হল আধুনিকতম পন্থা। কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা হয়নি বলে যে ভবিষ্যতে হবে না, তা নিশ্চিত করে বলা যায় না। তাই আমরা সহজলভ্য প্রযুক্তির ব্যবহার করে পরীক্ষা ব্যবস্থাকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে আগ্রহী।”
২৫তম সেট-এর আর প্রায় একমাস বাকি। বর্তমানে জোরকদমে তার প্রস্তুতির কাজ চলছে কমিশনে। জানা গিয়েছে, আগামী সপ্তাহেই সেট-এর অ্যাডমিট কার্ড দেওয়া শুরু হবে। কমিশনের ওয়েবসাইটে গিয়ে রেজিস্ট্রেশন আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগ-ইন করে অনলাইনে অ্যাডমিট কার্ড ডাউনলোড করে নিতে পারবেন সেট-এর আবেদনকারীরা। পরীক্ষার্থীদের স্বার্থে তাঁদের নিজেদের জেলাতেই পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাই ২৩টি জেলাজুড়ে প্রায় ১১০টি পরীক্ষাকেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে কমিশনের প্রতিনিধি হিসাবে দু’জন করে অবজার্ভার থাকবেন। তাঁরা হবেন রাজ্যের বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষ, অধ্যাপক, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বা আধিকারিক। ২৩টি জেলার জন্য ২৬ জন নোডাল অফিসার থাকছেন। যে দায়িত্ব পালন করবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, ডিন, পরীক্ষা নিয়ামকের মতো আধিকারিক বা কলেজের অধ্যক্ষ পদে থাকা ব্যক্তিরা।
সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা ব্যবস্থা পরিচালনার জন্য জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের তরফে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে কমিশনের তরফে। পরীক্ষার দিন পরিবহন ব্যবস্থা সচল রাখার আবেদন জানানো হয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব, পূর্ব, উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল, মেট্রো রেল ও রাজ্যের পরিবহণ দপ্তরে। বিদ্যুৎ সরবরাহ-সহ অন্যান্য জরুরি পরিষেবা যাতে স্বাভাবিক থাকে তার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও সংস্থাগুলিকে আবেদন জানিয়েছে কমিশন। পরীক্ষাকেন্দ্র হিসাবে নির্বাচিত কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে সেট পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্তদের (ইন-চার্জ) সঙ্গে পরীক্ষার দিন পনেরো আগে বৈঠক করবেন কলেজ সার্ভিস কমিশনের কর্তারা। কীভাবে সমগ্র পরীক্ষা ব্যবস্থা পরিচালিত হবে, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে বৈঠকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.