Advertisement
Advertisement

রাস্তায় পড়াশোনা করে স্কুল পেরিয়ে কলেজে, ছাত্রীর পাশে থাকার বার্তা পার্থর

উচ্চশিক্ষায় সবরকম সাহায্যের আশ্বাস শিক্ষামন্ত্রীর।

Govt lends helping hand to a student
Published by: Tanumoy Ghosal
  • Posted:February 6, 2019 8:24 pm
  • Updated:February 6, 2019 8:24 pm  

দীপঙ্কর মণ্ডল: ভাঙা গামলার ভিতরে মুঠো দু’য়েক চাল। গুটিকয় ডালের দানা। একটাই আলু। খিচুড়ি রান্না হবে। জ্বালানি বলতে কুড়িয়ে বাড়িয়ে আনা কাঠের টুকরো। মর্নিং কলেজ থেকে ফিরে রান্নায় বসেছে মেয়ে। মা ও ভাইকে খাওয়ানোর পর যদি কিছু থাকে নিজে পেটে ফেলবে। উত্তর কলকাতার বারাণসী ঘোষ স্ট্রিটে মহাদেবের মন্দিরের পাশে রাস্তায় ওঁদের বাস। দু’ফালি চওড়া বেঞ্চ। অনুদানে পাওয়া কম্বল। উপরে ছেঁড়া পলিথিন। সন্ধের মধ্যে চারিদিক গুঁজে ঢুকে পড়ে সবাই। আর ল্যাম্পপোস্টের আলোয় পড়তে থাকে মেয়ে। অসীম দারিদ্রের সঙ্গে যুঝে যে কিনা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের গণ্ডি পেরিয়ে ফেলেছে।

[উচ্চমাধ্যমিকের প্রতিটি পরীক্ষাকেন্দ্রে মোবাইল স্ক্যানার, নজিরবিহীন সিদ্ধান্ত সংসদের]

Advertisement

বিদ্যাসাগর মহিলা কলেজে ছাত্রীটির নাম টুম্পা সাউ। তাঁকে নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্বেগের অন্ত নেই। ওঁদের প্রশ্ন, এভাবে আর কতদিন চলবে? রাত নামলে বিপদ হবে না তো? ভয় পান অনেকে। সুযোগসন্ধানী বেশ কিছু চোখ টুম্পারও নজর এড়ায় না। যদিও স্নাতকের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রীটি অকুতোভয়। “কে আর আসবে। এখানেই আমার জন্ম। সবাই চেনে। মনে হয় না কোনও বিপদ হবে।”– নির্লিপ্ত মুখে বলেন তিনি। বুধবার বিকাশ ভবনে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় অভাবী ছাত্রীর কথা শোনার পর পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন। পার্থবাবু বলেন, “আমাদের সরকার সবসময় ছাত্রছাত্রীদের পাশে থাকে। এই ছাত্রীর পড়াশোনায় যাতে কোনও অসুবিধা না হয় তা অবশ্যই নিশ্চিত করা হবে।”

টুম্পারা এখন যেখানে থাকেন, ময়লা সেই বেঞ্চগুলোর উপর একসময় অস্থায়ী ভাতের হোটেল চলত। বাড়ির কর্তা কার্তিক সাউ মারা যাওয়ার পর হোটেল বন্ধ। কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। রাস্তাতেই তাই থাকেন কার্তিকের স্ত্রী আর তিন ছেলে-মেয়ে। বছর দু’য়েক আগে প্রয়াত হন কার্তিক। স্ত্রী টুকটাক অস্থায়ী কাজ করেন। নাইন পাস ছেলে বড়বাজারে কাপড়ের দোকানে ফাইফরমাস খাটে। ছোট ছেলে অষ্টম শ্রেণিতে। আর মেয়ে কলেজে। তবে বই-খাতা না থাকা এবং ফি বাকি পড়ায় ইদানিং কলেজে যেতে পারছেন না তিনি। পরিচিতদের কাছে সাহায্য চেয়েছেন। আশা, একটা কিছু সুরাহা হবে। স্নাতক হওয়ার লড়াইয়ে হাল ছাড়েননি টুম্পা। তিনি বলছেন, “গ্র‌্যাজুয়েট হতে পারলে একটা চাকরি জুটতে পারে। মা-ভাইদের মুখে দুটো ভাত তুলে দিতে পারব।” স্বপ্নকে পাথেয় করে নিরন্তর লড়ে যাচ্ছে মেয়েটি।

বিদ্যাসাগর কলেজ কর্তৃপক্ষ কি এমন অসহায় ছাত্রীর পাশে দাঁড়াতে পারে না? বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েছেন কলেজের অধ্যক্ষা রূপালি চৌধুরি। তিনি বলেন, “কলেজের সময় পেরিয়ে গেলে আমি কথা বলি না।” তবে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় স্পষ্ট জানিয়েছেন, ওই ছাত্রী কন্যাশ্রীর টাকা পাবেন। উচ্চশিক্ষায় সমস্ত রকম সাহায্য করবে রাজ্য সরকার।

[ প্রথা ভেঙে কন্যাদান ছাড়াই বিয়ে, নেটদুনিয়ায় প্রশংসা কুড়োচ্ছে এই ছবি]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement