সন্দীপ চক্রবর্তী: বন্ধ রুখতে আরও কড়া পদক্ষেপ নিল রাজ্য সরকার৷ সোমবার সকালে নবান্ন মন্ত্রীগোষ্ঠীর বৈঠকের পর বন্ধ রুখতে বেশ কিছু কড়া দাওয়াইয়ের কথা ঘোষণা করলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ সরকারি সমস্ত দপ্তর খোলার রাখার নির্দেশ জারির পাশাপাশি এদিন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলি চালু রাখার আরজি জানান শিক্ষামন্ত্রী৷ দপ্তর খোলার পাশাপাশি কর্মী ও সাধারণ মানুষের যাতায়াতের জন্য সরকার ও বেসরকারি সমস্ত গণপরিবহণ সংস্থাকে বুধবার পথে নামার জন্য আরজিও জানিয়েছেন তিনি৷ বন্ধের দিনে পথচলতি সাধারণ মানুষকে পর্যন্ত নিরাপত্তা দেওয়ারও আশ্বাস দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী৷
সোমবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে পার্থবাবু বলেন, ‘‘কর্মনাশা বনধ রুখতে তৎপর প্রশাসন৷ সরকার কোনওভাবেই বন্ধকে সমর্থন করে না৷ ফলে, বুধবার বাংলা সচল রাখতে সমস্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি সংস্থাগুলি খুলে রাখারও আরজি জানানো হচ্ছে৷ এমনকি, বেসরকারি গণপরিবহণ সংস্থাগুলিকেও বলব, তারাও যাতে বনধ উপেক্ষা করে পথে নামেন৷’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘বিজেপি রাজ্যে বিশৃঙ্খলা করতে চাইছে৷ রাজ্যের উন্নয়নের গতিকে স্তব্ধ করতে চাইছে৷ চক্রান্ত করে ২৬ তারিখ বাংলা বনধ্ ডেকেছে বিজেপি। ওইদিন বাংলা সচল রাখার জন্য প্রশাসনের যা যা করণীয় সবকিছু করবে প্রশাসন।’’
[অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র কেনায় এখনও অনীহা শহরে, সুরক্ষা নিয়ে উদ্বেগ বিশেষজ্ঞদের]
বেসরকারি সংস্থাগুলিকে পাশে থাকার আরজি জানানোর পাশাপাশি সরকারি কর্মীদের ছুটিতেও লাগাম টানার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ বনধের দিনে ছুটি করলে বেতনে কোপ পড়বে বলেও জারি হয়েছে বিজ্ঞপ্তি৷ একইসঙ্গে কর্মজীবন থেকেও একদিন কেটে নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি৷ বনধের দিনে আইনশৃঙ্খলার অবনতি রুখতেও বাড়তি বন্দোবস্ত রাখার কথা জানান শিক্ষামন্ত্রী৷ বলেন, ‘‘স্কুল কলেজ কারখানা সব কিছু যাতে ঠিকঠাক চলে তার জন্য আমরা আবেদন করছি। বেসরকারি স্কুল কলেজ ও কারখানার কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন বাংলা বনধের দিন আপনারা পরিষেবা স্বাভাবিক রাখুন, সরকার নিরাপত্তা দেবে। বেসরকারি বাসের সংগঠনগুলির সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে সচল রাখার জন্য, পরিবহণ মন্ত্রীকে বলা হয়েছে সবকিছু সচল রাখার জন্য, পুলিশ ব্যবস্থা নেবে। কেউ যদি ভাঙচুর করার চেষ্টা করে তাহলে তা হবে ক্রিমিনাল অফেন্স, সেই হিসাবে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।’’
[পুঁতির মালা বিক্রির নামে কোটি টাকা আত্মসাৎ, প্রেমের ফাঁদে গ্রেপ্তার প্রতারক]
অন্যদিকে, ছাত্র মৃত্যুর প্রতিবাদে বুধবার বাংলা বন্ধ ডেকেছে বিজেপি৷ যার তীব্র বিরোধিতা করে ওইদিনই পথে নামছে তৃণমূল কংগ্রেস৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই জানিয়ে দিয়েছেন বাংলায় কোনও বন্ধ হবে না৷ রবিবার তৃণমূল ভবনে শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় সেই সুরেই বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলেছেন, ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বন্ধ ডেকে অশান্তি পাকাতে চাইছে বিজেপি। এর প্রতিবাদেই পথে নামব আমরা।’ বন্ধের বিরোধিতা করেছে সিপিএম ও কংগ্রেসও। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বলেছেন, শিক্ষক চাইতে গিয়ে গুলি খেয়েছে ছাত্ররা। তারাই লড়াই বুঝে নেবে। বিজেপির বন্ধ ডাকার কোনও নৈতিক অধিকার নেই। তবে বন্ধের দিন পরিস্থিতি যে উত্তপ্ত হবেই, তার প্রমাণ মিলেছে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের কথায়। বলেছেন, বিজেপির কতটা শক্তি আছে তা বন্ধের দিন দেখিয়ে দেবে৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.