দীপঙ্কর মণ্ডল: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সংঘাত আরও চওড়া হচ্ছে আচার্য তথা রাজ্যপালের। সোমবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্ট বৈঠকে যোগ দিতে চলেছেন জগদীপ ধনকড়। রাজভবনের তরফে চিঠি দিয়ে তা জানানো হয়েছে। পদাধিকার বলে তিনিই কোর্টের শীর্ষে রয়েছেন। মঙ্গলবার বিশেষ সমাবর্তন স্থগিত বলে ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। এর পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যপালের বক্তব্য, তাঁর অনুমতি ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।
ক্যাম্পাসে রাজ্যপালের উপস্থিতিতে অশান্তি হওয়ার আশঙ্কায়, তাঁকে আটকাতে বিশেষ সমাবর্তন স্থগিত রাখার ঘোষণা করেছিল কর্তৃপক্ষ। ঠিক ছিল, সোমবার কোর্টের বৈঠক করে বার্ষিক সমাবর্তনের সিদ্ধান্ত পাশ করিয়ে নেওয়া হবে। বার্ষিক সমাবর্তনে ছাত্রছাত্রীদের স্নাতক, স্নাতকোত্তর-সহ বিভিন্ন ডিগ্রি পাওয়ার কথা। রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য তথা রাজ্যপাল ক্ষমতাবলে কোর্টের শীর্ষে আছেন। রবিবার যাদবপুর কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে রাজভবন জানিয়েছে, দুপুর দু’টোর ওই বৈঠকে আচার্য থাকবেন।
যাদবপুরের সমাবর্তন নিয়ে টানাপোড়েন শুরু হয় শনিবার। কর্তৃপক্ষের তরফে রাজ্যপালকে সরাসরি চিঠি লিখে জানানো হয়েছে, ছাত্রছাত্রীদের একটি অংশের আপত্তিতে ২৪ ডিসেম্বর বিশেষ সমাবর্তন স্থগিত করা হচ্ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় মন্তব্য করেন, ‘রাজ্যের শিক্ষাক্ষেত্রে জরুরি অবস্থা চলছে’। বিশেষ সমাবর্তনে শঙ্খ ঘোষ-সহ ৪ জনকে সাম্মানিক ডক্টরেট প্রদান করার কথা ছিল। সেই চারটি মানপত্র প্রত্যাহার করে নেন রাজ্যপাল।
রবিবার বনহুগলিতে একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে রাজ্যপাল বলেন, ”তাঁর অনুমতি ছাড়া সমাবর্তন পিছোতে পারে না। আর যদি সেই অনুষ্ঠান হয়ও তাহলে ছাত্রছাত্রীদের পাওয়া শংসাপত্র নিয়ে পরে প্রশ্ন উঠতে পারে।” এরপরই রাজভবন থেকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কে জানিয়ে দেওয়া হয় যেআচার্য তথা রাজ্যপাল সোমবার কোর্টের বৈঠকে থাকবেন। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসুর প্রতিক্রিয়া, নিয়ম মেনেই আচার্যকে কোর্টের বৈঠকের কথা জানানো হয়েছিল।
এর আগে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে একদল পড়ুয়ার বাধার মুখে পড়েছিলেন বাবুল সুপ্রিয়। তাঁকে উদ্ধার করতে যাওয়া রাজ্যপালকে ঘিরেও বিক্ষোভ দেখানো হয়। এবারের সমাবর্তনে নিয়মে মেনেই আচার্য তথা রাজ্যপালের উপস্থিত থাকার কথা। কিন্তু পড়ুয়াদের একাংশ আগে থেকেই জানিয়েছে যে রাজ্যপালের আগমন তাঁরা মোটেই ভালভাবে গ্রহণ করবে না। তাই অশান্তি এড়াতে সমাবর্তনটাই স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের বৈঠক। তা পাশ করানোর অপেক্ষায় ছিলেন সকলে। কিন্তু সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্ট বৈঠক আচার্য জগদীপ ধনকড় নিজে উপস্থিত থাকলে তা কতটা সম্ভব হবে, তা নিয়ে ফের সংশয় তৈরি হয়েছে। আর এর ফলে এই সংঘাতের রাস্তা আরও চওড়া হল বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.