Advertisement
Advertisement
রাজ্যপালের চিঠি মুখ্যমন্ত্রীকে

মুখ্যমন্ত্রীকে ফের চার পাতার চিঠি রাজ্যপালের, ‘বিরক্তিকর’ মনে করছে তৃণমূল

চিঠিতে রেশন বণ্টন নিয়ে দুর্নীতি থেকে করোনায় মৃত্যুতে রাজনীতির অভিযোগ তুলেছেন তিনি।

Governor sends another letter to Bengal CM Mamata Banerjee
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:May 4, 2020 9:38 pm
  • Updated:May 4, 2020 9:38 pm  

ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: রেশন নিয়ে রাজনীতি, করোনা আক্রান্তের মৃত্যুর পর দেহ সরিয়ে ফেলার মত একাধিক বিস্ফোরক অভিযোগে রাজ্য সরকারকে বিদ্ধ করে ফের চিঠি রাজ্যপালের। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে সোমবার চার পাতার চিঠি পাঠালেন জগদীপ ধনকড়। তাতে সংঘাতের আবহ আরও উসকে উঠল বলেই মনে করা হচ্ছে। যদিও নিজের আগের চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী ইঙ্গিত দিয়েই রেখেছিলেন যে, রাজ্যপাল জবাবি চিঠি দিলে তার জবাব না দেওয়ার অধিকার তাঁর আছে। এদিন সেটাই বুঝিয়ে দিয়েছে শাসকদল তৃণমূল। বলা হয়েছে, বারবার এই চিঠি পাঠানোটা ‘বিরক্তিকর’ জায়গায় চলে যাচ্ছে। এই বিষয়টিকে তাই আর গুরুত্ব দিতেই নারাজ দল।

এদিনের চিঠির শুরুতেই রাজ্যপাল অভিযোগ করেছেন রেশন ব্যবস্থা নিয়ে রাজনীতি হচ্ছে বলে। চারিদিকে বিক্ষোভ অশান্তির কথাও উল্লেখ করেছেন। তিনি লিখেছেন, “রাজ্য ভয়ংকর পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে।” যদিও এদিন খাদ্য দপ্তরের নতুন করে তেমন কোনও অশান্তির অভিযোগ আসেনি বলে দাবি করা হয়েছে। খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক এর পিছনে মূলত প্রশাসনের কড়া ভূমিকার যুক্তি দিয়েছেন। বলেছেন, “যেখানেই দুর্নীতির অভিযোগ এসেছে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছি। কিন্তু সেই অভিযোগকে ঘিরে অশান্তি বাধাচ্ছে তো বিরোধীরা। দোকান বন্ধ করে দিতে হচ্ছে কিছুক্ষণের জন্য। এতে তো গ্রাহকের ক্ষতি হচ্ছে। তাঁরা সেটা বুঝে যাঁরা অশান্তি পাকাচ্ছে, তাঁদের নিজে থেকেই সরিয়ে দিচ্ছেন।”

Advertisement

[আরও পড়ুন: সংক্রমিত রাজ্যের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের এসকর্ট গাড়ির চালক, চিন্তায় কেন্দ্র]

রেশন বণ্টন নিয়ে দিনের শুরুতে একটি টুইট করেন রাজ্যপাল। তাঁর দাবি, তিনি হস্তক্ষেপ করার পরেই কেন্দ্রের পাঠানো চাল তুলতে বাধ্য হয়েছে রাজ্য খাদ্য দপ্তর। প্রতিক্রিয়ায় খাদ্যমন্ত্রীর জবাব, “কিছু বলার নেই। তিনি তবু এটুকু বললেন যে চাল দেওয়া হচ্ছে।” ‘প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনা’র আওতায় এপ্রিলের জন্য বরাদ্দ যে ৩ লক্ষ মেট্রিক টন চাল মাসের শেষে এসে পৌঁছেছে, তা মে মাস থেকেই দেওয়া শুরু করেছেন রেশন ডিলাররা। তবে মসুর ডাল এখনই দেওয়া হবে না। খাদ্যমন্ত্রী হিসেব দিয়ে বলেন, “চার হাজার মেট্রিক টন ডাল এসেছে। যেখানে সাড়ে ১৪ হাজার মেট্রিক টন আসার কথা ছিল শুধু এপ্রিল মাসেই। এই ডাল দিতে গেলে মাথাপিছু ১০০ গ্রাম করেও জুটবে না।”

রাজ্যপালের চিঠিতে উঠে এসেছে করোনা মৃতদেহ সরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ। পূর্ব কলকাতার ধাপায় করোনা আক্রান্তের মৃতদেহ সৎকার হচ্ছে। রাজ্যপাল বলেছেন, “ধাপার লজ্জার কথা আমরা কখনও ভুলতে পারব না। দীর্ঘদিন তা আমাদের তাড়া করবে।” পশ্চিমবঙ্গ ‘পুলিশ রাজ্যে’ পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন রাজ্যপাল। বলেছেন, সংবাদমাধ্যমে কেউ কিছু লিখলেই পুলিশ তাঁর দরজায় কড়া নাড়ছে। সাংবাদিকদের কণ্ঠস্বর চেপে দেওয়া হচ্ছে। একইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর চিঠিতে লেখা তাঁর ও রাজ্যপালের পদের গুরুত্বের কথা মনে করিয়ে বলেছেন, দুই পদই গুরুত্বপূর্ণ।

[আরও পড়ুন: ‘বাংলায় করোনায় মৃতের হার সর্বাধিক’, মুখ্যসচিবকে কড়া চিঠি কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের]

এর প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে রীতিমতো বিরক্তি প্রকাশ করেছেন শাসকদলের নেতারা। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, “বিষয়টা ক্রমশ বিরক্তিকর হয়ে উঠছে। আমরা এর প্রতিক্রিয়া দিতে চাই না। রাজ্যপাল তাঁর কাজ করতে থাকুন। আমরা আমাদের কাজ করতে থাকব।” জবাব দিয়েছেন লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ও। বলেছেন, “রাষ্ট্রপতি কি এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিচ্ছেন বসে বসে? এমন রাজ্যপাল দেখিনি। মুখ্যমন্ত্রী কাজ করছেন। আর উনি আক্রমণ করছেন। আমরা আর তাঁকে গুরুত্ব দিচ্ছি না।” অন্যদিকে এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন ডেরেক ও’ব্রায়েন, দীনেশ ত্রিবেদী-সহ সুদীপবাবু। ভিডিও কনফারেন্সে এই সম্মেলনে তারা মূলত বিজেপির বিরুদ্ধে আঙুল তুলেছেন করোনা নিয়ে রাজ্যের মানুষ ও কেন্দ্রীয় সরকারকে ভুল তথ্য দেওয়ার অভিযোগে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement