ছবি: প্রতীকী
দীপঙ্কর মণ্ডল: রাজ্য সরকারের সঙ্গে হাজারও বিরোধিতা। আলোচনার টেবিলে রাজ্যপালের একাধিকবার আহ্বানেও বিশেষ সাড়া মেলেনি নবান্নের তরফে। এসবের মাঝেই সাধারণতন্ত্র দিবসে জগদীপ ধনকড়ের আমন্ত্রণ রক্ষা করে মুখ্যমন্ত্রী গিয়েছিলেন রাজভবনে। বরফ কিছুটা গললেও, সুসম্পর্ক ততটা দানা বাঁধেনি বোধহয়। নইলে কি আর রাজ্য বাজেট অধিবেশনের আগে এমন ইঙ্গিতপূ্র্ণ মন্তব্য করেন রাজ্যপাল? সাধারণত অধিবেশনের উদ্বোধনী ভাষণে রাজ্য সরকারের তরফে লিখে দেওয়া বক্তব্যই পড়ে থাকেন সাংবিধানিক প্রধান। কিন্তু এবার কি তাতে ছেদ পড়বে? রাজভবনের লনে সংবাদ প্রতিদিনের প্রতিনিধির প্রশ্নের উত্তরে সেই ইঙ্গিতই দিলেন জগদীপ ধনকড়।
রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে আলোচনার জন্য দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসতে চাইছিলেন রাজ্যপাল। একাধিকবার রাজভবনে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ডেকেও পাঠিয়েছিলেন। শেষপর্যন্ত রবিবার দুপুরে রাজভবনে পৌঁছন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বেশ কিছুক্ষণ তাঁদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা হয়। রাজভবন থেকে বেরিয়ে শিক্ষামন্ত্রী তথা পরিষদীয় মন্ত্রী জানান, আগামী ৭ তারিখ থেকে রাজ্য বিধানসভায় বাজেট অধিবেশন শুরু হবে। তাতে যোগ দেওয়ার জন্য রাজ্যপালকে আমন্ত্র জানাতে এসেছিলেন। তিনি এও জানান যে আরও কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে তাঁদের মধ্যে।
ঠিক এখানে দাঁড়িয়েই উঠছে সেই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। রাজ্যপালের সঙ্গে এই মুহূর্তে রাজ্য সরকারের সম্পর্ক যেখানে দাঁড়িয়ে, সেই জায়গা থেকে প্রশাসনের ভূমিকার প্রশংসা করা কার্যত অসম্ভব ধনকড়ের পক্ষে। কিন্তু অধিবেশনের উদ্বোধনী ভাষণে রাজ্যের তরফে খসড়া করে দেওয়া বক্তব্যই পড়তে হয় রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানকে। সেই জায়গা থেকেই সংবাদ প্রতিদিনের প্রতিনিধি তাঁর কাছে এই প্রশ্ন রাখেন, “রাজ্যের সঙ্গে এত বিরোধিতা। অথচ অধিবেশনে সূচনা ভাষণে রাজ্যের লিখে দেওয়া ভাষণই পড়তে হবে। তা কীভাবে করবেন?” তাৎপর্যপূর্ণ উত্তর দিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। বললেন, “আমি দীর্ঘদিন পরিষদীয় মন্ত্রী ছিলাম। অপেক্ষা করুন, দেখুন কী হয়।”
ধনকড়ের এই মন্তব্য অত্যন্ত ইঙ্গিতবাহী। তাহলে কি চিরাচরিত প্রথা মেনে বাজেট অধিবেশনের সূচনা ভাষণে রাজ্য সরকারের বেঁধে দেওয়া বুলি আওড়াবেন না রাজ্যপাল? বদলে রাজ্য বিধানসভায় দাঁড়িয়ে সরাসরি রাজ্যের সমালোচনায় মুখর হবেন? ইঙ্গিত কিন্তু তেমনই। তাঁর বক্তব্যে বাজেট অধিবেশনের প্রথম দিন সুর কেটে যেতেই পারে অধিবেশনে। আরও চরমে উঠতে পারে রাজভবন-নবান্ন দ্বন্দ্ব।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.