ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: কথা দিয়েছিলেন আসবেন বলে। কথা রাখলেন। কালীপুজোর সন্ধেবেলা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে পা রাখলেন সস্ত্রীক রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। গাড়ি থেকে নামামাত্র মুখ্যমন্ত্রী নিজের গেটের বাইরে বেরিয়ে এসে তাঁদের আপ্যায়ণ করে নিয়ে গেলেন নিজের ঘর পর্যন্ত। এভাবেই রাজ্যপাল-মুখ্যমন্ত্রীর সংঘাতের চিরাচরিত আবহ কেটে তৈরি হল নজিরবিহীন এক অধ্যায়। যা বহুদিন মনে রাখার মতো।
মাত্র তিন মাস হল বাংলার সাংবিধানিক প্রধানের পদে এসেছেন জগদীপ ধনকড়। তারই মধ্যে একাধিক বিষয়ে তিনি রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছেন। গোড়া থেকেই রাজভবন-নবান্ন সংঘাত বেড়েছে। রাজ্য প্রশাসনের কাজকর্ম নিয়ে যেমন অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল, তেমনই তাঁর ভূমিকাতেও সমালোচনা করা হয়েছে প্রশাসনের তরফে। কখনও তা প্রকাশ্যে এসেছে, অন্তরালে রয়ে গিয়েছে বেশিরভাগটা। এই চাপা বিক্ষোভের আবহ স্বাভাবিক করতে নিজেই উদ্যোগ নিয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। তিনি নিজেই প্রথমে চিঠি লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রীকে। ভাইফোঁটায় মমতার বাড়ি যাওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন।
চিঠির উত্তরও এসেছে নির্ধারিত সময়ে। মুখ্যমন্ত্রী জবাবি চিঠিতে রাজ্যপালকে নিজের বাড়ির কালীপুজোয় আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। চিঠি পেয়ে খুশি রাজ্যপাল জানিয়েছিলেন যে তিনি সস্ত্রীক যাবেন তাঁর বাড়িতে। কালীপুজোর সন্ধেবেলা, সেই কথা তিনি রাখলেন। স্ত্রীকে নিয়ে সন্ধে ছ’টার একটু পরেই পৌঁছে গেলেন কালীঘাটের বাড়িতে। মুখ্যমন্ত্রী নিজের তাঁদের আপ্যায়ণ করলেন। নিজের বাড়ি ঘুরিয়ে দেখালেন, পুজোস্থলে নিয়ে গেলেন, নিজের হাতে প্রসাদ দিলেন রাজ্যপাল ও তাঁর স্ত্রীকে। দেখা গেল, স্বয়ং মমতার ঘরে বসেই বেশ কিছুক্ষণ কথা বললেন তাঁরা।
এদিন রাজ্যপাল যাবেন বলে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে অপরিসর রাস্তাটি ফাঁকাই রাখা হয়েছিল, যাতে গাড়ি ঢুকতে কোনও সমস্যা না হয়। এই একটি দিন, মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির দরজা সকলের জন্য খোলা। তাই অতিথি হিসেবে অনেকেই পৌঁছে যান হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটের বাড়িতে। সেই জনতার ভিড়ের মাঝেই এবছর বিশেষ অতিথি হয়ে প্রবেশ করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। সঙ্গে তাঁর স্ত্রী। সবমিলিয়ে তাই মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির এবছরের কালীপুজো বহু দিক থেকেই স্মরণীয় হয়ে রইল।
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.