সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে বেনজির ক্ষোভ প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী। নবান্নে তাঁর অভিযোগ বাদুড়িয়ার ঘটনা নিয়ে টেলিফোনে অপমান করেছেন কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। হুমকির সুরে কথা বলেছেন রাজ্যপাল। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, রাজ্যপাল যেন ব্লক সভাপতির ভাষায় কথা বলেছেন। তাঁর আচরণ পক্ষপাতমূলক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংযোজন কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর কথায় তিনি এতটাই আঘাত পেয়েছিলেন যে পদত্যাগ করতে চেয়েছিলেন। রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান লক্ষ্মণরেখা মানছেন না বলেও আক্ষেপ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই অভিযোগ নিয়ে বিজেপির জবাব প্রশাসন ব্যর্থ হওয়ায় মুখ খুলেছেন রাজ্যপাল। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী মনে করেন সংবাদমাধ্যমের সামনে এভাবে মুখ খোলা ঠিক হয়নি মুখ্যমন্ত্রীর।
বছর তিনেক হল তিনি পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালের দায়িত্বে। এই সময়ে বেশ কিছু ইস্যুতে কেশরীনাথ ত্রিপাঠী রাজ্য সরকারের সমালোচনা করেছেন। প্রশাসনের হয়ে কোনও মন্ত্রী তার জবাব দিয়েছে। তবে এবারের ঘটনা নজিরবিহীন। মঙ্গলবার নবান্নে বাদুড়িয়ার গোষ্ঠী সংঘর্ষ নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে বেনজিরভাবে রাজ্যপালকে আক্রমণ করেন মুখ্যমন্ত্রী। সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, বাদুড়িয়ার ঘটনা নিয়ে ফোন করে তাঁকে হুমকি দিয়েছেন রাজ্যপাল। সারা জীবনে এতটা তিনি অপমানিত হননি। মুখ্যমন্ত্রীর সংযোজন, বিজেপি ব্লক সভাপতির মতো কথা বলছেন। যে ভাষায় বিজেপির পক্ষ নিয়ে রাজ্যপাল তাঁকে অপমান করেছে তা নিন্দনীয়। মুখ্যমন্ত্রীর সাফ কথা, কারও তিনি চাকর নন। কোনও দলের দয়ায় ক্ষমতায় আসেননি। রাজ্যপালের মুখ থেকে এমন কথা শুনে পদ ছেড়ে দেওয়ার কথা মনে হয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তাঁর বিবেকে আঘাত লাগে। রাজ্যপালের আচরণ পুরোপুরি পক্ষপাতমূলক বলেও তোপ দাগেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর সংযোজন, রাজ্যপাল সাংবিধানিক পদ। রাজ্যপালের লক্ষ্মণরেখা মানা উচিত বলে পরোক্ষে বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই কথা মনে করিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান মানুষের রায়ে তিনি ক্ষমতায় এসেছেন। মানুষের কাছে তিনি দায়বদ্ধ।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন অভিযোগ করেন, নানা অছিলায় রাজ্যপালের কাছে নালিশ জানায় রাজ্য বিজেপির নেতারা। তারপরই সক্রিয় হয়ে ওঠেন রাজ্যপাল। মুখ্যমন্ত্রীর এই আক্রমণের জবাব দিয়েছে রাজ্য বিজেপি। বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, বাদুড়িয়ার ঘটনায় প্রশাসন ব্যর্থ। রাজ্যপাল এই নিয়ে তাঁর সাংবাধিনাকি দায়িত্ব পালন করেছেন। নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে বিষয়টি অন্যের ঘাড়ে মুখ্যমন্ত্রী চাপিয়েছেন বলে অভিযোগ দিলীপ ঘোষের। মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্য নিয়ে মুখ খুলেছেন অধীর চৌধুরী। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির মতে, সংবাদমাধ্যমের সামনে এমন কথা বলা উচিত হয়নি। যদি রাজ্যপালের কথা নিয়ে কোনও সমস্যা থাকে তা রাষ্ট্রপতিকে জানানোর প্রয়োজন ছিল। মুখ্যমন্ত্রীর পদমর্যাদা রক্ষা করা উচিত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.