ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: মহানগরীর লাইফ লাইন বিদ্যাপতি সেতু বা শিয়ালদহ উড়ালপুল নতুন করে গড়তে চায় রাজ্য। আরও উঁচু ও প্রশস্ত করে নতুন সেতু গড়ে তুলতে চায় নগরোন্নয়ন দপ্তর। এমনই চিন্তা ভাবনা রাজ্য প্রশাসনের ভরকেন্দ্র নবান্নের। নতুন সেতু নির্মাণ করবে পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তরের সংস্থা কেএমডিএ। নতুন সেতু তৈরির আগে গোটা শহরের যান চলাচল অব্যাহত রাখতে বিকল্প পথ বের করতে কোমরবেঁধে নেমেছে কলকাতা পুলিশ। পাশাপাশি উড়ালপুলের নিচে থাকা হকারদের পুনর্বাসন করেই প্রকল্প শুরু করবে নগরোন্নয়ন দপ্তর।
[ফেতাই বিপদ কাটতেই শীতকে শায়েস্তা করতে আসছে ‘এল নিনো’]
নগরোন্নয়ন দপ্তর সূত্রে খবর, ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো চালু হলে শহরকে আরও গতিশীল করতে এবং যানবাহনের গতি আরও বাড়াতে হবে। কারণ আরও বেশি যানবাহন ঢুকবে শহরে। তাই শিয়ালদহ উড়ালপুল বা বিদ্যাপতি সেতুর সংস্কার জরুরি হয়ে পড়েছে। দ্বিতীয়ত, ১৯৭৮-এ চালু হওয়া এই সেতুর বিভিন্ন অংশে ভারী যানবাহন চলাচলের ফলে এমন ফাটল দেখা দিয়েছে যা মেরামত করে তা বেশিদিন ঠেকানো যাবে না। তাই অবিলম্বে একটি নতুন সেতু মহানগরকে উপহার দিতে চায় রাজ্য সরকার। নগরোন্নয়ন দপ্তরের প্রধান সচিব সুব্রত গুপ্ত জানিয়েছেন, “শিয়ালদহ উড়ালপুলকে নতুন করে তৈরি করতে একটি সংস্থাকে দিয়ে সমীক্ষা (হেল্থ অডিট) করানো হচ্ছে। এই কাজ সম্পূর্ণ হলেই নতুন সেতু তৈরির কাজ শুরু হবে।” তিনি আরও জানিয়েছেন, “সরকারি সংস্থা রাইটস যে সমীক্ষা করেছিল সেই রিপোর্টে কিছু ধোঁয়াশা দেখা দিয়েছে তাই নতুন সংস্থা সমীক্ষার কাজ করবে।” নতুন উড়ালপুল সম্পর্কে ডিসি ট্রাফিক সন্তোষ পান্ডে জানিয়েছেন,“শিয়ালদহ স্টেশনকে কেন্দ্র করে যান চলাচলের বিকল্প পথেরও সমীক্ষা হয়েছে।”
নগরোন্নয়ন দপ্তরের সমীক্ষা বলছে, প্রস্তাবিত নতুন সেতু আরও উঁচু করতে হবে। আরও চওড়াও হবে। সেজন্য প্রয়োজনে রেলের সহযোগিতা চাওয়া হবে। নগরোন্নয়ন ও পূর্ত দপ্তরের আধিকারিকদের বক্তব্য, শিয়ালদহ স্টেশনকে কেন্দ্র করে আগামী বছরই সল্টলেকের সেক্টর ফাইভ থেকে হাওড়া স্টেশন পর্যন্ত ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো চালু হবে। আর ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রো চালু হলে শহরে যানবাহনের চাপ কমাতে শিয়ালদহ উড়ালপুলের নিচ দিয়েও যান চলাচল করাতে হবে। তাই প্রস্তাবিত নতুন উড়ালপুলের নকশা সেইভাবেই তৈরি করতে হবে। নগরোন্নয়ন দপ্তরের সাম্প্রতিক সমীক্ষা বলছে, শহরের বাকি সব সেতুর থেকে শিয়ালদহ উড়ালপুলের উচ্চতা কম। কারণ ধীরগতির ট্রাম যাতে সহজেই সেতুতে উঠতে পারে তারজন্যই এমনভাবে উড়ালপুল তৈরি করেছিল কেআইটি (কলকাতা ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্ট)।
[কর্পোরেট ধাঁচে মোবাইলেই মিলবে প্যাথলজি রিপোর্ট, কীভাবে জানেন?]
নগরোন্নয়ন দপ্তরের বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, প্রস্তাবিত নতুন উড়ালপুলের একটি দিক শিয়ালদা স্টেশন থেকে রাজাবাজার পর্যন্ত প্রশস্ত করা হলে উত্তর ও দক্ষিণ শহরতলির ট্রেনযাত্রীরা সহজেই বাসে করে তাঁদের গন্তব্যে পৌঁছতে পারেন। ফলে সময় কমবে। যানজটও কম হবে। প্রাথমিকভাবে ঠিক হয়েছে চার লেনের সেতু হবে। শিয়ালদহ উড়ালপুলের পুননির্মাণের পাশাপাশি শহরের গতি আরও বাড়াতে রাজাবাজারের সংযোগ থেকে এজেসি বোস রোড পর্যন্ত আরও একটি উড়ালপুল তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে নগরোন্নয়ন দপ্তরের। পাশাপাশি নতুন উড়ালপুল চালুর আগেই শহরের উত্তর দিক থেকে আসা যানবাহনকে কীভাবে বিভিন্ন দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হবে তাও যৌথভাবে ঠিক করছে কলকাতা পুলিশ ও নগরোন্নয়ন দপ্তর। এক শীর্ষকর্তার বক্তব্য, যান চলাচলের বিকল্প পথ তৈরি হলেই প্রকল্প শুরু হবে। তবে সবচাই চূড়ান্ত রিপোর্টের উপর নির্ভর করছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.