অর্ণব আইচ: কলকাতা থেকে বিপুল পরিমাণ সোনা উদ্ধার করল রাজস্ব দপ্তরের আধিকারিকেরা। চলতি মাসের ২৫, ২৬ ও ২৮ তারিখ শহরের একাধিক জায়গায় হানা দেয় তদন্তকারীরা। সেখান থেকেই মোট ১৬.৩৪ কিলোগ্রাম সোনা উদ্ধার হয়েছে। যার আনুমানিক বাজারমূল্য সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার করা হয়েছে মোট ৬ জনকে।
জানা যায়, ২৫ মার্চ মহেশ রাই ও রেজিনা ফারচিনসুঙ্গি নামে দুজন কলকাতার সাদার স্ট্রিটের একটি হোটেলে যান। গোপন সূত্রে খবরের ভিত্তিতে, সেদিনই ওই হোটেলে হানা দেয় রাজস্ব দপ্তরের আধিকারিকেরা। সেখান থেকে প্রায় পাঁচ কেজি বিদেশি সোনা উদ্ধার হয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য দেড় কোটি টাকার বেশি। হোটেল থেকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে ২ অভিযুক্তকে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গিয়েছে, মণিপুরের ইন্দো-মায়ানমার সীমান্ত হয়ে ভারতে প্রবেশ করেছিল তারা।
এরপর ২৬ মার্চ গোপন তথ্যের ভিত্তিতে সল্টলেকের একটি হোটেলে হানা দেয় রাজস্ব দপ্তরের আধিকারিকেরা। সেখানে ইশাক লালপাখুলা নামে একজনে গ্রেপ্তার করে করা হয়। তার থেকে উদ্ধার হয়েছে প্রায় সাড়ে তিন কেজি সোনা। যার আনুমানিক বাজারমূল্য ১ কোটি ৯ লক্ষ টাকা। জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত এই ব্যক্তিও ইন্দো-মায়ানমার সীমান্ত হয়ে ভারতে প্রবেশ করেছিল।
রাজস্ব দপ্তরের আধিকারিকেরা তৃতীয় অভিযানটি চালায় বড়বাজার এলাকায়। সেখানে একটি হোটেলে সন্দেহভাজন এক ব্যক্তির ব্যাগ ও ভল্টে তল্লাশি চালায় তদন্তকারীরা। সেখান থেকে উদ্ধার হয়ে প্রচুর পরিমাণ সোনা। জানা গিয়েছে, তদন্তকারী আধিকারিকেরা তল্লাশি চালানোর সময়েই এক যুবক ওই ঘরে ঢোকে, তার কাছ থেকেও উদ্ধার হয়েছে প্রচুর পরিমাণ সোনা। জানা গিয়েছে, ওই হোটেল থেকে প্রায় সাড়ে আট কেজি সোনা উদ্ধার হয়েছে। যার আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ৩ কোটি টাকা। সেই সঙ্গে উদ্ধার হয়েছে ভারতীয় টাকায় প্রায় ৭৫ লক্ষ টাকা। হোটেল থেকে রাজু দত্ত, চিরঞ্জিৎ দত্ত ও সুমন সাহা নামে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, বাংলাদেশ থেকে ভারতে নিয়ে আসা হয়েছিল ওই সোনা।
সূত্রের খবর, এই অভিযানে উদ্ধার হওয়া সোনা-সহ চলতি আর্থিক বছরে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রায় ৪৩১ কেজি সোনা ও সোনার গয়না বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। যার বাজারমূল্য ১৩৫ কোটি টাকা। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বাংলাদেশ, মায়ানমার, ভুটান থেকে পাচারের উদ্দেশ্যে ভারতে আনা হয়েছিল সোনা। জানা গিয়েছে, এই ধরনের পাচার রুখতে কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে প্রশাসন। সীমান্তে বাড়ানো হচ্ছে নিরাপত্তা। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে তল্লাশির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পুলিশ প্রশাসনের এই কার্যক্রমে সাধারণ মানুষকে নিয়োজিত করার উদ্যোগ নিচ্ছে প্রশাসন। কেউ পাচারকারীর হদিশ দিতে পারলে তাঁকে দেওয়া হবে আর্থিক পুরস্কার , যা সম্পূর্ণভাবে করমুক্ত। এই পদ্ধতিতে পাচার রোধ কিছুটা হলেও কমবে বলে আশাবাদী প্রশাসন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.