সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জি ডি বিড়লা কাণ্ডে এবার সিবিআই তদন্তের দাবি জানাল নির্যাতিতার বাবা। দুই অভিযুক্তের শাস্তি ও শিশুকন্যার উপর অত্যাচারের ন্যায়বিচার চেয়ে শুক্রবার কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হলেন তিনি।
[ টোটোয় ধাক্কায় গুরুতর জখম শিশু, ৪ হাসপাতাল ঘুরে বেঘোরে মৃত্যু ]
বৃহস্পতিবারই এই ইস্যুতে মিছিল করেন অভিভাবকরা। তাঁদের দাবি ছিল, জি ডি বিড়লা কাণ্ডে অপরাধীদের আড়াল করা হচ্ছে। সুবিচার পাচ্ছে না নির্যাতিতা। কিছুদিন আগে স্কুলের মধ্যেই হেনস্তার শিকার হয় ওই দুধের শিশু। অভিযোগ, চকোলেটের লোভ দেখিয়ে তাকে বাথরুমে নিয়ে যায় দুই পিটি শিক্ষক। তারপর প্যান্ট খুলে তার গোপনাঙ্গে হাত দেয় দুই অভিযুক্ত। তাকে পর্ন ভিডিও দেখানো হয় বলেও অভিযোগ ওঠে। শিক্ষকদের ছবি দেখে তাদের শনাক্তও করে বাচ্চাটি। স্কুলের গাফিলতির অভিযোগে বিক্ষোভে সোচ্চার হন অভিভাবকরা। তড়িঘড়ি পদক্ষেপ নেয় পুলিশও। গ্রেপ্তার করা হয় ওই দুই শিক্ষককে। কিন্তু স্কুল চত্বরে সিসিটিভি না থাকায় শিক্ষকদের দোষ আড়ালেই চলে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন অভিভাবকরা। শিক্ষকদের আড়াল করতে উদ্যত হন অধ্যক্ষাও। তাঁকে ডেকেও জেরা করে পুলিশ। কিন্তু তাঁর বক্তব্যে বেশ কিছু অসঙ্গতি ধরা পড়ে। তাঁর অপসারণের দাবিতে ফের একদফা বিক্ষোভ চালান অভিভাবকরা। শেষমেশ তাঁদের সঙ্গে বৈঠকের পর অধ্যক্ষাকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নয় জি ডি বিড়লা কর্তৃপক্ষ। তাতে সাময়িক ক্ষোভ প্রশমিত হয়। চালু হয় স্কুল। কিন্তু তারপর থেকে এই ঘটনায় আর কোনও উত্থানপতন নেই। এদিকে শিশুটির দ্বিতীয়বার মেডিক্যাল টেস্টের রিপোর্ট নিয়েও বেশ কিছু ধন্দ জাগে। প্রথমবাররে পরীক্ষায় চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন যে, যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে শিশুটি। তার যৌনাঙ্গে ব্যথাও ছিল। কিন্তু বেশ কিছুদিন পরের পরীক্ষায় আর কোনওরকম ক্ষত পাওয়া যায়নি বলেই জানা যাচ্ছিল। ফলে খানিকটা সংশয় দেখা দিয়েছিল।
GD Birla school student molestation case: Victim’s father moves Calcutta High Court demanding CBI probe into the matter
— ANI (@ANI) December 22, 2017
এই প্রেক্ষিতেই পুরো বিষয়টি চাপা পড়ে যাওয়ার অভিযোগ ওঠে। শিশুটি সুবিচার পাচ্ছে না এই দাবিতেই গতকাল মিছিল করেন অভিভাবকরা। সংবাদসংস্থা এএনআই-এর খবর মোতাবেক, আজ এই ইস্যুতে এবার সিবিআই তদন্তের দাবি জানাচ্ছে নির্যাতিতার বাবা। শুক্রবারই কলকাতা হাই কোর্টে এই আরজি জানাতে চলেছেন তিনি। প্রসঙ্গত, রায়ান ইন্ট্যারন্যাশনাল স্কুলে প্রদ্যুম্ন ঠাকুর হত্যাকাণ্ডেও পুলিশের তদন্ত নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন না তার অভিভাবকরা। সিবিআই তদন্তের আরজি জানান তাঁরা। তারপরই অভিযুক্ত কন্ডাক্টর নির্দোষ প্রমাণিত হন। সামনে আসে প্রভাবশালীর পুত্রের কুকীর্তি। জানা যায়, কন্ডাক্টর নয়, প্রদ্যুম্নকে খুন করেছে একাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রটিই। সম্প্রতি তাকে প্রাপ্তবয়স্ক ধরেই বিচারের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এবার জি ডি বিড়লা কাণ্ডেও তদন্ত যাতে নিখুঁত হয়, তাই সিবিআইয়ের উপরই ভরসা নির্যাতিতার অভিভাবকের।
[ খুন হয়েছে ‘পুষি’, বিচার চেয়ে থানায় বৃদ্ধ ]
শুক্রবারই বিচারপতি দেবাংশু বসাক এই বিষয়ে তদন্তের অগ্রগতির রিপোর্ট তলব করেছে। আগামী ১৬ জানুয়ারীর মধ্যে এই রিপোর্ট দিতে হবে। তদন্ত যেভাবে চলছে তা চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। ঘটনায় যারা যারা সক্ষ্য দিতে ইচ্ছুক তাঁদের সাক্ষ্য নেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্কুলের অপসারিত অধ্যাপিকা ও বাকিদের গোপন জবানবন্দিও তাড়াতাড়ি নেওয়ার নির্দেশ আদালতের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.