শুভজিৎ মণ্ডল ও মণিশংকর চৌধুরি: ‘সংবিধান এবং গণতন্ত্র বাঁচাতে’ ধর্মতলার মেট্রো চ্যানেলে ধরনায় বসেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর ‘সেভ ইন্ডিয়া’র ডাকে সাড়া দিয়েছেন দেশের অধিকাংশ বিরোধী দলের নেতানেত্রীরা। মমতার ‘সত্যাগ্রহে’ শামিল হচ্ছেন তৃণমূল সমর্থকরা। শয়ে শয়ে মানুষের ভিড়ে ধরনা মঞ্চে নজর কাড়লেন ‘গান্ধীজি’। ভাল করে ধরনা মঞ্চের উলটো দিকটা লক্ষ্য করলেই দেখা যাবে দাঁড়িয়ে আছেন মূর্তিমান ‘গান্ধী’। এক নজরে দেখলে মূর্তি বলে ভ্রম হতে পারে। কিন্তু, একটু ভালভাবে লক্ষ্য করলেই বোঝা যাবে, কোনও প্রস্তর মূর্তি নয়, ইনি জলজ্যান্ত শিরা-উপশিরা যুক্ত মানুষ।
নাম অশোক কুমার জেনা। থাকেন ওড়িশার জলেশ্বরে। বর্তমানে উনি মমতার ধরনা মঞ্চের উলটো দিকে গান্ধীজির রূপে মূর্তিমান হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। মমতার সত্যাগ্রহের সমর্থনে। সুদূর ওড়িশা থেকে ছুটে এসেছেন। আজ তাঁর অবস্থান মমতার ধরনা মঞ্চের সামনে। ধরনা মঞ্চের ভিড় মাঝে মাঝেই ঝুঁকে যাচ্ছে তাঁর দিকে। তবে শুধু মমতার ডাকে এখানে আসা নয়, গোটা দেশেই সত্য এবং ন্যায়ের শাসন প্রতিষ্ঠা করাই লক্ষ্য অশোকের। সরকারের ‘একগুয়েমি এবং স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে’ সরব হয়েই প্রতিবাদের এই অভিনব ধরন গান্ধীজির ভক্তের। বাংলায় কেন এসেছেন? জিজ্ঞেস করলে অশোকবাবু বললেন, ” আমি ওড়িশা থেকে এসেছি। মমতা সংবিধান বাঁচানোর জন্য আন্দোলন করছে শুনেই তাঁকে সমর্থন করতে এসেছি। রাজনীতির টানে নয়, এসেছি সত্যের সমর্থনে।” তবে, আফশোস একটাই, বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার সাধ পূরণ হল না। ধরনা মঞ্চের বাইরেই দাঁড়িয়ে থাকতে হল। বললেন, “মমতাদির সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছে ছিল, কিন্তু হল না।কী আর করা যাবে!”
তবে, এই প্রথম নয়। অশোক বলছেন, তিনি কোনও রাজনৈতিক দলের সমর্থক নন। গান্ধীজির আদর্শ আজ লুন্ঠিত। দেশে ধর্মনিরপেক্ষতা বিপন্ন। তাই গোটা দেশেরই বিভিন্ন জায়গায় তিনি এভাবে নীরবে মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে থেকে প্রতিবাদ করবেন। ইতিমধ্যেই ভুবনেশ্বর এবং বালেশ্বরে তিনি ধরনা দিয়েছেন। এখান থেকে এরপর যাবেন গুজরাট। পোরবন্দরে, বাপুজির জন্মস্থানে। সবরমতী আশ্রমেও যাবেন। তারপর দেশের বাকি রাজ্যের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়বেন গান্ধীজি। উদ্দেশ্য একটাই, যদি এই নীরব প্রতিবাদে সরকার তথা প্রশাসনের হুঁশ ফেরে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.