সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একসময় লক্ষ্মণ শেঠকে ‘অত্যাচারী’, এমনকী ‘রক্তপিপাসু’ বলেও কটাক্ষ করতেন কংগ্রেস কর্মীরা। কিন্তু রাজনীতির খেলায় আজ তিনি সেই কংগ্রেস শিবিরেরই হাত ধরলেন।বৃহস্পতিবার বিধানভবনে প্রদেশ সভাপতি সোমেন মিত্রর হাত ধরে কংগ্রেসে নাম লেখান তমলুকের প্রাক্তন সাংসদ। দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক শত্রু দলে যোগদান করায় স্বাভাবিকভাবেই, দলের নিচুতলার কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে। সেই ক্ষোভ আঁচ করতে পেরেই, লক্ষ্মণকে যোগদান করানোর সব দায় দিল্লির উপর ঠেলে দিলেন প্রদেশ সভাপতি সোমেন মিত্র।
দলেরই একাংশ তিনবারের সাংসদকে গ্রহণ করা নিয়ে সংশয়ে ছিলেন। এমনকী বিক্ষোভ প্রকাশ্যেই এসেছিল। কিন্তু, সেসবে পাত্তা দিল না হাইকম্যান্ড। সোমেন মিত্র জানালেন ২৫ মার্চ প্রার্থী নির্ধারণ করা নিয়ে চূড়ান্ত বৈঠকের সময় রাহুল গান্ধীই তাঁকে নির্দেশ দিয়েছেন লক্ষ্মণবাবুকে দলে নিতে। এমনকী, তমলুক কেন্দ্র থেকে যে প্রাক্তন সাংসদই কংগ্রেসের টিকিটে লড়বেন তাও নাকি ঠিক করে দেন কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি। মোট কথা সোমেনবাবু বোঝাতে চাইলেন, লক্ষ্ণণকে দলে নেওয়ার কোনও দায়ই প্রদেশ নেতৃত্বের নেই। যাই হোক, সাংবাদিকদের রাহুলের সিদ্ধান্ত জানিয়ে লক্ষ্মণবাবুকে নিজেই স্বাগত জানান সোমেন মিত্র। তাঁর সঙ্গে তাঁর গুটিকয়েক সমর্থকও কংগ্রেসে যোগদান করেন।
কয়েক দশক ধরে মেদিনীপুরে দাপটের সঙ্গে রাজনীতি করেছেন লক্ষ্মণ। কিন্তু. ২০১৪ সালে পার্টি থেকে লক্ষ্মণ শেঠকে বহিষ্কার করে সিপিএম। তারপর ২০১৬ সালে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি। সেখানেও খুব একটা সুবিধা করে উঠতে পারেননি তিনি। ২০১৮ শেষ হওয়ার আগেই কেন্দ্রের শাসকদলের সঙ্গেও সম্পর্ক ছিন্ন হয় তাঁর। একটা সময় ভারত নির্মাণ পার্টি গঠন করেছিলেন তিনি। প্রকাশ্যে তৃণমূলে যাওয়ার ইচ্ছাও প্রকাশ করেন লক্ষ্মণবাবু। কিন্তু নন্দীগ্রামের ঘটনায় অভিযোগের আঙুল ওঠা এই নেতাকে কোনওভাবেই দলে নিতে আগ্রহ দেখায়নি তৃণমূল। প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর কংগ্রেসের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন প্রাক্তন সাংসদ। বেশ কয়েক দফা আলোচনার পর অবশেষে লক্ষ্ণণ শেঠের যোগদানপর্ব মিটল। বলা ভাল, ফের রাজনৈতিকভাবে একটা অবলম্বন ফিরে পেলেন লক্ষ্মণ শেঠ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.