বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত: ব্রিগেডের আগে শেষ চেষ্টা। তাতেও ব্যর্থ আলিমুদ্দিন। বিবাদ নিয়েই মঞ্চে অধীরের হাত ধরবেন ভাইজান। আবার বক্তা তালিকাতেও থাকছে না কোনও চমক। তাই মুখ বাঁচাতে শেষ ভরসা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। তাও অনিশ্চিত। তাই রাতেই লিখিতবার্তা পাঠিয়েছেন। কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করতে লেখেন, “মাঠে ময়দানে কর্মীরা লড়াই করছেন। আর আমি গৃহবন্দি হয়ে রয়েছি। এত বড় সমাবেশ হবে অথচ আমি যেতে পারছি না। এটা আমার কাছে যন্ত্রনার।”
ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হয়েছে। প্রচারে ঝাঁপিয়ে পড়েছে রাজ্যের ও কেন্দ্রের দুই শাসকদল। ব্রিগেডের মঞ্চ থেকে নির্বাচনে ঝাঁপিয়ে পড়ার পরিকল্পনা নেয় জোটশিবিরও। সমাবেশ থেকে বেশকিছু চমক দেওয়ার পরিকল্পনা নেয় আলিমুদ্দিন ও বিধানভবন। জোট শিবিরের ঐক্যের চিত্রটা তুলে ধরাই ছিল প্রধান চ্যালেঞ্জ। পাশাপাশি, ব্রিগেডে কয়েক লক্ষাধিক মানুষের সামনে সর্বভারতীয়স্তরের বেশ কয়েকজন নেতাকে হাজির করে চমক দেওয়ার চিন্তাভাবনা চালাচ্ছিল বাম ও কংগ্রেস নেতৃত্ব। যুবসমাজ ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভোটারদের আকর্ষণ করতে চলছিল বিভিন্ন পরিকল্পনা। দিনশেষে সব পরিকল্পনা ভেস্তে যাওয়ার জোগার।
রবিবার ব্রিগেডের মঞ্চে বাম, কংগ্রেস ও ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের নেতারা হাত ধরাধরি করে দাঁড়ালেও ঐক্যের ফাটল থেকেই যাবে। শনিবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত দফায় দফায় কথা বলেন তিনপক্ষের শীর্ষ নেতৃত্ব। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বৈঠক করেও আসন সমঝোতা নিয়ে চলতে থাকা বিবাদ মেটাতে ব্যর্থ হল আলিমুদ্দিন। এদিন আলিমুদ্দিনে বৈঠকে বসে সিপিএম ও কংগ্রেস নেতৃত্ব। আব্বাসউদ্দিন সিদ্দিকির সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু কংগ্রেস ও আইএসএফ দু’পক্ষই নিজেদের অবস্থানে অনড় থাকায় জোটপ্রক্রিয়া অসম্পূর্ণ থেকে যায় বলে খবর। ব্রিগেড সমাবেশের পরে ফের কংগ্রেস ও ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের মধ্যেকার সমস্যা সমাধানের চেষ্টা হবে বলে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়। দুই দলের দ্বন্দ্ব যে স্পষ্ট এদিন স্বীকার করে নিয়েছেন অধীর চৌধুরী ও মহম্মদ সেলিমের মত জোটের শীর্ষনেতৃত্ব। সমাবেশের পরে ফের বৈঠক হবে বলে জানান তাঁরা।
চমক না থাকলেও ব্রিগেডের বক্তা তালিকা চূড়ান্ত করে জোট শিবির। সভাপতিত্ব করবেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। সিপিএমের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখার কথা সীতারাম ইয়েচুরি, সূর্যকান্ত মিশ্র ও সংখ্যালঘু নেতা মহম্মদ সেলিমের। কংগ্রেসের পক্ষ বক্তা তালিকায় রয়েছেন ছত্রিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল ও অধীর চৌধুরীর। ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট জোটে যোগ দেওয়ায় তাঁদের পক্ষে বক্তব্য রাখবেন পীরজাদা আব্বাসউদ্দিন সিদ্দিকি। এছাড়াও বাম শরিকদের পক্ষ থেকে একজন করে বক্তব্য রাখার সুযোগ পাবেন। তবে আদিবাসী সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি হিসেবে কে বক্তব্য রাখবেন রাত পর্যন্ত তা নিয়ে দ্বিধায় আলিমুদ্দিন।
আগের থেকে কিছুটা হলেও সুস্থ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। কিন্তু বাড়ি থেকে বেরোনোর ওপরে চিকিৎসকদের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। শেষ মুহূর্তে যদি অনুমতি পাওয়া যায় তবে কিছুক্ষণের জন্য হলেও নাকি অক্সিজেনের নল নিয়ে কর্মীদের অক্সিজেন দিতে আসতে পারেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। সম্ভব না হলে লিখিতবার্তই পড়ে শোনানোর পরিকল্পনা নিয়েছে আলিমুদ্দিন। এই পরিস্থিতিতে কপালে চিন্তার ভাঁজ কমছে না কমরেডকুলের ভোট ম্যানেজারদের। ব্রিগেডের ময়দানে বিপুল সংখ্যক যুবকদের হাজির করা হলেও মঞ্চে তাদের প্রতিনিধি কে হবেন চিন্তায় জোট শিবিরের নেতারা। উল্লেখ্য, ব্রিগেডে উপস্থিত থাকবেন পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায় ও অনীক দত্ত এবং অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.