ক্ষিরোদ ভট্টাচার্য: আগের চেয়ে অনেকটাই ভাল আছেন বুদ্ধবাবু! চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন। চোখ মেলেছেন। এমনকী. বার কয়েক কথাও বলেছেন বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর। ফুসফুসের একাংশে সংক্রমণ থাকলেও শরীরের অন্যান্য অঙ্গ সক্রিয় বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের। তবে এখনও বাইপ্যাপের সাহায্যে শ্বাসপ্রশ্বাস নিচ্ছেন তিনি।
ফুসফুসে সংক্রমণ, নিউমোনিয়া এবং রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাওয়ায় শনিবার সকালে আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। সঙ্গে সঙ্গে পরিবারর তরফে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে যোগাযোগ করা হয়। খবর পাওয়া মাত্র সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম-সহ অন্যান্য নেতারা বুদ্ধবাবুর বাড়িতে চলে যান। ছিলেন চিকিৎসক উৎপল বন্দ্যোপাধ্যায়ও। শারীরিক পরীক্ষার পরই তিনি হাসপাতালে ভরতির পরামর্শ দেন। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য আচ্ছন্ন অবস্থায় থাকায় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে সুবিধা হয়েছিল। অ্য়াম্বুল্যান্সে বাইপ্যাপ না থাকায় শ্বাসকষ্ট বেড়েছিল বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের। ফলে গ্রিন করিডোর করে অ্যাম্বুল্যান্সে দুজন চিকিৎসক ও একজন প্যারা মেডিক্যাল স্টাফকে দিয়ে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। রক্ত পরীক্ষা করে দেখা যায় অক্সিজেনের মাত্রা শতকরা ৬৯-তে নেমে গিয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে কার্ডিও থোরাসিক ভাসকুলার সার্জন কৌশিক চক্রবর্তী, উৎপল বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ ৫ জনের মেডিক্যাল টিম তৈরি করে শুরু হয় লড়াই।
একইসঙ্গে সিপ্য়াপ ও সিপিআর চলতে থাকে। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। ইতিমধ্য়ে হাসপাতালে চলে এসেছিলেন তাঁর স্ত্রী মীরা ভট্টাচার্য ও সন্তান সুচেতন। সন্ধে সাড়ে সাতটা নাগাদ তাঁরা হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যায়। যা দেখে বোঝা যায়, বুদ্ধবাবু আগের চেয়ে ভাল আছেন। এরপর প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক উৎপল বন্দ্যোপাধ্যায় ফোনে ‘সংবাদ প্রতিদিন’কে জানান, “যে বিপদ ছিল তা আপাতত কেটে গিয়েছে। রক্তে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ কমেছে। রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা শতকরা ৯০-এর কাছাকাছি। পটাশিয়ামের মাত্রা বেড়েছে। কেটেছে আচ্ছন্নভাব। চোখ মেলে তাকিয়েছেন। বার কয়েক কথাও বলেছেন।”
তবে লোয়ার রেসপিরেটরি ট্র্যাকে সংক্রমণ রয়েছে। তাই ফের রক্তপরীক্ষা করতে দেওয়া হয়েছে। রক্তরসের রিপোর্টে জানা গিয়েছে, বাই ল্যাটারাল নিউমোনিয়া অর্থাৎ ফুসফুসের দু’দিকেই সংক্রমণ রয়েছে। ফলে আপাতত ইনভেসিভ ভেন্টিলেশনে রাখা হবে। সমস্ত রিপোর্ট পেলে অ্যান্টি বায়োটিক বদল করা হবে। নিউমোনিয়া সংক্রমণ কমাতে নতুন ওষুধ দেওয়া হবে। আপাতত এই চিকিৎসা পদ্ধতি সফল হলে খুব তাড়াতাড়ি বুদ্ধবাবু বাড়ি ফিরে যাবেন বলেই আশা চিকিৎসক মহলের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.