অর্ণব আইচ: মানিক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক তাপস মণ্ডল। ইডি দপ্তরে হাজিরার আগে সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে সাফ জানালেন, বিএড, ডিএলএড কলেজে অফলাইন ভরতির টাকা যেত প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি তথা তৃণমূল বিধায়কের কাছে। বুধবার বেলা ১১টা নাগাদ প্রয়োজনীয় নথি নিয়ে সিজিও কমপ্লেক্সে হাজির হন মানিক ঘনিষ্ঠ তাপস। ইডি দপ্তরে ঢোকার আগেই বিস্ফোরক দাবি করলেন তিনি।
এদিন ইডি দপ্তরে ঢোকার আগে সাংবাদিকরা ঘিরে ধরেন তাপস মণ্ডলকে। জানতে চান, মানিক ভট্টাচার্যের কাছে যে টাকা যেত, সে বিষয় তিনি কিছু জানেন কিনা? জবাবে মানিক-ঘনিষ্ঠ তাপস মণ্ডল বলেন, “অফলাইনে ভরতির জন্য টাকা তো দিতেই হত। ছাত্র পিছু ৫ হাজার টাকা। উনি অফিসে (মহিষবাথান) লোক পাঠাতেন। ফাইল যেত। টাকা যেত।” তখন ফের প্রশ্ন করা হয়, “কে লোক পাঠাতেন?” তাপস মণ্ডলের জবাব, “মানিকবাবু।” পরের প্রশ্ন, “তাহলে কি মানিকবাবুই টাকা নিতেন?” জবাব আসে, “মানিকবাবু যখন লোক পাঠাতেন, তাহলে উনিই টাকা নিতেন।” জবাব দিতে দিতে ততক্ষণে লিফটের ভিতর ঢুকে গিয়েছেন তাপস মণ্ডল। তাও প্রশ্ন তাঁর পিছু ছাড়েনি। উড়ে আসে প্রশ্ন, ”নগদে যেত কাটমানি?” লিফটের ভিতর থেকে উত্তর আসে, ”হ্যাঁ।” তাপস মণ্ডল এদিন স্পষ্ট করে দেন এতদিন যাবৎ ইডি যা অভিযোগ করেছে, তা অনেকাংশেই সত্যি।
এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বারবার অভিযোগ করেছেন, বিএড, ডিএলএড কলেজে অফলাইনে ভরতির জন্য ছাত্রপিছু ৫ হাজার টাকা নিতেন মানিক ভট্টাচার্য। ‘কাটমানি’ বাবদ তাঁর ছেলে শৌভিক ভট্টাচার্যের দ্বিতীয় অ্যাকাউন্টে ঢুকেছিল প্রায় আড়াই কোটি টাকা। টাকা দিয়েছিলেন ৪৯ হাজার ৪০০ জন। সে কথাই এদিন কার্যত স্বীকার করে নিলেন তাপস মণ্ডল।
ইডি সূত্রে খবর, কেন্দ্রগুলিতে প্রচুর ছবি দেওয়ালে লাগানো থাকত। তাপস মণ্ডল ছাড়াও মানিক ভট্টাচার্য ও আরও কয়েকজন প্রভাবশালীর ছবি দেখিয়ে প্রমাণ করার চেষ্টা হত যে, এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রভাব ও ক্ষমতা কত দূর। এমনও জানা গিয়েছে, কোনও চাকরিপ্রার্থীর কাছ থেকে টাকা নেওয়ার পর তাঁকে বলা হত, তিনি যদি কোনও চাকরিপ্রার্থীকে নিয়ে আসেন, তবে তাঁকে কমিশন দেওয়া হবে। এভাবে এই কেন্দ্রগুলির নেটওয়ার্ক ছড়িয়ে পড়ত। ইডি আধিকারিকদের মতে, এই অফিসগুলিতে বসেই নিয়োগ দুর্নীতিতে আর্থিক লেনদেন হত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.