স্টাফ রিপোর্টার: কলকাতা ও রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ সেতুর ‘ফিজিক্যাল ফিটনেস’ রিপোর্টে বিদেশের বিশেষজ্ঞদের নামী সংস্থাকে নিযুক্ত করতে চায় রাজ্য। তবে স্বাস্থ্য-সমীক্ষায় খড়গপুর আইআইটি, যাদবপুর, বেসু বা রাইটস-এর ইঞ্জিনিয়ার-বিশেষজ্ঞদের মতামতকেও গুরুত্ব দেওয়া হবে। পোস্তা উড়ালপুলের ঘটনার প্রেক্ষিতে এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে রাজ্য। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতেই রক্ষণাবেক্ষণে জোর দিয়েছিলেন।
নবান্ন সূত্রে খবর, বেশ কিছু সেতু চিহ্নিত করা হয়েছে। সেগুলির জন্য মূলত জার্মান সংস্থাকে ভার দেওয়া হতে পারে। পোস্তার বিবেকানন্দ সেতুর ক্ষেত্রে দেশের সংস্থাগুলি নির্মাণকাজ শুরু করা হবে না ভেঙে ফেলা হবে, এ বিষয়ে স্থির সিদ্ধান্ত জানায়নি। মাঝেরহাটের ক্ষেত্রে অবশ্য মেট্রোর কাজে অতিরিক্ত কম্পনের জেরে সেতু দুর্বল হয়ে পড়েছিল, এমন রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে। যদিও চূড়ান্ত রিপোর্ট তৈরি করছে মুখ্যসচিব মলয় দে-র নেতৃত্বে তৈরি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি। মুখ্যমন্ত্রীর গঠিত উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটিও বৃহস্পতিবার বৈঠকে বসবে বলে নবান্ন সূত্রে খবর। শুক্রবারের মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীকে মাঝেরহাট ব্রিজ বিপর্যয়ের রিপোর্ট জমা দেওয়া হতে পারে। তার আগে, আজ, মাঝেরহাট ব্রিজের বিকল্প রাস্তা খুঁজতে রেললাইনের লেভেল ক্রসিং ও খালের উপর দিয়ে রাস্তা করা যায় কি না, সে ব্যাপারে যৌথ পরিদর্শন করেছে রেল, পূর্ত দপ্তর, কলকাতা পুরসভা। আলোচনার জন্য রেল বোর্ডকে চিঠি দিয়েছে রাজ্য।
এদিকে, পূর্ত দপ্তর ও মেট্রোকে চিঠি দিয়েছে সিট। কতবার পরিদর্শন করা হয়েছে মাঝেরহাট ব্রিজ, সে সম্পর্কে বিশদে জানতে চাওয়া হয়েছে। ব্রিজের খারাপ অবস্থা নিয়ে কোনও নির্দিষ্ট তথ্য ছিল কি না তাও জানতে চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি মেট্রোর কাছেও প্রকল্পের ম্যাপ, ডিজাইন, প্ল্যান-সহ বিস্তারিত রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কলকাতার যুগ্ম নগরপাল (অপরাধ) প্রবীণ ত্রিপাঠী।
এদিনই পূর্ত দপ্তরের ইঞ্জিনিয়ার-আধিকারিকদের নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠক করেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। বরাবরই মাসে দু’বার এমন ধরনের পর্যালোচনা বৈঠক করেন তিনি। মনিটরিংও করেন। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে দু’একজন ইঞ্জিনিয়ারের কাজ নিয়ে। স্বাভাবিকভাবেই সেতু রক্ষণাবেক্ষণের প্রসঙ্গ উঠেছে বৈঠকে। নবান্ন সূত্রে খবর, কয়েকজন ইঞ্জিনিয়ার সময়মতো রিপোর্ট না দেওয়ায় বৈঠকেই ক্ষোভপ্রকাশ করেন মন্ত্রী। এ বিষয়ে প্রয়োজনে তদন্তের কথাও বলেছেন ক্ষুব্ধ পূর্তমন্ত্রী। আগেই পুরস্কার-তিরস্কার চালু করেছিলেন তিনি। কাজে গতিও এসেছে তারপর। তবে মঙ্গলবার পূর্ত দপ্তরের বৈঠকে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস আবারও স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন, টাকার জন্য কাজ আটকাবে না। টাকার দরকার হলে অর্থ দপ্তরে জানাতে হবে। কোনও কাজ যেন পড়ে না থাকে। তিনি স্পষ্ট বুঝিয়েছেন, সেতু রক্ষণাবেক্ষণে কোনওরকম দায়সারা মনোভাব বরদাস্ত করা হবে না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.