ছবি প্রতীকী
দীপঙ্কর মণ্ডল: বছর দেড়েক আগে বজবজের শিক্ষককে বদলি করা হয়েছিল হলদিয়ায়। কিন্তু সেখানে তাঁর পড়ানোর বিষয়ই নেই। ক্লাস নেওয়ার উপায় না থাকায় ক্যাম্পাসে ফুল চাষ এবং বাগান পরিচর্যাই শিক্ষকের কাজ। করোনা সতর্কতায় দীর্ঘদিন কলেজ বন্ধ। রাজ্যের স্কুল-কলেজ চালু হলে ফের ফুলচাষেই ফিরতে হবে শিক্ষককে।
বজবজের সেন্ট্রাল ফুটওয়্যার ট্রেনিং সেন্টারে ওয়ার্কশপ ইনস্ট্রাক্টর হিসাবে শিক্ষাদান করতেন পুজালীর এই শিক্ষক। গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে তাঁকে হলদিয়ার মেঘনাথ সাহা ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজিতে বদলি করা হয়। হলদিয়ার পলিটেকনিক কলেজটিতে এই শিক্ষকের ফুটওয়্যার বিষয়ে পোস্টই নেই। দক্ষিণ ২৪ পরগনা থেকে পূর্ব মেদিনীপুরে এসে মেস ভাড়া নিয়ে থাকা এবং কলেজে কিছুক্ষণ অকারণ সময় কাটানো ছাড়া কোনও কাজ নেই।
সেই শিক্ষক জানিয়েছেন, “পড়ানোর বিষয় না থাকায় রেজিস্ট্রি খাতায় স্বাক্ষর করে বসে থাকতাম। পরে ক্যাম্পাসে ফুল চাষ শুরু করি। কলেজ খুললে ফের গাছের পরিচর্যা ছাড়া আর আমার কাজ নেই।” কারিগরি শিক্ষা দপ্তরের এক কর্তা জানিয়েছেন, “সরকারিভাবে ওই শিক্ষককে জনস্বার্থে পাঠানোর কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এটা মানব সম্পদের অপচয় ছাড়া আর কিছু নয়।”
বজবজের যে কলেজ থেকে এই শিক্ষককে সরানো হয়েছে সেখানে ফ্যাকাল্টি সংখ্যা কমে যাওয়ায় ছাত্র-ছাত্রীদের আসন কমিয়ে দিয়েছে এনসিটিই। একদিকে কলেজে শিক্ষক কমিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের ক্ষতি, অন্যদিকে মানব সম্পদের অপচয়। ঘটনার কড়া নিন্দা করেছে পলিটেকনিক অধ্যাপকদের সংগঠন। সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনকে অভিযোগ জানানো হয়েছে। ফেডারেশনের রাজ্য আহ্বায়ক দিব্যেন্দু রায় জানিয়েছেন, “অভিযোগ পেয়েছি। মানব সম্পদের অপচয় কাঙ্ক্ষিত নয়। এই ঘটনা নিয়ে খোঁজ নেব।” মেঘনাথ সাহা ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অনুপ মাইতি জানিয়েছেন, “পোস্ট না থাকা সত্ত্বেও এক শিক্ষককে এখানে পাঠানো হয়েছে। তবে আমাদের বলার জায়গা নেই। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ পাঠিয়েছে। যাঁকে পাঠানো হয়েছে তাঁর ফুটওয়্যার বিষয়টি আমাদের কলেজে পড়ানো হয় না। তাই ক্লাসে যাওয়ার উপায় নেই।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.