গৌতম ব্রহ্ম: দিনকয়েকের বৃষ্টিতে ফুঁসছে একাধিক নদী। তার উপর আবার জল ছাড়ছে ডিভিসি। সব মিলিয়ে দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায় প্লাবনের আশঙ্কা। এমন পরিস্থিতি সামাল দিতে তৎপর রাজ্য। জেলায় জেলায় বিভিন্ন আধিকারিকদের এই পরিস্থিতির দিকে নজর রাখার নির্দেশ নবান্নের।
মুখ্যমন্ত্রীর প্রধান উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার সাংবাদিক বৈঠক করেন। বলেন, “প্রবল বৃষ্টির দামোদর ভ্যালি এলাকায় ডিভিসির জল ছাড়া হচ্ছে। বিশেষ করে মাইথন, পাঞ্চেত ও দূর্গাপুর ব্যারেজ থেকে জল ছাড়া হচ্ছে। তার ফলে নিম্ন দামোদর এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। দক্ষিণবঙ্গের বেশ কিছু জেলা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা। নিচু এলাকা থেকে সাধারণ মানুষকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে।” মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো জেলায় জেলায় একাধিক সচিবকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। হাওড়ায় এমএসএমই সচিব রাজেশ পাণ্ডেকে প্লাবন পরিস্থিতির দিকে নজর রাখতে বলা হয়েছে। বীরভূমের পরিস্থিতি দেখবেন আবাসনের রাজেশ সিনহা।
পশ্চিম মেদিনীপুরে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের সুরেন্দ্র গুপ্তা। হুগলিতে কৃষি দপ্তরের ওঙ্কার সিং মীনা। খাদ্যদপ্তরের পারভেজ সিদ্দিকী পূর্ব মেদিনীপুরে প্লাবন পরিস্থিতির দিকে নজর রাখবেন। ঝাড়গ্রামে পরিবহণ দপ্তরের সৌমিত্র মোহন, পশ্চিম বর্ধমানে অনগ্রসর কল্যাণ দপ্তরের সঞ্জয় বনসল, বাঁকুড়ায় শ্রম সচিব অবনীন্দ্র সিং, পুরুলিয়ায় শিল্পসচিব পি মোহন গান্ধী পরিস্থিতির দিকে নজর রাখবেন। এবং পূর্ব বর্ধমানে পঞ্চায়েত সচিব পি উলগানাথন প্লাবন পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবেন।
উল্লেখ্য, ডিভিসি সূত্রে খবর, নিম্নচাপের বৃষ্টির কারণে ডিভিসির মূলত দুটি জলাধার – মাইথন ও পাঞ্চেত ব্যারেজের উপর জলের চাপ বেড়েছে। তাই এই দুই ব্যারেজ থেকে সোমবার সন্ধ্যা থেকেই জল ছাড়া শুরু হয়েছিল। তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। জানান, এভাবে জল ছাড়ায় বাংলায় বিপদ বাড়ছে। রাজ্যকে না জানিয়ে যাতে নতুন করে জল ছাড়া না হয়, সেই বিষয়েও তাঁকে অনুরোধ জানিয়েছিলেন মমতা। কিন্তু মঙ্গলবার সকালের পরিস্থিতি বলছে, বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর কোনও আপত্তি, অনুরোধকে গুরুত্বই দেওয়া হয়নি। উপরন্তু মঙ্গলবার সকালে দুই জলাধার থেকে প্রায় ৭০ হাজার কিউসেক নতুন করে জল ছাড়া হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.