ফাইল ছবি
নিরুফা খাতুন ও রমেন দাস: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়ালে ‘আজাদ কাশ্মীরের’ পোস্টার ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল। সেই ঘটনায় এবার গ্রেপ্তার করা হল বিশ্ববিদ্যালয়েরই ছাত্র সৌম্যদীপ মাহাতোকে। শিক্ষা বন্ধু সমিতির কার্যালয়ে আগুন ধরানোর অভিযোগে আগেই গ্রেপ্তার করা হয়েছিল তাঁকে। আজ মঙ্গলবার ‘আজাদ কাশ্মীর’ পোস্টারের ঘটনায় শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানো হল। উল্লেখ্য, বিচ্ছিন্নতাবাদের পোস্টার ইস্যুতে এটিই প্রথম গ্রেপ্তার। তবে এদিন তাঁকে এই মামলাতেও জামিন দেওয়া হয়েছে।
গত ১ মার্চ ওয়েবকুপার সম্মেলন ঘিরে প্রবল উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর উপর হামলা হয়। মন্ত্রীর গাড়ির কাঁচ ভাঙে। মন্ত্রীর গাড়িতে ছাত্র জখমের অভিযোগও সামনে আসে। দফায় দফায় উত্তপ্ত থাকে ক্যাম্পাস। ওই দিন রাতেই শিক্ষা বন্ধু সমিতির কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে পরবর্তীকালে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল সৌম্যদীপ মাহাতোকে।
গত ১৩ মার্চ ধৃতকে আলিপুর আদালতে তোলা হয়। তাঁকে ১৮ তারিখ পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। আজ মঙ্গলবার ধৃতকে ফের আদালতে তোলা হয়। আগুন লাগার মামলায় তাঁকে জামিন দেওয়া হয়েছে। এদিকে এদিনই আজাদ কাশ্মীর পোস্টারের ঘটনায় তাঁকে শ্যোন অ্যারেস্ট দেখাল যাদবপুর থানা। যদিও পরে তাঁকে আদালত জামিন দেয়। দুটি মামলাতেই এদিন তিনি জামিন পেলেন।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের টেকনোলজি বিল্ডিংয়ের ৩ নম্বর গেটের কাছে দেওয়ালে লেখা হয়েছিল ‘আজাদ কাশ্মীর’ স্লোগান। সেই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। শিক্ষাঙ্গনের ভিতরে বিচ্ছিন্নতাবাদী স্লোগান কীভাবে উঠছে? কোন ভাবনা কাজ করছে একাংশের পড়ুয়াদের মধ্যে? সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে বড় পদক্ষেপ করে রাজ্য পুলিশ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এধরনের স্লোগানের নেপথ্যে বহিঃশত্রুদের বড়সড় ভূমিকা রয়েছে বলে আশঙ্কা পুলিশের। সেই মামলাতেই এবার সৌম্যদীপ মাহাতোকে শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানো হল।
এদিকে এদিনই যাদবপুর থানায় ১৪ জন পড়ুয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছিল। সৌপ্তিক চন্দ্র নামে এক ছাত্রকে যাদবপুর থানা গ্রেপ্তার করেছে বলে খবর। শিক্ষা বন্ধু সমিতির অফিসে আগুন লাগানোর ঘটনায় এই গ্রেপ্তার বলে জানা গিয়েছে। ধৃত সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র বলে জানা গিয়েছে। এদিকে যাদবপুর থানার বাইরে পড়ুয়াদের বিক্ষোভ চলতে থাকে। সৌম্যদীপ মাহাতোকে মুক্তির দাবি তোলা হয়। সন্ধের পর বিক্ষোভ আরও ছড়ায়।
এদিকে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর উপর হামলা ও পরবর্তী ঘটনা প্রবাহে পদক্ষেপ করা হল। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা আঁটোসাঁটো করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য পাস, স্টিকার দেওয়ার সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে। বহিরাগতদের প্রবেশ আটকানোর জন্যও কড়া নজরদারি করা হচ্ছে। একবছর আগে ছাত্র স্বপ্নদীপের মৃত্যু হয়েছিল। তারপর আরও বেশি সিসিটিভি নিরাপত্তার জন্য লাগানো হয়। সেই ঘটনার পর এবার আরও কড়া নজরদারির নির্দেশ দেওয়া হল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.