কৃষ্ণকুমার দাস: দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ, নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু, যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্তের চেয়ারে কাল, সোমবার বসছেন ফিরহাদ হাকিম। শের-ই-বাংলা এ কে ফজলুল হকের পথ ধরে স্বাধীন ভারতে তিনিই প্রথম মুসলিম মহানাগরিক হিসাবে কলকাতা পুরসভার দায়িত্ব নিচ্ছেন। ১৯৪৭ সালের আগে পাঁচজন সংখ্যালঘু তিলোত্তমার মেয়র হলেও স্বাধীনতা-উত্তরকালে ফিরহাদই প্রথম ‘ফার্স্ট সিটিজেন’ হচ্ছেন। নিজের ট্রাডিশন ও অভ্যাস মেনে ধাক্কাপাড়ের ধুতি ও গরদের পাঞ্জাবি পরে শপথ নিতে পুরভবনে যাবেন তিনি। সঙ্গে থাকবেন স্ত্রী ইসমাত ও দুই মেয়ে প্রিয়দর্শনী ও শাব্বা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শ ও ভাবনা অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলা ফিরহাদ মন্ত্রিত্বে শপথের মতোই এবার মহানাগরিকের দায়িত্ব গ্রহণের সময়েও পুরোপুরি বাঙালি সংস্কৃতি ও ঘরানা মেনে চলেন। তবে শপথ নেবেন ইংরেজিতে। শপথ গ্রহণের পর নয়া মেয়র শ্রদ্ধা জানাবেন পুরভবনে রাখা গান্ধীজি, নেতাজি, দেশবন্ধু, বিধানচন্দ্র রায়ের প্রতিকৃতিতেও।
মেয়রের মতো ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষও ধুতি-পাঞ্জাবি পরে স্ত্রী ঝুমাকে সঙ্গে নিয়েই সোমবার পুরভবনে আসবেন। তিনি শপথ নেবেন বাংলায়। মেয়রকে সম্ভবত শপথ পড়াবেন চেয়ারপার্সন মালা রায়। তবে পুরদপ্তর থেকে পুরসচিব এলে তিনিও শপথ পাঠ করাতে পারেন। দায়িত্ব নিয়েই প্রথমে ডেপুটি মেয়র ও অন্য মেয়র পারিষদদের শপথ পড়াবেন তৃণমূল পুরবোর্ডের তৃতীয় মহানাগরিক। যেহেতু তিনি নিজে এখন নির্বাচিত কাউন্সিলর নন, তাই ভোটাভুটির সময় মেয়র পারিষদের ঘরে সপরিবার বসবেন ফিরহাদ। চারটি বুথে ভোট হবে। ব্যালটে প্রথম নাম ফিরহাদ হাকিমের। বেলা একটা থেকে আড়াইটে পর্যন্ত ভোট। এরপরই মেয়র পদে শপথ। দলের তরফে হুইপ দেওয়া নিয়ে চেয়ারপার্সন মালা রায় জানান, “গত ২২ নভেম্বর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তীর্ণতে যে নির্দেশ দিয়ে দিয়েছেন সেটাই যথেষ্ট। তৃণমূল কংগ্রেসের ১২২ কাউন্সিলরের জন্য বাড়তি কোনও হুইপ প্রয়োজন নেই।”
[সামান্য গুটখার জন্য গুলি! ৭ বছরের জেল যুবকের]
তবে স্বাধীনতা-উত্তর কলকাতায় প্রথম মুসলিম মেয়র সম্পর্কে রবিবার ফিরহাদ হাকিমের প্রতিক্রিয়া, “আমি হিন্দু বা মুসলিম ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করি না। সবার আগে আমি ভারতীয়। মানুষের জন্য কাজ করি, মানুষের জন্যই ২৪ ঘণ্টা পথে থাকি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আস্থা রেখে পুরসভার মেয়রের দায়িত্ব দিয়েছেন, ২৪ ঘণ্টা মহানগরের জন্য নিষ্ঠা ও সত্যতার সঙ্গে মন দিয়ে কাজ করে মুখ্যমন্ত্রীর বিশ্বাসের মর্যাদা রাখব।” নগরজীবনের পরিষেবা উন্নয়নে নয়া পরিকল্পনা ও ভাবনা নিয়ে পুরমন্ত্রী বলেন, “কাউন্সিলর, বরো চেয়ারম্যান, মেয়র পারিষদ ছিলাম, প্রতিটি স্তরেই মানুষের কী কী চাহিদা ও প্রত্যাশা থাকে তা জানি। কী কা কাজ করা যায়, কী পরিষেবা দেওয়া যায় তাও জানি। পুরোটাই আন্তরিকভাবে করব।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.