কৃষ্ণকুমার দাস: রাজ্যপালের স্বাক্ষর নিয়ে পুরবোর্ডের মেয়াদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে অর্ডিন্যান্স নয়, সংবিধানের আপৎকালীন আইন ব্যবহার করে শেষপর্যন্ত কলকাতা পুরসভায় প্রশাসক বসাচ্ছে রাজ্য সরকার। আর পুরপ্রশাসন পরিচালন দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার জন্য বর্তমান মেয়র ফিরহাদ হাকিমকেই কলকাতা পুরসভার মুখ্য প্রশাসক নিয়োগ করছে রাজ্য সরকার। মঙ্গলবার নবান্ন সূত্রে খবর, ফিরহাদকে মুখ্যপ্রশাসক করে ডেপুটি মেয়র ও মেয়র পারিষদদের ‘বোর্ড অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর’-এর সদস্য করা হচ্ছে। করোনা মোকাবিলায় ‘রিমুভ্যাল অফ ডিফিকাল্টিস অ্যাক্ট’-এ প্রশাসক বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে পুরসভার বর্তমান ‘টিম মেয়র’কেই ফের দায়িত্ব দিচ্ছে নবান্ন।
কলকাতার পাশাপাশি রাজ্যের অন্য ৯৩টি পুরবোর্ডের মেয়াদ মে-জুন মাসে শেষ হওয়ায় কয়েক দফায় প্রশাসক বসবে। সরকারি নির্দেশিকা জারি হলে ফিরহাদই রাজ্যের প্রথম পুরমন্ত্রী যিনি প্রথমে কলকাতার মেয়র ও সেই পুরবোর্ডেরই মুখ্যপ্রশাসক হবেন। বিগত ৫০ বছরে কলকাতা পুরসভায় দু’বার সরকারি আমলারা মুখ্য প্রশাসক হলেও পুরভবনে এসে রুটিন কাজকর্ম পরিচালনা করতেন দুই পুরমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও প্রশান্ত শূর।
কলকাতা পুরবোর্ডের মেয়াদ ৭ মে শেষ হচ্ছে। পুরদফতরের সুপারিশ মেনে রাজ্য নির্বাচন কমিশন ১৯ এপ্রিল কলকাতা ও হাওড়ায় ভোট গ্রহণের দিন চূড়ান্ত করেছিল। কিন্তু করোনা সংক্রমণের জেরে গত ২৪ মার্চ থেকে লকডাউন চালু হওয়ায় সেই নির্বাচন আপাতত স্থগিত রয়েছে। ১৯৮০ সালের কলকাতা পুর আইনে মেয়াদ শেষ হলে প্রশাসক বসানো যায় না। কিন্তু যখন করোনা মহামারীর আকার নিচ্ছে তখন সংবিধানের ১৫৪ ধারা মেনে রাজ্য সরকারের বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগ করে ‘রিমুভ্যাল অফ ডিফিকাল্টিস অ্যাক্ট’ প্রয়োগ করে প্রশাসক বসানো হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে এদিন স্বয়ং পুরমন্ত্রী ফিরহাদ জানান, “করোনার জেরে সময়ে ভোট করা যায়নি। কিন্তু পুরসভার কাজকর্ম তো থেমে থাকবে না। বিষয়টি নিয়ে অ্যাডভোকেট জেনারেলের (এজি) মতামত চাওয়া হয়েছিল। আইনি ব্যাখ্যা দিয়ে এজি মুখ্যসচিবের কাছে নোট পাঠিয়েছেন। শীঘ্রই প্রশাসক নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীই।”
বৃহস্পতিবার বুদ্ধ পূর্ণিমা, শুক্রবার রবীন্দ্রজয়ন্তীতে রাজ্য সরকারের ছুটি। তাই হয় বুধবারই নবান্নের নির্দেশিকা জারি হওয়ার সম্ভাবনা। অন্য পুরসভাগুলির ক্ষেত্রেও আইনি প্রসঙ্গ উল্লেখ করে পুরমন্ত্রী বলেন, “ করোনার জেরে এক্ষুনি পুরভোট করা সম্ভব নয়। সুপ্রিম কোর্টও বিষয়টি জানিয়েছে। তাই যতদিন পর্যন্ত না ভোট হচ্ছে, ততদিন পুরসভাগুলিতে প্রশাসকরাই কাজ চালাবেন।” মে ও জুন মাসে অনেকগুলি পুরসভার মেয়াদ শেষ হবে। যখন যে পুরসভার মেয়াদ শেষ হবে তখন সেখানেই প্রশাসক বসাবে রাজ্য পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর। সূত্রের খবর, অতীন ঘোষ, দেবাশিস কুমার, দেবব্রত মজুমদার, রতন দে’রা প্রশাসক বোর্ডের সদস্য হলেও যাঁরা দীর্ঘদিন পুরসভায় আসছেন না সেই পারিষদরা বাদ পড়তে পারেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.