অভিরূপ দাস: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের পড়ুয়ার মৃত্যুতে তোলপাড় সমাজ। ঘটনায় মর্মাহত শহরের মেয়র ফিরহাদ হাকিম। যাদবপুরের হোস্টেলের তিনতলার নীচ থেকে উদ্ধার হয় ওই ছাত্রের মৃতদেহ।
এদিন মেয়র বলেছেন, ‘‘সামান্য সময়ের জন্য একটা মানসিক হতাশায় মেধাবী ছেলেটি একটা মারাত্মক সিদ্ধান্ত নিল।’’তেমন সিদ্ধান্তের কথা ভেবেছিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিমও! তবে পরিণত মনের জন্য এমন পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে এসেছেন তিনি। মেয়রের কথায়, অনেক সময় অযথা সাংবাদিকদের অনেক অপ্রিয় প্রশ্নের মুখোমুখি আমাকেও হতে হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার নানান ভাবে এজেন্সি দিয়ে হেনস্তা করেছে। তখন আমারও এক মুহূর্তের জন্য মনে হয়েছে জীবনটা রেখে কী হবে? এত অপমান! তারপর? মেয়র ফিরহাদ হাকিমের স্বগতোক্তি, ‘‘সেই সময়টায় নিজে নিজেকে প্রশ্ন করি, এত মানুষের জন্য কাজ করছি। সেটা কি কিছু নয়? স্কুল, কলেজ হোক বা কর্মক্ষেত্র সব জায়গাতেই অপমান শুনতে হয়। তখন প্রিয়জনের সঙ্গে গল্প করবেন। মনটা অনেক হালকা হবে। এই মানসিক সাপোর্টটাই দরকার।’’
সম্প্রতি ফিরহাদ হাকিমের কনিষ্ঠ কন্যা আফশা হাকিম এলএলবি পাস করেছেন। আইনে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনের জন্য নামজাদা এক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হচ্ছেন। সেখানে হোস্টেলে থাকবে মেয়ে। স্বপ্নদীপ কুন্ডুর মৃত্যুতে চিন্তিত মেয়র বৃহস্পতিবার গভীর রাত পর্যন্ত আলোচনা করেছেন মেয়ের সঙ্গে। এদিন পুরসভায় আঠেরোর স্বপ্নদীপের মৃত্যুর কথা বলতে গিয়ে চোখ চিকচিক করেছে মেয়রের। বলেছেন, ‘‘আমিও তো বাবা। যাদবপুরের ওই ঘটনাটা শোনার পর থেকে ভেতরে ভেতরে অস্থির ছিলাম। আমার মেয়েও হোস্টেলে থাকবে। কাল রাত্রিবেলা মেয়েকে বললাম, মা কিছু হলে ছেড়ে আমার কাছে চলে আসবি। কোনওরকম টেনশন নিবি না।’’
নদিয়ার বগুলার বাসিন্দা মেধাবী স্বপ্নদীপের নিজেকে শেষ করে দেওয়ার ঘটনা মানতে পারছেন না তাঁর সহপাঠিরাও। ফিরহাদ এদিন বলেছেন, ঘটনাটা অত্যন্ত দুঃখের। এ ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে মা-বাবার উচিৎ বাচ্চাদের নিয়ে বসে কাউন্সেলিং করা। এদিন নিজের ছোটবেলার স্মৃতিচারণ করেছেন মেয়র। বলেছেন, ‘‘আমাদের ছোটবেলায় অনেক কড়া অনুশাসনের মধ্যে বড় হতে হয়েছে। বাবা বেল্ট দিয়ে মারত। এখনকার ছেলেমেয়েরা ভাবতেও পারবে না। এখন কিশোর কিশোরীরা হোয়াটসঅ্যাপ, টুইটার, ফেসবুকে মগ্ন। সেটাই ওদের জগৎ। কিন্তু তার মধ্যেও মা-বাবাকে বলব, মোবাইল সরিয়ে গল্প করুন। ওদের মনের কথা জানতে চেষ্টা করুন।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.