কৃষ্ণকুমার দাস: কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের পশ্চিমবঙ্গ সফরের উত্তপ্ত পরিবেশের মধ্যেই রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়র পরপর টুইট ঘিরে উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি। রাজ্যপালকে ‘বিজেপির মুখপাত্র’ এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি করছেন বলে পালটা তোপ দাগেন রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। শুধু তাই নয়, রাজ্যপাল ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে রাজ্যের হাসপাতালে যে ডাক্তার,নার্সরা লড়াই করছেন, তাঁদের পাশে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর মতো দাঁড়ানোর অনুরোধও করেছেন কলকাতার মেয়র। রাজ্যে রেশন বন্টনে সামঞ্জস্য রক্ষা হচ্ছে না, এই অভিযোগ করে রাজ্যপাল যে টুইট করেছেন, বিজেপি যে দুর্নীতির অভিযোগ করেছে, তাকেও পালটা চ্যালেঞ্জ জানালেন ফিরহাদ হাকিম।
মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় টুইটারে অভিযোগ তোলেন, বাঙুর ও রামপুরহাট হাসাপাতালে করোনা রোগীর মৃতদেহ দীর্ঘক্ষণ পড়ে আছে। রাজ্য সরকার করোনা মোকাবিলায় কতটা উদাসীন তা এই ঘটনা তুলে ধরেই প্রমাণ করতে চাইছিলেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে এদিন তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও পুরমন্ত্রী তথা মেয়র ফিরহাদ হাকিম। রোগীর ডেথ সার্টিফিকেট দেওয়ার সময় ও তথ্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানেন কি না, তা নিয়ে পালটা প্রশ্ন তোলেন ফিরহাদ। বলেন,“যে কোনও মৃত্যুই দুঃখজনক। কিন্তু একজন রোগী মারা গেলে হাসপাতালে চার ঘন্টা দেহ রাখতেই হয়। ডাক্তাররা চার ঘন্টা পরে সার্টিফিকেট দেন। এটা সবার জানা উচিত।” এরপরই পুরমন্ত্রী কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে কটাক্ষ করে বলেন, “এটা অত্যন্ত দুঃখের। মানুষের মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি করা অত্যন্ত অমানবিক। যাঁরা ডাক্তারের সার্টিফিকেট দেওয়ার সময়টুকু নিয়ে রাজনীতি করছেন, তাঁরা মানুষের পক্ষে নয়, মানুষের বিরুদ্ধে কাজ করছেন।”
কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর সহযোগিতা করা উচিত থেকে শুরু করে রেশন বন্টন নিয়ে মানুষের ক্ষোভকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না, সবাই খাবার পাচ্ছেন না বলে টুইট করেন জগদীপ ধনকড়। বিষয়টি নিয়ে রাজ্যপালকে কটাক্ষ করে এদিন পুরমন্ত্রী বলেন, “বিজেপি মুখপাত্র হওয়াটা ঠিক নয়। ওনাকে বলব, রাজ্যের স্বার্থে কাজ করুন। মুখ্যমন্ত্রী নিজে মানুষের পাশে যাচ্ছেন, কীভাবে মানুষকে বাঁচানো যায়, তা ভাবছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু রাজ্যপাল বাস্তবটা না জেনে রাজভবনে বসেই একটা প্রেস মিট করছেন। বিজেপি যা যা বলছে, তা নিয়েই টুইট করছেন।” করোনা মোকাবিলায় ও রাজ্যের আর্থিক পরিস্থিতি সামাল দিতে মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রের কাছে যে ২৫ হাজার কোটি টাকা চেয়েছেন, তা পেতে রাজ্যপালের সাহায্য করা উচিত ছিল বলে মনে করেন পুরমন্ত্রী। একইসঙ্গে ফিরহাদ বলেন, “রাজ্যপাল বা বিজেপি নেতারা রেশন নিয়ে যে অভিযোগ করছে তার একটা দুর্নীতির প্রমাণ নিয়ে আসুন। চ্যালেঞ্জ করছি, পারবেন না। শুধু রাজনীতি করার জন্যই বিজেপি এসব করছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.