স্টাফ রিপোর্টার: কয়েক হাত দূরে যিনি বসে আছেন, তাঁকে ছুঁয়ে দেখার, কথা বলার ইচ্ছে ওদের বহুদিনের। আর শনিবার সেই স্বপ্নই যেন পূরণ হয়ে গেল। কলকাতা পুরসভায় আসা ছোটদের সামনে বসে কথা বললেন মেয়র। শুনলেন ওদের নানা সমস্যার কথা। আশীর্বাদও করলেন। সপ্তাহের শেষ শনিবার কলকাতা পুরসভায় হাজির শহরের একদল খুদে। তাদের জমানো কত কথা! শহর নিয়ে তাদের মধ্যে কত চিন্তাভাবনা। কয়েক হাত দূরে ‘মেয়র আঙ্কেল’কে পেয়ে সব বলে দিল ওরা। আর মেয়র? ফিরহাদ হাকিম অকপটে তাদের বলেছেন,”শহর নিয়ে তোমরা এত ভাবো! আমি যখন ছোট ছিলাম এত কিছু ভাবতাম না। খুব ভালো লাগল।”
শনিবার মেয়রের সঙ্গে দেখা করতে আসা কচি কাঁচাদের মেয়র ফিরহাদ হাকিমের পরামর্শ, ”যখন রাস্তায় বেরবে সঙ্গে একটা নোট বই রাখবে। যখনই যেটা অন্যরকম মনে হবে, লিখে রাখবে। পরের বার যখন আসবে আমায় বোলো, ঠিক করে দেব।” উচ্ছ্বসিত মেয়র বলেন,”আই এপ্রিশিয়েট অল অফ ইউ। এই জেনারেশনের ছেলেমেয়েরা চিন্তাভাবনায় কত এগিয়ে!” শহরের ৬টি বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা শনিবার পুরসভার কেন্দ্রীয় ভবনে ‘টক টু মেয়র আঙ্কেল’ নামে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল। মূলত শহরের দরিদ্র, বসতিবাসী ছেলেমেয়েরা এদিন পুরসভায় মেয়রের সঙ্গে দেখা করতে আসে। ওদের মধ্যে অনেকে আবার কথাও বলতে পারে না। তবু এসেছে ‘মেয়র আঙ্কেলে’র সঙ্গে দেখা করতে।
সাড়ে চার বছরের আহশান খান। তার বাড়ি বোসপুকুরে। সে সটান দাঁড়িয়ে বলে, “আমার বাবা-মা বলে ছোটবেলায় রোজ খেলত। বড় বড় মাঠ ছিল। আমাদের তেমন মাঠ তো নেই। আমাদের সঙ্গে খেলবেন?” তা শুনে হেসে ফেলেন মেয়র। বলেন, “রোজ সকালে চেতলা পার্কে হাঁটতে যাই। কোমরে বড় ব্যথা। খেলতে তো পারব না।” আহশানের কথায় গুরুত্ব দিয়ে ফিরহাদ হাকিম বলেন, “আমার ছোটবেলায় শহরে অনেক মাঠ ছিল। তবে পুরসভার অনেক পার্ক আছে। তোমরা সেখানে রোজ খেলতে পারো।”
গার্ডেনরিচ এলাকার একটি বাচ্চা তুলে ধরে গুরুতর সমস্যার কথা। বলে,”আঙ্কেল আমি মেয়ে। কিন্তু ছেলেদের সঙ্গে থাকতে ভালো লাগে। আমি ট্রান্সজেন্ডার। কিন্তু অনেকে কেমন যেন আমায় কটাক্ষ করে। গম্ভীর মেয়র। খানিক চুপ। ফিরহাদ হাকিম বলেন, “জন্ম ভগবানের হাতে। তুমি তোমার মতো চলো। লেখাপড়া শেখো। জীবনে প্রতিষ্ঠিত হয়ে ওঠো।” এদিন পুরসভার চাইল্ড প্রটেকশন কমিটিতে এক নাবালিকাকে মেয়রের নির্দেশে সদস্য করা হয়।
প্লাস্টিক জমে শহরের নিকাশি সমস্যার ব্যাঘাত হয়। ‘টক টু মেয়র আঙ্কেল’ প্রোগ্রামে মেয়র বলেন, ”এই বছর প্রচুর ময়লা পরিষ্কার করা হয়েছে। তবে প্লাস্টিক ব্যাগ বন্ধ করার দায়িত্ব পরিবেশ ও পুলিশের। তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসা খুদেদের জন্য মেয়রের পরামর্শ, “জীবনে কোনওদিন কোনও কাজে ভয় পাবে না। লক্ষ্য নির্দিষ্ট করে এগিয়ে যাবে। জয় তোমাদের হবেই।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.