অভিরূপ দাস: ডিএ দিতে হবে না। দরিদ্র মানুষকে সামাজিক প্রকল্পে টাকা দিন। এই আরজি এল কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের (Firhad Hakim) কাছে। এমনই দিনে যেদিন বকেয়া ডিএ-র দাবিতে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছিল বাম সমর্থিত যৌথ সংগ্রামী মঞ্চ। মেয়র ফিরহাদ হাকিমের দাবি, এর প্রভাব পড়েনি কলকাতা পুরসভায়। সেখানে হাজিরা ছিল পঁচানব্বই শতাংশ।
মেয়রের কথায়, ‘‘অনেকেরই এসময় জ্বর-সর্দি হচ্ছে। শরীর খারাপের কারণে অনুপস্থিত থাকলে কিছু বলার নেই। কিন্তু যাঁরা কর্মবিরতির কারণে আসেননি তাঁদের কর্মজীবন থেকে এক দিন বাদ পড়বে।’’ শুক্রবার কর্মবিরতি নিয়ে রাজ্য-রাজনীতি উত্তাল। রাজ্য বাজেটে ডিএ ৩ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। সরকারি কর্মচারীদের একাংশের বক্তব্য, মাত্র ৩ শতাংশ ডিএ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত তাঁরা মানছেন না। দাবি মেনে ৩৮ শতাংশ ডিএ না মেটানো পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
এরই মধ্যে শুক্রবার ১২৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে মেয়রের কাছে ফোন আসে। ঠাকুরপুকুর এলাকার এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, ‘‘যাঁরা ৫০, ৬০ হাজার টাকা করে মাইনে পাচ্ছে। তারা আরও টাকা চাইছে। কথায় কথায় ধর্মঘট করছে। এদিকে গরীব মানুষকে নিয়ে কোনও মাথাব্যাথা নেই।’’ মেয়রকে ফোন করে তাঁর আরজি, ‘‘আমার স্বামী বেসরকারি কোম্পানিতে কাজ করত। দু’হাজার টাকা পেনশন পায়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, স্বাস্থ্যসাথী বড় উপকার করছে। ডিএ দিতে হবে না। আমাদের দেখুন।’’
মেয়র ফিরহাদ হাকিম আশ্বস্ত করেছেন ১২৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওই বাসিন্দাকে। জানিয়েছেন, ‘‘আগে আমরা লক্ষ্মীর ভাণ্ডার দেব। স্বাস্থ্যসাথী দেব। তারপর পারলে ডিএ দেব। গরীব মানুষরা আমাদের অগ্রাধিকার।’’ ডিএ দরকার নেই। প্রান্তিক মানুষদের দেখুন। এমন আবেদন নিয়ে মেয়রের কাছে আরজি এই প্রথম। কেন এমন ফোন? মেয়র জানিয়েছেন, ‘‘সরকারি চাকরি করেন হাতে গোনা মানুষ। অধিকাংশই বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করেন। কেউ ছোটখাটো ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। তাদের একটা ভয় আছে।”
মেয়রের কথায়, “দাবি অনুযায়ী হারে ডিএ দিতে গেলে রাজ্য সরকারের ২০ হাজার কোটি টাকা খরচ হবে। গরীব মানুষরা আতঙ্কিত। তাঁরা ভাবছেন ডিএ দিতে গেলে বোধহয় সামাজিক প্রকল্পগুলো বন্ধ হয়ে যাবে।” এদিন মেয়র পুরসভায় বলেছেন, ‘‘যাঁরা ৫০ হাজার টাকা মাইনে পান তাঁদের ৭০ হাজার টাকা দিতে পারলে আনন্দিত হব। কিন্তু যাঁরা সামান্য পাঁচশো টাকা পান তাঁদেরকে বঞ্চিত করতে পারব না। যদি আমাদের রোজগার বাড়ে নিশ্চিতভাবে যাঁরা ডিএ চাইছেন তাঁদের পাশে দাঁড়াব।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.