স্টাফ রিপোর্টার: রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের ঐতিহ্য নষ্ট করতে চাইছে মেট্রো রেল। দক্ষিণেশ্বর স্কাইওয়াক কোনওভাবেই ভাঙা হবে না। সাফ একথা জানিয়ে দিলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, ‘‘মোদি সরকারের তুঘলকি কারবার চলছে। ফ্লাইওভার করার সময় মেট্রোর কাছ থেকে এনওসি নেওয়া হয়েছিল। স্কাইওয়াক করার আগে যৌথভাবে কেএমডিএ ইঞ্জিনিয়ার মেট্রো ইঞ্জিনিয়াররা একসঙ্গে বসেছিলেন। তখন তাঁরা ড্রয়িং এঁকে জানিয়েছিলেন ওইখানে স্কাইওয়াক হলে কোনও সমস্যা নেই। তার পর তাদের ছাড়পত্র নিয়েই এত টাকা খরচ করে স্কাইওয়াক করলাম। এখন বলছে স্কাইওয়াক ভেঙে দাও। এটা মেনে নেওয়া যায় না।’’
কবি সুভাষ থেকে দক্ষিণেশ্বর পর্যন্ত মেট্রোর সংখ্যা বাড়াতে এবং চলাচল মসৃণ করতে ওই স্টেশন সংস্কারের কথা ভেবেছে কর্তৃপক্ষ। তার জন্য লাইনের দৈর্ঘ্য বাড়াতে চেয়ে রাজ্যের কাছে জমি চেয়েছে রেল। কিন্তু সেই জমি দিতে গেলে দক্ষিণেশ্বর স্কাইওয়াকের একাংশ সরাতে হবে। ভাঙতে হবে বেশ কিছুটা। আর তাতে যে রাজ্যের সম্মতি নেই, তা জানিয়ে দিলেন ফিরহাদ। শুক্রবার সাংবাদিক সম্মেলন করে রাজ্যের কাছে জমি চাওয়ার বিষয়টি জানান মেট্রোরেলের জেনারেল ম্যানেজার পি উদয়কুমার রেড্ডি। কিন্তু শনিবার কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম পরিষ্কার জানিয়ে দেন, স্কাইওয়াক কোনওভাবেই ভাঙা হবে না। তাঁর পরিষ্কার কথা, দিনরাত দৌড়াদৌড়ি করে একটা এত সুন্দর স্কাইওয়াক করা হয়েছে। এখন বলছে ভেঙে দাও। ওখান দিয়ে নাকি মেট্রোরেল যাবে। আগে কেন বলে নি!
তিনি বলেন, ‘‘আমাদের একটা স্থাপত্য এত কষ্ট করে তৈরি করলাম সেটা ভেঙে দেব? আগে থেকে তো বলা উচিত ছিল এই জায়গাটা করবেন না। এই জায়গায় মেট্রো রেল প্রকল্পের পরিকল্পনা রয়েছে। মেট্রো কর্তাদের সঙ্গে বসেই প্ল্যান চূড়ান্ত হয়েছিল। আগে বললে একটা অন্যভাবে ড্রয়িং তৈরি করে নিতাম। এখন ওখানে আর জায়গা নেই। মেট্রোর কথামতো স্কাইওয়াক অন্যত্র সরাতে গেলে দক্ষিণেশ্বরের রাস্তায় কোনও গাড়ি ঢুকতে পারবে না।’’
খুব স্বাভাবিকভাবেই তাই ওই অংশে লাইন সম্প্রসারণ নিয়ে জটিলতা অব্যাহত রইল। ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, মেট্রো রেলের আধিকারিকদের অদূরদর্শিতার কারণেই এই জটিলতা তৈরি হল। তবে এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চায়নি রেল। মেট্রো রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র বলেন, ‘‘উনি মহানাগরিক। মেয়র তাঁর মন্তব্য করতেই পারেন। এ বিষয়ে রেলের তরফ থেকে কোনও মন্তব্য আমরা করছি না।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.