ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: খুশির ইদ। বছরে একবার সেই উৎসব খুশির জোয়ার বয়ে আনে ইসলাম ধর্মাবলম্বী মানুষজনের কাছে। কিন্তু এ বছর আর খুশি কই? বরং অশেষ দুঃখ আছে, যা মুছে দিতে পারেনি ইদ-উল-ফিতরের মতো উৎসবও। তাই আজকের দিনেও মসজিদে সমবেত নমাজপাঠের আসর বাদ, বদলে ঘরে বসেই আচার পালন করলেন সকলে। বাদ গেলেন না রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। বাড়িতেই সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে নমাজ পড়লেন তিনি ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা। এভাবে ইদ পালন করতে হল বলে আক্ষেপও চেপে রাখতে পারলেন না মন্ত্রী। বললেন, ”জীবনে প্রথম এরকম ইদ পালন, এটা খুব দুঃখের। তবু মেনে নিতে হবে।”
একে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে লকডাউন। যে কোনও ধর্মীয় স্থানে জমায়েত নিষিদ্ধ। ইদের প্রাক্কালে তাই দেশের প্রধানমন্ত্রী থেকে ধর্মগুরুরা সকলেই জনসাধারণের প্রতি বার্তা দিয়েছিলেন, এ বছরটা বাড়িতে বসেই নমাজ পড়ুন, ঘরেই ইদের আনন্দ পালন করুন। সেই আহ্বানে সাড়া দিয়েছেন সকলেই। সোমবার, দেশজুড়ে ইদ পালনে তেমন কোনও আড়ম্বর দেখা গেল না প্রকাশ্যে। সকলেই গৃহবন্দি হয়ে পালন করছেন এক ব্যতিক্রমী ইদ-উল-ফিতর।
সাধারণের মতোই আজ, পবিত্র উৎসবের দিনে এক সারিতে রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতা পুরসভার মুখ্য প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম। তিনিও আজ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বাড়িতে, সোশ্যাল ডিসট্যান্স বজায় রেখে নমাজ পড়লেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন বাড়ির মহিলারাও। একে অপরকে শুভেচ্ছা জানালেন তাঁরা সকলেই, তবে করোনা সংক্রমণে পরস্পরের থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে গিয়ে বাদ পড়ে গেল আলিঙ্গন। এটুকু আচার পালনেই এ বছরের মতো তাঁকে ইতি টানতে হল ইদ উৎসব পালনে। কারণ, এরপর তিনি চলে গেলেন কাজে। বললেন, ”১৭ হাজার কর্মী রাস্তায় কাজ করছে, ঘরে বসে ইদ পালন সম্ভব নয়।”
সদ্যই কলকাতার উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়। তাতে প্রচুর গাছ উপড়ে কার্যত বন্ধ শহরের গুরুত্বপূর্ণ পথঘাট। পুরসভার কর্মী, জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দল, সেনা – সবাই মিলে সেই রাস্তা সাফাইয়ের কাজে নেমেছেন। গত দু দিন ধরে সেই কাজই চলছে। রবিবারই পুরসভার মু্খ্য প্রশাসক ঘোষণা করে দিয়েছিলেন, এত বড় বিপর্যয় সামাল দিতে এবার ইদেও কাজ হবে, তিনি নিজেও কার্যালয়ে আসবেন। সেইমতোই আজ দুপুরে পুরসভায় চলে যান ফিরহাদ। সমস্ত কাজের তদারকি করেন। কবে সব স্বাভাবিক হবে, তা বুঝে নিতে চান। সবমিলিয়ে, নানা দিক থেকেই এ বছরের খুশির ইদ তাঁর কাছে ব্যতিক্রম হয়ে রইল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.