সরোজ দরবার: আর ফেরার কোনও প্রশ্ন নেই। পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমির সভাপতি পদ ছাড়ার কথা আগেই ঘোষণা করেছিলেন শাঁওলি মিত্র। তবে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মধ্যস্থতায় যেন পুনরায় পদে ফেরার সম্ভাবনা জেগেছিল। আম বাঙালির মনে হয়েছিল, ঝামেলা যা ছিল তা মিটে গিয়েছে। যদিও রবিবার ফের স্পষ্ট করে তিনি জানিয়ে দিলেন, আকাদেমির সভাপতি পদে তাঁর ফেরার আর কোনও সম্ভাবনাই নেই।
[ আকাদেমিতে সভাপতির দায়িত্বেই থাকবেন শাঁওলি, মন্তব্য পার্থর ]
কেন এই সম্ভাবনা নেই? এ প্রশ্নের উত্তর পেতে ফিরে যেতে হবে সেই ডিসেম্বরে। সেই সময়ই ইস্তফার কথা ঘোষণা করেছিলেন প্রখ্যাত এই নাট্যব্যক্তিত্ব। কারণ হিসেবে তিনি জানিয়েছিলেন, আকাদেমির উন্নতির জন্য যেভাবে তিনি কাজ করতে চাইছেন তাতে কিছু অসুবিধা হচ্ছে। সঠিকভাবে নিজের কাজ করতে পারছেন না বলেই দায়িত্ব ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। শুধু মুখে জানানো নয়, ইস্তফাপত্র লিখিতভাবেই জমা দেন তিনি। এরপর এক বিবৃতিতে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, তাঁকে যেতে দেওয়া হবে না। সভাপতি পদে তাঁকেই ফিরে পেতেই চায় সংস্কৃতি দপ্তর। যা সমস্যা হয়েছে তা কথা বলে মিটিয়ে নেওয়া হবে। শাঁওলি জানাচ্ছেন, এরপর বেশ অনেকটা সময় পেরলেও তাঁর সঙ্গে আর কোনওরকম যোগাযোগ করা হয়নি। তারপরই ফেরার সম্ভাবনা একেবারে খারিজ করলেন তিনি। এদিন তিনি জানান, “ফেরার প্রশ্নই ওঠে না। আমি লিখিতভাবে ইস্তফাপত্র জমা দিয়েছিলাম। পরে পার্থবাবুর সঙ্গে ফোনে আমার কথা হয়। উনি বলেন, যেখানে যা সমস্যা হচ্ছে তা দেখে নেবেন। আমাকে ছাড়তে দেওয়া হবে না। বিবেক কুমারের সঙ্গেও কথা হয়েছিল। তিনিও বলেন, এত ভাল কাজ আকাদেমিতে আগে হয়নি। আমি যেন দায়িত্ব না ছাড়ি। যা সমস্যা হচ্ছে তার সমাধান হবে। তারপর আর কেউ কোনওরকম যোগাযোগ করেননি আমার সঙ্গে। সংস্কৃতি দপ্তরের থেকে আমার কাছে লিখিত কোনও চিঠিও আসেনি। ফলে ফেরার সম্ভাবনা আর কোনওভাবেই থাকছে না।”
রবিবার তাই এ কথা ঘোষণা করেই জানিয়ে দেন শাঁওলি। জানান, “আমি তো ইস্তফা দিয়ে দিয়েছি। তারপর আমাকে আর ফেরার আর কোনও চিঠি দেওয়া হয়নি। এদিকে আকাদেমির কাজকর্মের ক্ষেত্রে সই-সাবুদের ব্যাপার থাকে। অডিট পর্বের পরও সভাপতির সই লাগে। ফলত বেশ কিছু জটিলতা তৈরি হবে। তাছাড়া সাধারণ মানুষও ধরে নিয়েছিলেন আমি সভাপতি পদেই আছি। কিন্তু আমি যে নেই, সেটা সকলের জানা প্রয়োজন।” তাই এই ঘোষণা।
[ ঝড়ে পড়া বটগাছের আঠায় থমকে যাচ্ছে যন্ত্র, সমস্যায় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী ]
শাঁওলির এই ঘোষণার পর রাজ্যের কী উত্তর হয় এখন সেটাই দেখার। তাঁকে ফিরিয়ে আনতে আগ্রহী হলেও এতদিনে কেন তাঁকে পালটা চিঠি দেওয়া হল না বা আকাদেমির উন্নতিতে তাঁর দেওয়া প্রস্তাব খতিয়ে দেখা হল না, সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.